পেলেকে ছেষট্টির বিশ্বকাপ জিততে দেয়নি ইউরোপীয় ডিফেন্ডারদের হিংস্র ট্যাকল।
মারাদোনার বিরাশির সম্ভাব্য বিজয়রথ থামিয়ে দেয় জেন্টিলের বন্যতা।
লিওনেল মেসির ইতিহাসের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে যাওয়ার নেপথ্যে তেমনই এক খলনায়ক গনজালো ইগুয়াইন।
ব্রাজিল এবং চিলির ফাইনালে রানার আপের পদক ঝোলাবার পর এক রকম চোকারের স্তরেই পর্যবসিত হয়ে গিয়েছেন মেসি। এই ইউটিউবের যুগে কারও যেন মনেই পড়ছে না দু’টো ফাইনালেই তিনি যা বল সাজিয়ে দিয়েছিলেন ইগুয়াইনের জন্য তার চেয়ে সহজ বল বিশ্বপর্যায়ের ফাইনালে পাওয়া যায় না। নাপোলির হয়ে এর চেয়ে অনেক কঠিন অ্যাঙ্গেল থেকে গোল করে থাকেন ইগুয়াইন। কিন্তু ফাইনালের যে নার্ভই নেই ইগুয়াইনের। টাইব্রেকার জঘন্য মিসের চেয়েও আরও বড় সূচক তাঁর মারতে যাওয়ার আগের জড়তা।
ফাইনাল শুরু হওয়ার মিনিট দশেকের মধ্যে ফেসবুক পোস্ট দেখলাম: ‘চিলির ডিফেন্ডারগুলো কি আরাবুল আর অনুব্রতর কাছে ট্রেনিং নিয়ে এসেছে?’ বোঝা গেল ঘোর মেসিভক্ত। কিন্তু একমত হওয়া গেল না। বিশ্বপর্যায়ের ফাইনালে বিপক্ষ ফরোয়ার্ডকে কেন স্নো-পাউডার দিয়ে খাতির করা হবে? যতই হোন না তিনি আধুনিক ফুটবলের মহানায়ক।
কিন্তু তাতেও তো ঊননব্বই মিনিটে বুট ঢাকা কংক্রিটের জঙ্গল পেরিয়ে পরিচিত মুক্তির দৌড় মেরেছিলেন মেসি। ওই বলটা ইগুয়াইন গোলে রাখতে পারলে এত লেখালেখি, এত কাটাছেঁড়া কিছুই ঘটত না।
চিলি বলেছিল প্লে-স্টেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করবে মেসির উপর। কোনও কোনও সময় মনে হল হয়তো করেওছে। তাঁকে যত না গার্ড করা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি যেন মাপা হয়েছে সঙ্গী যে খেলোয়াড়দের সঙ্গে তিনি ওয়ান-টু খেলেন তাঁদের। কোপা ফাইনালের ভিডিয়ো চালালে পরিষ্কার দেখা যাবে মেসির চেয়ে বেশি করে তাঁর সহযোগীদের আটকেছেন সামপাওলি। ওয়ান-টু খেলবেন কী! বল দিয়ে ফেরত পাননি মেসি। বা অফ দ্য বল মুভমেন্টে পাশে যেখানে থাকার কথা তাঁর সহযোগীদের, সেই জায়গাটা ব্লক করে দিয়েছে চিলি।
সামপাওলি নতুন অভিধান বার করলেন মনে করার কোনও কারণ নেই। বার্সার মেসিকেও এ ভাবেই আটকাবার চেষ্টা করেন বিপক্ষ কোচেরা। পারেন না যেহেতু বার্সার সাপোর্টিং প্লেয়াররা জায়গা নেওয়া এবং অনুমান ক্ষমতায় অনেক এগিয়ে। এই আর্জেন্টিনা টিমে ওই পর্যায়ের স্কিলসম্পন্ন একমাত্র দি’মারিয়া। ইতিহাস বলবে, না মারাকানা, না এস্তাদিও ন্যাশানালে, কোথাও দি’মারিয়াকে ব্যবহারের সুযোগ হল না তাঁর। একটায় একেবারেই হল না। একটায় ২৩ মিনিট পর্যন্ত হল।
সান্তিয়াগোর ওই অপরূপ স্টেডিয়ামে যেন আরও আলো করে বসে ছিলেন চিলির সমর্থকরা। মনে হচ্ছিল আলিপুর হর্টিকালচার গার্ডেনে লাল গোলাপের ফ্লাওয়ার শো চলছে। নীল জার্সি পরা বিদেশি সমর্থকরা তার মধ্যে যেন ছোট ছোট ফুটকি। গোটা ফুটবল বিশ্ব ভেবেছিল ফুটকিগুলো ক্রমশ রঙিন হতে হতে লালের জৌলুসকে ম্লান করে দেবে। হল ঠিক উল্টো। ফুটকিগুলো ক্রমশ সরু হতে হতে মাঠ থেকে মিলিয়ে গেল। আর কাপের সামনে নতমস্তকে দাঁড়িয়ে রইলেন লিওনেল মেসি।
বিশ্বের এক নম্বর ফুটবলার তিনি। এ বছরে তিনটে টুর্নামেন্ট জিতেছেন। সেই বায়ার্ন টিমকে দুরমুশ করেছেন যারা মারাকানা ফাইনালে তাঁর ক্ষত্রিয়বোধে আঘাত দিয়েছিল। এত ঝুঁকি নিয়ে কোপায় আসার কোনও দরকারই ছিল না। এ বছরের ব্যালন ডি’ওর পাওয়া এমনিতেই নিশ্চিত হয়ে গেছে, তার পর আবার কোন মূর্খ একটা তুলনামূলক অনুন্নত টিমের সব দায়িত্ব ঘাড়ে নিতে চায়!
আমাদের ভোররাতে ত্রস্ত পদক্ষেপে লিওনেল মেসি সরে যাচ্ছেন সান্তিয়াগোর কাপমঞ্চ থেকে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের একাংশে শুরু হয়ে গিয়েছে নীল জার্সি গায়ে তাঁর উপযোগিতা নিয়ে। তখন মনে হচ্ছিল ফুটবলের ক্রুশবিদ্ধ যিশুকে দেখছি! যাঁর কাহিনি মারাদোনার চেয়ে অনেক করুণ।
মেসি তাঁর সময়কার একমাত্র সুপারস্টার যিনি দেশের ফুটবল শক্তি অবনমিত জেনেও বরাবর দেশকে ট্রফি দেওয়ার অসম্ভব লক্ষ্যের কথা বলেছেন। আজকালকার দিনে যে ঝুঁকি কেউ নেয় না। অর্ধেক শীর্ষস্থানীয় টেনিস তারকা ডেভিস কাপ খেলেন না কেন? ঠিক এই কারণে তো। যে নিজের চাপ নিজে নিতে পারি। নিজে হারলে নিজেই হারব। কিন্তু দেশের বাটখারা চাপলেই অনেক জবাবদিহির ব্যাপার এসে যায়। কে নেবে সেই অনর্থক চাপ? কেনই বা নেবে?
গড়পড়তা তারকা প্লেয়ারের অনেক আন্তরিক বিশ্বাস যে, আর পাঁচজন পেশাদারের মতোই তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের পরীক্ষা দেশ নয়। সর্বোচ্চ পেশাদারের মধ্যে রক্ত হিম করে দেওয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেডিসিনে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়া ছাত্র যেমন ভাবে, দেশের বা প্রদেশের হয়ে এক নম্বর থাকাই যথেষ্ট নয়। চিকিৎসকের সেরা অধিষ্ঠান প্রথম বিশ্বে নিজেকে ফেলে মাপি— আধুনিক ফুটবলারেরও তাই।
সে জানে ক্লাব ফুটবল ছানবিন করে তার তল্লাটে নিয়ে আসে সারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রতিভাদের আর সেখানে একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। সেটাই বিশ্বস্বীকৃত মল্লযুদ্ধ। কারণ সেই মঞ্চে শ্রেষ্ঠ না হলে কোনও সুযোগ নেই। দেশে রয়েছে। দেশে টিম দুর্বল হলেও বাইরে থেকে গণহারে জায়গা ভর্তির সুযোগ নেই। নাগরিকত্ব সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
তাই বিশ্ব ক্লাব পরীক্ষায় সোনার মেডেল প্রাপ্তিতেই সাবধানী পেশাদারের গর্বের প্লে-স্টেশন শেষ হয়ে যায়। তার কামনার তো দু’টোই স্তর— অর্থ এবং পেশাদার প্রাপ্তি। দু’টোই ক্লাবে বেশি। পেশাদার সার্কিটে বেশি। সোভিয়েত ইউনিয়নে যেমন কমিউনিজমের স্বপ্ন ভেঙে ছত্রখান হয়ে গিয়েছে, প্রথম বিশ্বের ক্রীড়াবিদদের মধ্যে দেশকে অগ্রাধিকার তেমনই এক মৃত স্বপ্ন। বিগতযৌবনা সুন্দরীর মতো। দিনে দিনে যার চৌম্বকক্ষেত্র দুর্বল হচ্ছে।
এই যে ভারতীয় দলের বিদেশি কোচ পাওয়া যাচ্ছে না, তার মূলেও তো সেই একই সিনড্রোম। দেশ ছাপিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি পৃথিবীতে অগ্রাধিকার। পন্টিং, ফ্লেমিং, ভেত্তোরি— সবার বক্তব্য খুব পরিষ্কার। দু’মাসে ফ্র্যাঞ্চাইজি দুনিয়া থেকে এত ডলার রোজগার করি। ইন্ডিয়ার দায়িত্ব নেওয়া মানে বারো মাসের ঝড়ঝাপটা। এখানে যাও, ওখানে যাও। তার পর ওই অসম্ভব চাপ! কী দায় পড়েছে অমুক দেশের কোচিং করাচ্ছি বলে বিজয়গাথা লিখতে যাওয়ার। বহু বুঝিয়েও এঁদের দরখাস্ত অবধি দিতে রাজি করানো যায়নি।
ক্রিকেট তো তবু দশ-এগারো দেশ খেলে, উন্নত বিশ্ব নয় সেই অর্থে। তাতেই এই অবস্থা। তো বিশ্ব ক্লাব ফুটবলের রাজকীয় মঞ্চে কী বাড়তি জৌলুসের আকর্ষণ থাকতে পারে বোঝাই যায়। সেই দুনিয়ায় দাঁড়িয়েও কোনও এক মেসি যদি আজও দেশ হারার পর তেন্ডুলকরের মতোই মর্মান্তিক বিষণ্ণতায় ডুবে যান, তবে আগে বোধ হয় সেই রোম্যান্টিক মনোভাবের জন্য তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকা উচিত ফুটবল রসিকের। যে এই লোকটা সময়ের দাবির উপরে উঠতে চেয়েছে। আমি নয়, আমরা নিয়ে ভেবেছে। এ রকম একটা সোনার মরসুম কাটানোর পরেও নতুন করে ঝুঁকি নিয়েছে দেশের জন্য।
ফুটবলারের আরও সমস্যা, টিম গেম। ক্রিকেটে যা সমস্যাই নয়। ক্রিকেটে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে সেরা পারফর্মার একটা ম্যাচ জিতিয়ে দিতেই পারে। একজন ব্রায়ান লারা একাই অস্ট্রেলিয়াকে টেস্টে হারিয়ে দিতে পারেন। ফুটবলে একজন মারাদোনাকে শ্রেষ্ঠ হওয়ার জন্য ভালদানোকেও গোল করতে হয়।
গয়কোচেয়াকে পেনাল্টি বাঁচাতে হয়। টমাস মুলারের জন্য একজন সোয়াইনস্টাইগার, একজন ম্যানুয়েল ন্যয়ারের দরকার পড়ে।
মেসিকে সরিয়ে নিন। কী আছে এই ফোঁপরা আর্জেন্টিনায়? কেবল মাসচারেনো আর দি’মারিয়া। বাকিদের মধ্যে আগেরোর মতো যাঁরা ক্লাব ফুটবলে জ্বলেন, তাঁরা দেশের জার্সির চাপ এলেই ক্রমশ বামন হয়ে যান।
সান্তিয়াগোর ফুটবল গির্জার পাশে শবদেহ নিয়ে ফুটবল সম্রাটের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া দেখে মনে পড়ে যাচ্ছিল তাঁকে তো স্বচক্ষে এক বছর আগে ঠিক এমনই আগুনে সোচ্চার পুড়তে দেখেছি। যখন গোল্ডেন বুট আর বলের জন্য যথাক্রমে তাঁর এবং ম্যানুয়েল ন্যয়ারের নাম ঘোষিত হল এবং তাঁরা পাশাপাশি হেঁটে গেলেন। পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য ওই রকম অবিশ্বাস্য বিষণ্ণতায় হাঁটতে বিশ্বের কোনও ক্রীড়াবিদকে কখনও দেখিনি। যেন গিলোটিনের দিকে শেষ যাত্রা এবং মুখের সমস্ত রক্ত কেউ শুষে নিয়েছে এমন ভঙ্গিতে গেলেন আর এলেন অবিশ্রান্ত মেসি।
সে দিন মনে হয়েছিল। সান্তিয়াগোর ফাইনালের দিনেও মনে হল একটা মাঝারি মাপের দলকে ফাইনালে নিয়ে গিয়েছেন এটাই তো তাঁর রাজতিলক হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। বিশ্বের আর কেউ সঙ্গে প্লে-স্টেশন নিয়েও পারত কি? রোনাল্ডো পারেননি। নেইমার তো বিশ্বকাপ এবং কোপা— দ্বিতীয়বার পারলেন না। তাঁদের নিয়ে তো কেউ বলছে না যে দেশের জার্সি গলালেই ব্যর্থ। তা হলে কি ফাইনাল অবধি যাওয়াই লিওনেল মেসির অপরাধ?
কোপা সেরার পুরস্কার নিতে না চাওয়াও তো কত রোম্যান্টিক। আমার দেশ জেতেনি, লাখ লাখ আর্জেন্টিনীয় রক্তাক্ত হয়ে কাঁদছে, তখন ওই ব্যক্তিগত পদকটা দিয়ে আমার কী হবে!
নিয়ে বড়জোর চিলির সমুদ্রের ধারে ওটা ছুড়ে ফেলে দেওয়া যায়।
এটা তার চেয়ে ভদ্রোচিত। আমি নিলামই না!
ট্রফি পেলে সংখ্যাতত্ত্বে মেসির গুরুত্ব আরও বাড়ত। কিন্তু ট্রফির গ্ল্যামারে চেপে যেত আরও কিছু। না পাওয়ার মৃত ভঙ্গি যেন আরও বড় এক চ্যাম্পিয়নকে চেনালো। যিনি সর্বকালীন যোদ্ধা। নির্দিষ্ট কোনও সময়ের নন। যাঁর জেতা আর ব্যর্থতা নেওয়ার ধরন একই রকম আকর্ষণীয়।
মারাকানায় সে দিন সামনে থেকে যাঁরা দেখেছিলেন তাঁদের যদি গা ছমছম করে থাকে, দোষ দেওয়া যায় না। দৃশ্যপট এমনই ছিল যে লোকটা মারাই গিয়েছে। পুরস্কার নিতে যাচ্ছে এক প্রেতমূর্তি। এটা কি দেশসেবক হতে চাওয়ার একমাত্র প্রাপ্য?
সেই দৃশ্যটা কলকাতার এক ইংরেজি ক্রিকেট লিখিয়ে সম্পর্কে সুনীল গাওস্করের উত্তেজিত হওয়ার কথা মনে পড়িয়ে দিয়েছিল।
বহু বছর আগের কথা। তখনও এই পেশাতেই আসিনি, কিন্তু পরে শুনেছি।
সাংবাদিক লিখেছিলেন মৃতপ্রায় শেষ দিনে বলার মতো ঘটনা গাওস্করের স্লিপে সহজ ক্যাচ মিস। গাওস্কর অতঃপর সাংবাদিকটিকে দৃপ্ত ভঙ্গিতে বলেছিলেন, ‘‘আপনি কত দূর ক্রিকেট খেলেছেন আমি জানি না। খেললে অবশ্যই আপনার বোঝা উচিত ছিল ওটা সেকেন্ড স্লিপের ক্যাচ ছিল। ফার্স্ট স্লিপ থেকে আমি ঝাঁপিয়ে একটা অসম্ভব চেষ্টা করেছিলাম। আপনার লেখা পড়ে মনে হল অসম্ভব ক্যাচ ধরতে যাওয়াটাই আমার অপরাধ হয়েছিল।’’ সাংবাদিক যখন আমতা আমতা করছেন তখন আরও উত্তেজিত গাওস্কর বলে চলেন, ‘‘কী ক্ষতি করলেন জানেন? এর পর আমার টিমের তরুণ ক্রিকেটাররা এই সব ক্যাচে যেতে ভয় পাবে। ভাববে ক্যাপ্টেনকেই এ ভাবে লিখলে আমি তো কোন ছাড়। ভয় পাবে ঝুঁকি নিলে এত সমালোচনা হয়। তার চেয়ে বাবা সেফ থাকা ভাল। দূরের ক্যাচে যাবই না।’’
ঘটনাটা যত মনে পড়ছে তত ভাবছি হেরে যাওয়া বিষণ্ণ মেসির ছবি এই যে রোজ রোজ কাগজ, টিভি, সোশ্যাল মিডিয়া ছিড়ে বেরোচ্ছে তাতে চাঁদ আর মঙ্গল গ্রহ ছাড়া মোটামুটি সবাই জেনে গিয়েছে যে বিশ্বের বৃহত্তম অপরাধ করে মেসি ফাইনাল হেরে গিয়েছেন। স্বয়ং মেসি-শরীরেই যদি সাফল্যের বর্ম ভেদ করে এত সহস্র ক্রুশ ঢোকে, সাধারণ ফুটবলারের কী হবে? তাকে ঝোলানোর অনেক আগেই তো সে শেষ। সে কেন খামখা উচ্চাকাঙ্ক্ষী হবে দেশের হয়ে পদক জিততে? নিকুচি করেছে তার বেকার ঝুঁকি নিতে!
মেসিরা অবশ্য যুগে যুগে এমনই অকুতোভয় থেকে যাবেন। এঁদের ধর্মই এমন যে, চলিত ব্যাকরণে কোনও বিশ্বাস থাকে না। এঁরা সব সময় চান সাহসের নতুন ব্যাকরণ বই লিখতে। তা তার মধ্যে যতই ঝুঁকি থাক।
বিখ্যাত বলিউড নায়ক তাঁর আব্বার শোনা একটা শায়রি বারবার বলেন, ‘গিরতে হ্যয় শের শওয়ারি ময়দানি জং মে/ ও জিসম কেয়া গিরে জো ঘুটনে কি বল চলে’।
যারা ঘোড়া আর হাওয়ার পিঠে সওয়ার হয়, পড়ার সম্ভাবনা তাদেরই বেশি থাকে। যারা এমনিতেই হামাগুড়ি দিচ্ছে, তারা যদি পড়েও সেটা কি আর পড়া হল!
লিওনেল মেসিকে আধুনিক ফেসবুকের পাতা ব্যঙ্গবিদ্রুপে ভরিয়ে দিতে পারে। ভবিষ্যৎ ফুটবল ইতিহাস তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেশজ মানচিত্রে হল অব ফেম দেবে। বলবে এই লোকটা হাওয়ার গতিকে অগ্রাহ্য করে বিপরীতমুখী হাওয়ার সওয়ার হয়েছিল। এঁকে নিয়ে— এঁদের নিয়ে কেবল অভিভূতই থাকা যায়।