‘অওকত তো ওহি হো যো হম দেতে হ্যায়।’ খল চরিত্র ও নায়কের সংলাপে ভরপুর যে সব ছবি মানুষের মনে দাগ কেটেছে, তার মধ্যে সহজেই জায়গা করে নেবে আর্টিকল ১৫। সমাজে উচ্চবর্ণ ও নিম্নবর্ণের সংগ্রাম ও এক আইপিএসের গল্প বলা এ ছবি মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। ব্যবসাও করছে চুটিয়ে। সংলাপ ও ঘটনার টক্কর যদি এই ছবির প্রাণ হয়, মন অবশ্যই অভিনয়।
আর অভিনয়ের কথা বলতে গেলে আলবাত উঠে আসবে এমন এক নাম, যাকে নানা ছবিতে দেখা গেলেও পরিচালক অনুভব সিংহের ‘আর্টিকল ১৫’-এর জন্য বলিউডি সাম্রাজ্যে তাঁর কথা মনে রাখবেন সকলে। তিনি ঈশা তলওয়ার। আইপিএস অয়ন ওরফে আয়ুষ্মান খুরানার স্ত্রীর ভূমিকায় অনবদ্য ঈশা।
মুম্বইয়ের এক পঞ্জাবি পরিবারে ১৯৮৭ সালে জন্ম ঈশার। বাবা বিনোদ তলওয়ার চলচ্চিত্র জগতে যুক্ত থাকার কারণে ছেলেবেলা থেকেই বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের ছবি দেখে ও আলোচনা শুনেই বড় হয়েছেন ঈশা।
মুম্বইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর থেকেই কেরিয়ারে মন দেন এই নায়িকা। তবে অভিনয় ও সিনেমার বোধ নিয়ে সাবলীল থাকলেও নিজের নাচের দিকটি নিয়ে যত্নবান হন তিনি। টেরেন্স লুইসের নাচের ক্লাসে ভর্তি হন ২০০৪ সালে।
ব্যালে, জ্যাজ, হিপহপ, সালসা-সহ নানা নাচ শিখতে শিখতে একদিন এই ডান্স স্টুডিওর অন্যতম শিক্ষক হয়ে ওঠেন ঈশা। এর পরেই ফিল্মি কেরিয়ার নিয়ে আরও সিরিয়াসলি চিন্তাভাবনা করতে থাকেন তিনি। লুইসের সংস্পর্শে এসেই নিজের জীবনে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন বলে দাবি করেন ঈশা।
এর পর প্রাথমিক ভাবে মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু করলেও পরিচালক বিনোদ তলওয়ারের সন্তান ঈশার ছবিতে প্রথম হাতেখড়ি মালয়ালম ছবিতে ২০১২ সালে।
মডেলিং ও বিজ্ঞাপনের জগতে কাজ করতে করতেই বলিউডে বেশ পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন ঈশা। ভিভেল, পিৎজা হাট, ডিউলাক্স পেন্টিংয়ের মতো সংস্থার বিজ্ঞাপনে ঈশার পরিচিতিও বাড়তে থাকে।
জীবনের প্রথম ছবি হিসাবে মালয়ালম ছবি ‘ঠাট্টাথিন মারায়াথু’ জন্য চার মাস ভয়েস ট্রেনিং, মলয়ালম ভাষা ও গিটার সব কিছুই শিখতে হয় তাঁকে।
তবে জীবনের প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি হিসাবে এই মালয়ালম ছবির নাম উঠে এলেও শিশুশিল্পী হিসেবে ২০০০ সালে বলিউডি ছবি ‘হমারা দিল আপকে পাস হ্যায়’ ছবিতে অভিনয় করেন ঈশা।
মালয়লাম ছবিতে এক মুসলিম মেয়ের ভূমিকায় তাঁর অভিনয় সকলের মনে দাগ কাটে ও ‘২০১২-র সেরা পাঁচ ছবি’-র তালিকায় ঢুকে পড়ে। এর পরই হিন্দি ছবিরও নানা অফার আসতে থাকে ঈশার হাতে।
এর মধ্যেই কিছু ইংরাজি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি, মালয়ালম ও তেলুগু ছবিতেও অভিনয় করেন ঈশা। অপেক্ষা করছিলেন ভাল বলিউডি অফারের জন্য।
ক্যামিও চরিত্র হিসেবে হিন্দি ছবি ‘টিউবলাইট’-এ কাজ করেন ঈশা। ‘কালাকান্দি’ ছবিতেও তাঁকে দেখা যায়। তবে একেবারে দীর্ঘ চরিত্র বা হিন্দি ছবির নায়িকরা চরিত্রে তাঁকে প্রথম পরিচয় করাল ‘আর্টিকল ১৫’।
দলিত দুই মেয়ের ধর্ষণের ঘটনা ও পারস্পরিক ঘটনাক্রম নিয়ে ছবি এগোলেও আইপিএস অয়নের স্ত্রী হিসেবে ঈশার অভিনয়ও ইতিমধ্যেই চর্চার বিষয়।
আয়ুষ্মান খুরানার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমান তালে টক্কর দেওয়া ঈশার অভিনয় বোঝায়, বছর একত্রিশের এই নায়িকা বলিউডের লম্বা রেসের ঘোড়া।