বাংলাদেশে তৈরি হওয়া এই সিরিজ় পরিবেশনার মূল দায়িত্বে ছিলেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী শায়ান চৌধুরী অর্ণব। ছবি: সংগৃহীত।
প্রথম সিজ়নেই মিলেছিল আভাস। দ্বিতীয় সিজ়নের শুরুতেই সেই ভরসার জায়গাকে আরও পোক্ত করল ‘কোক স্টুডিয়ো বাংলা’। বাংলা গানকে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে নতুন ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছিল ‘কোক স্টুডিয়ো বাংলা’। ‘চিলতে রোদ’, ‘দখিন হাওয়া’, ‘সব লোকে কয়’-এর মতো ভিন্ন ধারার গান পরিবেশন করে প্রথম সিজ়নেই শ্রোতাদের মন জয় করেছিল এই অনুষ্ঠান। মূলত বাংলাদেশে তৈরি হওয়া এই সিরিজ় পরিবেশনার মূল দায়িত্বে ছিলেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী শায়ান চৌধুরী অর্ণব। দ্বিতীয় সিজ়নে ‘মুড়ির টিন’ গান নিয়ে ফিরল ‘কোক স্টুডিয়ো বাংলা’। এক দিনেই ১৫ লক্ষ শ্রোতার মন ছুঁল বাংলাদেশের আঞ্চলিক উপভাষার এই গান। গানের প্রযোজনা, পরিবেশনায় অর্ণবই।
ফেব্রুয়ারি প্রেমের মাস। ভালবাসার ভাষার মাস। বাংলা ভাষার প্রতি প্রেম নিবেদন করেই শুরু হবে ‘কোক স্টুডিয়ো বাংলা’র দ্বিতীয় সিজ়ন। ‘কোক স্টুডিয়ো বাংলা’র তরফ থেকে জানানো হয়েছিল আগেই। ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেম দিবসে মুক্তি পেল দ্বিতীয় সিজ়নের প্রথম গান ‘মুড়ির টিন’। প্রথম গানেই সোজা ওভার বাউন্ডারি। মাথার উপর দিলে বল একেবারে গ্যালারির বাইরে। এক দিনেই ১৫ লক্ষ ভিউ পেল ‘মুড়ির টিন’। আশির দশকে বাংলাদেশে বাসচালক ও কন্ডাকটরদের মধ্যে গাওয়া হত এই গান। সেখান থেকেই জনপ্রিয়তা পায় ‘মুড়ির টিন’। পরবর্তী কালে সিলেট থেকে খুলনা, সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এই আঞ্চলিক গান। নিজেদের আঞ্চলিক উপভাষায় নিজেদের মতো করে গান গাইতেন বাসযাত্রী থেকে বাসের খালাসি সবাই। প্রাথমিক ভাবে গানের কোনও নাম না থাকলেও পরে ‘মুড়়ির টিন’ নামে পরিচিত হয় এই গান। গানের কথা বলতে বাসচলতি মানুষের কথোপকথন। সফরের একঘেয়েমি কাটাতে বেশ উদ্যমী সুরে বাঁধা হয়েছিল গান। সেই গানকেই ‘কোক স্টুডিয়ো বাংলা’র মঞ্চে নতুন ভাবে পরিবেশন করলেন রিয়াদ হাসান। গীতিকারও তিনিই। গানের সুর পরিচালনায় শুভেন্দু দাস। গানের দু’টি অংশে সিলেটি ও খুলনার উপভাষায় র্যাপও রয়েছে। সিলেটি র্যাপের নেপথ্যে পল্লব ভাই, খুলনা র্যাপ গেয়েছেন তৌফিক আহমেদ। সমগ্র গান পরিবেশনার দায়িত্বে শায়ান চৌধুরী অর্ণব নিজে।
নিত্যদিনের সফরে হরেক রকমের মানুষের সঙ্গে দেখা হয় আমাদের। হরেক রকমের অভিজ্ঞতা ঝুলিতে ভরে জীবনের পথে এগিয়ে চলি আমরা। সেই সব অভিজ্ঞতাকে এক পাত্রে সংগ্রহ করেছে ‘মুড়ির টিন’। মুড়ির টিনের আওয়াজ যেমন মনকে চাঙ্গা করে তোলে, জীবনের হরেক অভিজ্ঞতাও যেন সে ভাবেই আমাদের উজ্জীবিত করে। এ যেন এক জায়গায় সব রঙের, সব স্বাদের সমাহার। সেই সমাহারেই ঋদ্ধ বাংলা ভাষা। প্রেমের মাসে, ভাষা দিবসের মাসে তাই এই গানের মাধ্যমেই বাংলা ভাষার প্রতি প্রেম নিবেদন ‘কোক স্টুডিয়ো বাংলা’র।