স্বজনপোষণের অভিযোগের পাশাপাশি বলিউডের আরও একটি ছবি হল সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও তারকাদের সন্তানদের ব্যর্থতা। সেই তালিকায় রয়েছে অনেক বড় বড় নামও।
২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে’ ছবির নায়ক-নায়িকা ছিলেন জায়েদ খান এবং এষা দেওল। প্রথম জন সঞ্জয় খানের ছেলে এবং নায়িকা হলেন হেমা মালিনী-ধর্মেন্দ্রর কন্যা। দু’জনেই ব্যর্থ বলিউডে।
‘চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে’ বক্স অফিসে চলেনি। এরপর ‘ম্যায়ঁ হুঁ না’ এবং ‘লাকি’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন জায়েদ। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করতে ব্যর্থ তিনি।
পরিবার থেকে যথেষ্ট সাহায্য পেয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও বলিউডে ব্যর্থ যশ চোপড়ার ছেলে তথা আদিত্য চোপড়ার ভাই উদয়। ‘মোহব্বতেঁ’ ছাড়া কোনও ছবিতেই তাঁর অভিনয় কার্যত মনে রাখেননি দর্শকরা।
সাফল্যের নিরিখে বাবা জিতেন্দ্র এবং দিদি একতা কপূরের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেননি তুষার কপূর। তাঁর প্রথম ছবি ‘মুঝে কুছ কহেনা হ্যায়’ সফল হয়েছিল। কিন্তু তারপরে ধীরে ধীরে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েন তুষার।
ইন্ডাস্ট্রিকে বহু ছবি উপহার দিয়েছেন প্রযোজক হ্যারি বাওয়েজা। কিন্তু তাঁর ছেলে হরমন বাওয়েজার ভাগ্যে সর্বসাকুল্যে কয়েকটি মাত্র ছবি জুটেছে। বলিউড বরং তাঁকে মনে রেখেছে প্রিয়ঙ্কা চোপড়া ও বিপাশা বসুর প্রেমিকা হিসেবে।
বাবার পথে পা রেখেছিলেন ফারদিন খানও। কিন্তু বলিউড খালি হাতেই ফিরিয়ে দিয়েছে ফিরোজ খানের ছেলেকে। ‘প্যায়ার তুনে ক্যায়া কিয়া’, ‘ভূত’ এবং ‘জঙ্গল’ ছবি বাঁচাতে পারেনি তাঁর ডুবন্ত নৌকা।
দেব আনন্দের ছেলে সুনীল আনন্দ কয়েকটি মাত্র ছবিতে অভিনয় করেছেন। সুপারস্টারের ছেলের অভিনীত সেই ছবিগুলির নামও আজ দর্শকরা বিস্মৃত হয়েছেন।
‘জুবিলি কুমার’ নাম হয়েছিল তারকা রাজেন্দ্র কুমারের। তাঁর ছেলে কুমার গৌরবের প্রথম ছবি ‘লভ স্টোরি’ ছিল ব্লকবাস্টার। কিন্তু তার পরে ধীরে ধীরে বলিউড থেকে হারিয়েই যান তিনি।
প্রত্যাশাপূরণে ব্যর্থ মহাক্ষয় (মিমো) চক্রবর্তীও। মিঠুন চক্রবর্তীর ছেলের কাছ থেকে প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু মহাক্ষয়ের একটি ছবিও বক্স অফিসে সফল হয়নি।
১৯৯৬ সালে ‘রাজা কি আয়েগি বরাত’ ছবিতে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন আমজাদ খানের ছেলে শাহদাব খান। সে ছবিতে তাঁর নায়িকা ছিলেন রানি মুখোপাধ্যায়। এরপর রানি বলিউডের তারকা হয়ে ওঠেন। কিন্তু শাহদাব হারিয়ে গিয়েছেন বিস্মৃতির অতলে।
রাজ কপূরের ‘রাম তেরি গঙ্গা মৈলী’-তে বলিউডে ইনিংস শুরু করেছিলেন রাজীব কপূর। কিন্তু বাকি দু’ ভাইয়ের মতো ভাগ্য তাঁর প্রতি সুপ্রসন্ন ছিল না। ইন্ডাস্ট্রিতে সাফল্য অধরাই থেকে গিয়েছ রাজ কপূরের ছোট ছেলের কাছে।
অতীত তারকা রাজ কুমারের ছেলে পুরু রাজকুমার ১৯৯৬ সালে প্রথম অভিনয় করেন ‘বালব্রহ্মচারী’ ছবিতে। তিন বছর পরে ফিরে আসেন নেগেটিভ ভূমিকায় অভিনয়ে। কিন্তু সাফল্যের স্বাদ থেকে যায় তাঁর নাগালের বাইরেই।
প্রত্যাশা ছিল আমির খানের ভাই ফয়সল খানের কাছেও। কিন্তু তিনি হতাশ করেন। ‘প্যায়ার কা মওসম’, ‘কয়ামত সে কয়ামত তক’ ছবিতে ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। নায়ক হিসেবে ছিলেন ‘মদহোশ’ ছবিতে। কিন্তু বেশিদূর এগোয়নি তাঁর দৌড়। শোনা যায়, তিনি নাকি মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অভিনেত্রী কিরণ খেরের প্রথম পক্ষের সন্তান সিকন্দরের অভিনয়ের প্রশংসা হয়েছিল তাঁর প্রথম ছবি ‘উডস্টক ভিলা’ ছবিতে। আরও পাঁচটি ছবিতে কাজ করেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনওটাই দাগ কাটতে পারেনি দর্শকমনে।
লব সিংহর পরিচয় এখনও শত্রুঘ্ন সিংহর ছেলে এবং সোনাক্ষী সিংহের ভাই হিসেবে। দু’টি ছবিতে গত ন’ বছরে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু এগোতে পারেননি সমসাময়িক প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায়।
শেখর সুমনের ছেলে অধ্যয়ন অভিনয় করেছেন মোট আটটি ছবিতে। কিন্তু এখনও নিজের জায়গা করতে পারেননি ইন্ডাস্ট্রিতে।
মনোজকুমারের ছেলে কুণাল গোস্বামী প্রথম অভিনয় শুরু করেন শৈশবেই। তাঁর বাবার ছবি ‘ক্রান্তি’ দিয়ে। এরপর আরও অন্তত দশটি ছবিতে অভিনয় করেছেন কুণাল। কিন্তু তাঁকে বা তাঁর অভিনীত ছবিগুলো, কোনওটাই আজ মনে নেই দর্শকদের। ইন্ডাস্ট্রিকে বিদায় জানিয়ে কুণাল এখন সফল ব্যবসায়ী।