গত চার বছর ধরে থমকে পরিচালক হৃষিকেশ মণ্ডলের ‘মুখ্যমন্ত্রীর জুতো চোর’ ছবির কাজ। তিনি জানালেন ইম্পা-র সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত পইপই নিষেধ করেছিলেন, ‘‘এই ছবি করিস না! পেশাজীবনে ঝড় উঠবে।’’ সংগঠন ছবির বিষয় এবং নামকরণেও তাই ছাড়পত্র দেয়নি। ২৪ জুলাই নতুন করে পরিচালকের সেই পুরনো ইচ্ছে ফের মাথাচাড়া দিয়েছে। রাণু মণ্ডলের জীবনী ছবির পরিচালকের মতে, চার বছর ধরে থমকে থাকা ছবিকে বাস্তবায়িত করতে নতুন করে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বঙ্গভূষণ, বঙ্গবিভূষণ সম্মান দিতে গিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি নিজে কোনও পারিশ্রমিক নিই না। আমি যা করি নিজের টাকায়। আমি খেটে উপার্জন করি। আমি বই লিখি, গানে সুর দিই।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই কথায় আপ্লুত পরিচালক। আনন্দবাজার অনলাইনকে হৃষিকেশ বলেছেন, ‘‘এই ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দ্বায়িত্ব আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দিতে চাই। পরিবর্তে আমার ক্ষমতা অনুযায়ী সাম্মানিক দেব। সেই সাম্মানিক মুখ্যমন্ত্রীর কাজে লাগলে জীবন সার্থক।’’ ছবিতে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় কে অভিনয় করবেন? জবাবে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ। পরিচালকের ইচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিসেবে পর্দায় তিনি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখতে চান! বাকি চরিত্রাভিনেতাদের কথা এখনও ভাবেননি।
ইম্পা কেন ছবিকে ছাড়পত্র দিল না? ছবিতে কী দেখাতে চলেছেন পরিচালক? জানতে চেয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। হৃষিকেশ জানিয়েছেন, তাঁর গল্পে, আচমকাই মুখ্যমন্ত্রীর জুতো চুরি যাবে। সেই জুতো পাবে রাস্তার এক কাগজকুড়ানি। জুতোজোড়া বিক্রি না করে নিজের কাছেই রেখে দেয় সে। ক্রমশ যার জোরে সে হয়ে ওঠে প্রভাবশালী। এ দিকে ছবিতে মুখ্যমন্ত্রী ধরে নেন বিরোধী পক্ষই তাঁর জুতো চুরি করেছে! তার পর? উত্তর থাকবে ছবিতে।
ছবির প্রথম পোস্টারও তৈরি। পোস্টারে যেমন আছে নীল-সাদা হাওয়াই চপ্পল আর দার্জিলিং— তেমনি আছে নবান্নও। কিচ্ছু বাদ রাখেননি হৃষিকেশ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত কি তাঁর অনুরোধ পৌঁছতে পারবে? ছবিও তো ছাড়পত্র পায়নি! পরিচালকের যুক্তি, ইম্পা ছাড়পত্র না দিলে তিনি বিএফটিসিসি-র দ্বারস্থ হবেন। প্রয়োজনে রাণু মণ্ডলের জীবনী-ছবির মতোই হিন্দিতে এই ছবি বানাবেন। বলিউড থেকে ছাড়পত্র জোগাড় করবেন। পাশাপাশি, আনুষ্ঠানিক ভাবে ছবির কথা জানাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে দেখা করবেন। ছবির গান লেখার এবং সুর দেওয়ার অনুরোধ জানাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতির জন্য তিনি অপেক্ষা করতেও রাজি, দাবি হৃষিকেশের।