সুপারহিট ‘পরদেশ’-এর পরে মহিমা চৌধুরীর দ্বিতীয় ছবি ছিল ‘দিল ক্যয়া করে’। ১৯৯৯ সালে মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি।
বীরু দেবগণের প্রযোজনায় ছবিটিতে নায়ক-নায়িকার ভূমিকায় ছিলেন অজয় দেবগণ এবং কাজল। এটা ছিল বিয়ের পরে তাঁদের একসঙ্গে প্রথম ছবি।
বেঙ্গালুরুতে শ্যুটিং চলাকালীন ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়েন মহিমা। ট্রাকের সঙ্গে তাঁর গাড়ির সংঘর্ষে তিনি গুরুতর আহত হন। একাধিক স্টিচ পড়ে তাঁদের শরীরে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মহিমা জানান, অস্ত্রোপচার করে তাঁর দেহ থেকে মোট ৬৭টি কাচের টুকরো বার করা হয়েছিল। সে সময় তিনি নিজের চেহারা আয়নায় দেখতেও ভয় পেতেন।
দুর্ঘটনার ফলে মহিমার আত্মবিশ্বাস ভেঙে পড়েছিল। তবে কিছু দিন পরেই তিনি শ্যুটিংয়ে ফিরে আসেন। তবে তখনও নিজের চেহারা নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন তিনি। সে সময় তাঁর পাশে ছিলেন অজয় দেবগণ।
জীবনের এই পর্বে বহু সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন। আসল কারণ কাউকে বলেননি। গোপন করে গিয়েছিলেন দুর্ঘটনার কথা।
ছবির অফার না নিয়ে মহিমা সে সময় ফোটোশ্যুট বেশি করতেন। কিন্তু সেখানেও নিজের চেহারার জন্য আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগতেন।
সে সময় অক্ষয়কুমার তাঁকে ‘ধড়কন’ ছবিতে ছোট ক্যামিয়ো ভূমিকায় অভিনয়ের সুয়োগ দিয়েছিলেন। বড় ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য মহিমাও খুব বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না।
পরে তিনি আবার নায়িকার ভূমিকায় ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু নানা কারণে তাঁর কেরিয়ার বলিউডে দীর্ঘ হয়নি।
২০১৬ সালে ‘ডার্ক চকোলেট’ ছবির পরে মহিমাকে আর কোনও ছবিতে আর দেখা যায়নি।
২০০৪ সালে লিয়েন্ডার-মহিমা সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শোনা যায়। কিন্তু ২০০৬ সাল নাগাদ সে সম্পর্ক ভেঙে যায়। মহিমার অভিযোগ ছিল, তাঁকে লুকিয়ে সঞ্জয় দত্তের প্রাক্তন স্ত্রী রিয়া পিল্লাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন লিয়েন্ডার। যা মহিমা মেনে নিতে পারেননি।
যদিও লিয়েন্ডার কোনও দিন এই সম্পর্কের কথা স্বীকার করেননি। তাঁর কথায়, মহিমা শুধু তাঁর ভাল বন্ধু ছিলেন মাত্র। ২০০৬ সালে মহিমা বিয়ে করেন আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার তথা ব্যবসায়ী ববি মুখোপাধ্যায়কে। তাঁদের একমাত্র মেয়ের নাম আরিয়ানা। ২০১৩ সালে ভেঙে যায় তাঁদের বিয়ে।
মা হওয়ার পরে মহিমা সিনেমায় অভিনয় করা প্রায় ছেড়েই দেন। মেয়েকে সময় দেওয়াই তাঁর মূল লক্ষ্য হয়ে ওঠে। তাই ছবিতে সুযোগ পেয়েও তিনি বেছে নেন টিভি শো। কারণ তাঁর সময় প্রয়োজন ছিল।
এই সিদ্ধান্ত কেরিয়ারের ক্ষতি করলেও তা নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই মহিমার। কারণ তিনি জানিয়েছেন, মেয়েকে বড় করার সময়টা তিনি উপভোগ করেছিলেন।
নিজের দুর্ঘটনার কথাও সযত্নে গোপন করে রেখেছিলেন। ২১ বছর পরে, ২০২০ সালে তিনি জানান নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার স্মৃতি।