‘রোটি কাপড়া অউর মকান’ (১৯৭৪) ছবিতে অভিনয় করতে করতেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মৌসুমী। —ফাইল চিত্র
পেশাদার জীবনের ব্যস্ততার মধ্যে মা হতে গিয়ে অনেক সময়েই কেরিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অভিনেত্রীদের। আবার ছন্দে ফিরতে সময় লেগেছে। সব ইন্ডাস্ট্রিতেই এমন উদাহরণ অঢেল। পাঁচ দশকের বেশি অভিনয় জীবন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের। বাংলা ছবি ‘বালিকা বধূ’ দিয়ে কিশোরী মৌসুমী প্রথম আসেন পর্দায়। পরে বলিউডেও প্রতিষ্ঠা পান। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মৌসুমী তাঁর দীর্ঘ কেরিয়ার নিয়ে কথা বলেন। জানান, পরিচালক-প্রযোজক মহেশ ভট্ট এক বার তাঁকে বলেছিলেন, “যখনই তোমার কেরিয়ারে সুদিন আসে, তুমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ো।”
অভিনেত্রীরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ছবিতে কাজ কমে আসে, চাহিদাও কমে যায়— এমন ভাবনা থেকেই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন মহেশ। ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপনেও আগ্রহী নন বলে জানিয়েছিলেন মৌসুমী। তিনি কাজ করতে এসেছেন, কাজের সঙ্গেই তাঁর লেনদেন, অভিনেত্রীর মত ছিল এমনটাই।
‘দেশপ্রেমী’ (১৯৮২) ছবির প্রস্তাব বাতিল করার পর অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কে প্রভাব পড়েছিল কি না জানতে চাওয়ায় মৌসুমী বলেন, “একেবারেই নয়। কারণ,অভিনেতা হিসাবে অমিতাভের লড়াই আমি দেখেছি। নিজেকে প্রথম সারির অভিনেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে তিনি সেরাটা দিতেন। আমি কখনও একশো শতাংশ দিতে পারিনি। মহেশ ভট্ট আমায় এক বার বলেছিলেন, যখনই তোমার কেরিয়ারে সব খুব ভাল হচ্ছিল, তখনই তুমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে। তাঁর মনে হয়েছিল, এটা আমার জীবনে একটা প্রতিবন্ধকতা।”
অভিনেত্রী অবশ্য সে কথা মানেনি। জানিয়েছিলেন মহেশকে, এই বিষয়টি তাঁর জীবনে নতুন রং যোগ করেছে।
মৌসুমী জানান, অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় কেরিয়ারে কোনও চাপ অনুভব করেননি তিনি। তাঁর কথায়, “আমি কী চাই, তা জানতাম। কেরিয়ার এবং তারকাজীবন আমার কাছে বেশি গুরুত্ব পায়নি।” ‘অনুরাগ’(১৯৭২), ‘মঞ্জিল’(১৯৭৯), ‘ঘর এক মন্দির’(১৯৮৪), ‘পিকু’(২০১৫) ইত্যাদি ছবিতে মৌসুমীর অভিনয় দর্শকদের মন ছুঁয়ে গিয়েছিল।
অভিনেতা মনোজ কুমার অবশ্য মৌসুমীর প্রতি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। ‘রোটি কাপড়া অউর মকান’ (১৯৭৪) ছবিতে অভিনয় করতে করতেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মৌসুমী। দুই কন্যা ছিল অভিনেত্রীর, পায়েল আর মেঘা। বড় মেয়ে পায়েলের মৃত্যু হয় ডায়াবিটিসে ভুগে, মাত্র ৪৫ বছর বয়সে। ছোট মেয়ে মেঘার এখন ৪১ বছর বয়স, রয়েছেন অভিনয়ের জগতেই।