রামোজি রাওকে শেষ শ্রদ্ধায় এন চন্দ্রবাবু নায়ডু। ছবি: সংগৃহীত ।
রবিবার সকালে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রামোজি রাওয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। হায়দরাবাদে তাঁর স্বপ্নে ফিল্ম সিটিতেই পঞ্চভূতে লীন তাঁর নশ্বর দেহ। সংবাদমাধ্যম, দেশের প্রথম সারির নেতা থেকে শুরু করে বিনোদন দুনিয়ার দিকপালেরা তাঁর শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন। খবর, তাঁকে কাঁধ দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান টিডিপি প্রধান এন চন্দ্রবাবু নায়ডু। অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার তাঁর শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার জন্য তিন জন সিনিয়র আইএএস অফিসারকেও মনোনীত করেছিল। অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকে দেখাশোনা করেন চন্দ্রবাবু। রাজ্য সরকারের ঘোষণা, রবি এবং সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে।
শনিবার ভোরে হায়দরাবাদের স্টার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ‘ফিল্ম সিটির জনক’-এর। বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েই শোক জানান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, বিজেপি প্রধান নরেন্দ্র মোদী-সহ দেশের শীর্ষনেতারা। এক্স হ্যান্ডেল (সাবেক টুইটার)-এ মোদী লেখেন, ‘‘যখনই রামোজি রাওয়ের কথা ভাবি, তখনই এক বহুমুখী দীপ্তির কথা মনে পড়ে। কৃষক পরিবারের সন্তান রামোজি রাও। নিজেকে বিশ্বে সিনেমা, বিনোদন, সংবাদমাধ্যম, কৃষি, শিক্ষা বিভিন্ন বিভাগে সমান ভাবে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তার পরেও তিনি ছিলেন মাটির কাছাকাছি।’’
বাংলা বিনোদন দুনিয়াও রামোজি রাওয়ের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ। আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান জাতীয় পুরস্কারজয়ী শিল্প নির্দেশক নীতীশ রায়। তাঁর কথায়, ‘‘এত কাজপাগল লোক খুব কম দেখেছি। ভোর চারটেয় উঠতেন। সম্পাদকীয় লিখবেন বলে। ওঁর কাছে তথ্য আসত। সে সব নিজে পড়ে লিখতেন। তার পর আমায় দিতেন। আরও ঘষামাজা করার জন্য। ভোর ছ’টায় নিয়ম মেনে হাঁটতে বেরোতেন। রোজ এক কাপ দুধ আর একটা কলা তাঁর সকালের জলখাবার। ঘড়ির কাঁটা ধরে অফিসে আসতেন। সারা দিন কাজ আর কাজ।’’
শোকস্তব্ধ নন্দিতা-শিবপ্রসাদ। নিজস্ব।
শোক জানিয়েছেন উইন্ডোজ় প্রযোজনা সংস্থার কর্ণধার জুটি নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও। নন্দিতা বলেন, “রামোজি রাও আমার বড় দাদা। ওঁর ভরসাতেই ই টিভি বাংলায় আমায় যাবতীয় কাজ। প্রচুর স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। আমার পেশাজীবন নিজে হাতে যত্ন করে গড়ে দিয়েছিলেন। রামোজি রাও ছাড়া আমার অস্তিত্ব অসম্পূর্ণ।” শোকবার্তায় শিবপ্রসাদের বক্তব্য, ‘‘রামোজি ফিল্ম সিটিতে ওঁকে দেখে অবাক হয়েছি, এত বড় মানুষ। কিন্তু কী অনাড়ম্বর তাঁর জীবন! কোনও চাকচিক্য নেই। ইটিভি বাংলা আমার কাছে ফিল্ম ইনস্টিটিউটের মতো। আমি সুযোগ পেয়েছিলাম কাজ শেখার। রামোজি রাও প্রযোজিত প্রথম বাংলা সিনেমা ‘জামাই নম্বর ওয়ান’-এর হিরো ছিলাম আমি। তাই আমার পরিচয় ওঁর কাছে সারা জীবনই ছিল ‘শিবো’, আবার কখনও ‘জামাই’। আজকের বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ৯০ শতাংশ কলাকুশলী ঋণী হয়ে থাকবে ইটিভি নেটওয়ার্ক এর কাছে।”