সিধু মুসে ওয়ালা। ফাইল চিত্র।
পঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসে ওয়ালার হত্যার ‘ফল’ দু’দিনের মধ্যেই ভুগতে হবে বলে হুমকি দিল দিল্লি ও পঞ্জাবে সক্রিয় দু’টি অপরাধী গোষ্ঠী।
পঞ্জাবের বার্নালায় আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার পথে রবিবার আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন মুসে ওয়ালা ওরফে শুভদীপ সিংহ সিধু। তাঁর হত্যার দায় নিয়েছে দিল্লির তিহাড় জেলে থাকা লরেন্স বিষ্ণোই ও কানাডা প্রবাসী গোল্ডি ব্রার নামে দুই গ্যাংস্টার। আজ গ্যাংস্টার নীরজ বাওয়ানা ও দাবিন্দর ভাম্বিয়ার তরফে ফেসবুকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, মুসে ওয়ালা হত্যার ফল ভুগতে হবে আততায়ীদের। তবে তা কেমন ফল তা স্পষ্ট করেনি তারা। পুলিশ সূত্রে খবর, নীরজ বাওয়ানা দিল্লি ও পঞ্জাবে সক্রিয় বড় অপরাধ চক্রের মাথা। ভাম্বিয়া গোষ্ঠীর দাবি, আর এক পঞ্জাবি গায়ক মনকিরত আওলাখ এই হত্যার সঙ্গে যুক্ত। তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত এক জনকে উত্তরাখণ্ড থেকে গ্রেফতার করেছে পঞ্জাব পুলিশ।পুরনো মামলায় তিহাড় জেলে থাকা লরেন্স বিষ্ণোইকেও হেফাজতে নিয়েছে তারা। সূত্রের খবর, তাকে মুসে ওয়ালা হত্যা নিয়ে জেরা করা হবে।
হত্যার সময়ে মুসে ওয়ালার সঙ্গেই তাঁর মহীন্দ্রা থর গাড়িতে ছিলেন নিহত গায়কের দুই বন্ধু গুরবিন্দর ও গুরপ্রীত সিংহ। ঘটনার আগেই মুসে ওয়ালার নিরাপত্তা কমিয়ে দিয়েছিল পঞ্জাবের আপ সরকার। তা নিয়ে এখন সমালোচনার মুখে পড়েছে তারা। গুরবিন্দর জানিয়েছেন, মুসে ওয়ালার গাড়িতে নিরাপত্তারক্ষীদের বসার জায়গা ছিল না। তাই তাঁর বাবা বলকৌর সিংহ দুই নিরাপত্তারক্ষীকে অন্য গাড়িতে নিয়ে মুসে ওয়ালাকে অনুসরণ করছিলেন।
বার্নালার কাছে মুসে ওয়ালার আত্মীয়ের গ্রামে পৌঁছতেই প্রথমে পিছন থেকে এক বার গুলি ছোড়া হয় বলে জানিয়েছেন গুরবিন্দর। অন্য একটি গাড়ি মুসে ওয়ালার গাড়ির পথ আটকায়। তিন দিক থেকে আততায়ীরা এসে মুসে ওয়ালাকে লক্ষ্য করে অ্যাসল্ট রাইফেল থেকে গুলি ছুড়তে শুরু করে। নিহত গায়কও নিজের পিস্তল থেকে দু’বার গুলি ছোড়েন। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। মুসে ওয়ালাকে আট-দশ জন দুষ্কৃতী অন্তত ৩০ রাউন্ড গুলি করে। তাঁর মৃত্যু নিয়ে নিশ্চিত হলে, পালায় আততায়ীরা। বেঁচে যান গুরবিন্দর ও গুরপ্রীত। পিছনের গাড়িতে আসা মুসে ওয়ালার বাবা বলকৌরই ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তার পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া বুলেট পরীক্ষা করে পুলিশের ধারণা, আততায়ীরা রুশ এএন-৯৪ অ্যাসল্ট রাইফেল ব্যবহার করেছিল।
বছর আঠাশের মুসে ওয়ালার মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের সদস্যদের মতোই ভেঙে পড়েছে তাঁর পোষ্য বঘিরা ও শেরা। মানসার বাড়িতে যখনই থাকতেন তখনই পোষা দুই ডোবারম্যানের সঙ্গে সময় কাটাতেন মুসে ওয়ালা। তাঁর মৃত্যুর পরে খাওয়া দাওয়া ছেড়েছে তারা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।