সঙ্গীত শিল্পী দেবজ্যোতি মিশ্র।
যে যাঁর সাধ্য মতো এগিয়ে আসছেন অতিমারির সঙ্গে ‘যুদ্ধ’ করতে। কেউ অক্সিজেনের ব্যবস্থা করছেন, কেউ বা হাসপাতালে শয্যার। কেউ রান্না করা খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন, কেউ আবার মানসিক রোগের চিকিৎসা করছেন। ঠিক সে ভাবেই নিজের পথ ধরে মানুষের কাঁধে হাত রাখার চেষ্টা করলেন সঙ্গীত শিল্পী দেবজ্যোতি মিশ্র। আর তাঁর অস্ত্র, সুর।
‘জুম কল’-এ একজোট হচ্ছেন সঙ্গীতপ্রেমীরা। সেই দলে রয়েছেন কয়েক জন চিকিৎসকও। যাঁরা গত দেড় বছর ধরে কোভিড রোগীর সেবা করে যাচ্ছেন। চোখের সামনে প্রাণ চলে যেতে দেখছেন শরীর থেকে। দেবজ্যোতির এই গানের আড্ডায় যেন তাঁরা খানিকটা শ্বাস নিতে পারছেন। সে ভাবেই সকলকে সুরে-সুরে জাগিয়ে রাখতে চাইছেন সঙ্গীতকার। চাইছেন ‘প্রাণবায়ু’র ঘাটতি হলে যেন সুরের কাছে ফিরে আসেন সবাই। শুরু করেছেন ‘সঙ্গী হোক সুর’। কয়েক জন শ্রোতা দেবজ্যোতিকে বলেছেন, তাঁদের আতঙ্ক কাটতে সাহায্য করছে এই গানের আসর। দেবজ্যোতির কথায়, ‘‘একটা মানুষের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে গান, সুর, ছন্দ। শুধু তাই নয়, মানুষ ব্যস্ত রাখতে পারছেন নিজেকে। অন্য দিকে, মৃত্যুর খবর শুনে শুনে কিনারায় থাকা সেই মানুষগুলোর হাত ধরতে চাইছি গানের মাধ্যমে। বিভিন্ন রাগের সাহায্যে।’’
সুরে সুরে মানসিক চিকিৎসায় উদ্যোগী দেবজ্যোতি। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন গানে জেগে ওঠেন। সকলেরই এক ধরনের গান পছন্দ নয়। সে কথা মাথায় রেখে কর্মসূচি ঠিক করেছেন সুরকার। কোনও দিন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত নির্ভর আসর, কোনও দিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান। মোৎজার্ট এবং বিঠোফেনও বাদ যাচ্ছেন না সেই তালিকা থেকে। কোনও দিন আবার নিজের সুর দেওয়া গান নিয়ে আড্ডা হচ্ছে, গান হচ্ছে। শ্রোতাদের ইচ্ছে হলে, তাঁরাও গান ধরছেন।
কী ভাবে যোগ দেওয়া যায় আসরে?
প্রতি সপ্তাহে মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার সন্ধ্যায় ৭টা থেকে দু’তিন ঘণ্টা ধরে এই আড্ডা চলছে। প্রতি সপ্তাহে সুরকারের ফেসবুক পেজে লিঙ্ক দেওয়া হচ্ছে। সেই লিঙ্কের মাধ্যমে যোগ দান করা যাবে। দেবজ্যোতি বললেন, ‘‘আমরা কথায় বলি, ‘গানের মধ্যে ভাল থাকব’। আমি সেটাই রূপায়িত করার চেষ্টা করছি এই কঠিন সময়ে। যাতে সত্যিই গানে ভাল থাকা যায়।’’
নিম্নলিখিত লিঙ্কের সাহায্যে আপনিও সেই আসরে অংশগ্রহণ করতে পারেন—
https://us02web.zoom.us/j/83340309080?pwd=TkZScitpWnovUEdGUzJ5NGdoNndFQT09