কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় পা মেলালেন মুনমুন-তনয়া। ফাইল চিত্র।
রাহুল গান্ধীর পাশে পাশে হাঁটছেন সুচিত্রা সেনের নাতনি, মুনমুন সেনের কন্যা। এমনই দেখল গোটা দেশ। তবে তিনি মুনমুনের জেষ্ঠা কন্যা রাইমা নন, কনিষ্ঠা কন্যা রিয়া। সুচিত্রাকে রাজনীতি-নির্ভর ছবি ‘আঁধি’-তে দেখেছিল গোটা দেশ। গুলজারের পরিচালনায় সেই ছবিতে ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রের আদলে অভিনয় করেছিলেন সুচিত্রা। কাকতালীয় ভাবে, সেই ইন্দিরার নাতির পাশে দেখা গেল সুচিত্রার নাতনিকে। সেলুলয়েডে নয়। বাস্তবে।
কংগ্রেসের অন্যতম নেতা রাহুল কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ করছেন। সেই পদযাত্রায় বৃহস্পতিবার হাঁটতে দেখা গেল অভিনেত্রী রিয়াকে। কংগ্রেসের রাজনৈতিক যাত্রায় আচমকা রিয়াকে হাঁটতে দেখে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে। চোখে সানগ্লাস, পায়ে হাঁটার উপযোগী সাদা স্নিকার্স, খোলা চুলে রিয়া রাহুলের পাশে পাশে হাঁটছিলেন। পরনে হালকা বাদামি আর লাল রঙের টপ এবং জিন্সের ট্রাউজার্স। মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে রাহুলের সঙ্গে বেশ কয়েক বার কথা বলতেও দেখা গেল তাঁকে।
রাহুলের যাত্রায় কিছু দিন আগে পা মিলিয়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী পূজা ভট্ট। এ বার শামিল বাঙালি অভিনেত্রী রিয়া। ঘটনাচক্রে, যাঁর মা মুনমুন পাঁচ বছর পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন।
রিয়া নিজে কখনও সক্রিয় রাজনীতি করেননি। তবে মায়ের হয়ে প্রচার করেছেন। সেখানে দেখা গিয়েছিল রিয়ার দিদি রাইমাকেও। মুনমুন দু’বার তৃণমূলের প্রতীকে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রথম বার বাঁকুড়া থেকে সিপিএমের ন’বারের সাংসদ বাসুদেব আচারিয়াকে পরাজিত করে সাংসদ হন তিনি। ২০১৯ সালে তাঁর লোকসভা কেন্দ্র বদল করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে বার আসানসোল থেকে লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়ে বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়ের কাছে দু’লক্ষ ভোটে পরাজিত হন তিনি। ঘটনাচক্রে, সেই বাবুল এখন তৃণমূলের মন্ত্রী।
মুনমুনের দু’টি লোকসভা নির্বাচনেই মায়ের প্রচারে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছিল রিয়াকে। সেই ভোটগুলিতে অন্য তৃণমূল প্রার্থীদেরও হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন তিনি। তবে কখনও নিজে কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেননি। রাহুলের পদযাত্রায় যোগ দেওয়ার পর রিয়াকে নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে তা জল্পনাই রয়েছে। রিয়ার তরফে রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে যোগ দেওয়ার কোনও খবর শোনা যায়নি। শোনা যাবে কি না, তা নিয়ে এখনই নির্দিষ্ট করে কেউ কিছু বলতে চাইছেন না। অনেকের মতে, অভিনেত্রী হিসেবে রিয়ার কেরিয়ার যে রমরম করে চলছে, তা নয়। অনেক নায়িক-নায়িকাই কেরিয়ারের এমন সময়ে রাজনীতির আঙিনায় পা রাখেন। রিয়াও তেমনই কিছু করবেন কি না, তা নিয়েই যাবতীয় জল্পনা। তবে অন্য অনেকের মতে, গান্ধী পরিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের নিরিখেই রাহুলের পাশে হাঁটতে গিয়েছেন রিয়া।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে আসানসোলে মায়ের হয়ে প্রচার করার সময় রিয়া বলেছিলেন, “আমার রাজনৈতিক মতাদর্শ মায়ের সঙ্গে মেলে। তাই বাঁকুড়াতেও মিছিল করেছিলাম।” তবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বাসনা তাঁর আছে কি না, তা নিয়ে কখনওই খোলাখুলি ভাবে কিছু বলেননি তিনি।