নির্বিঘ্নে এতগুলো পর্ব পেরোনোর উদযাপন শুরু হয়ে গিয়েছে বুধবার রাত থেকেই।
তিন বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম। বৃহস্পতিবার, কালীপুজোর দিনে ৭০০ পর্ব ছুঁয়ে ফেলল ধারাবাহিক ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’। প্রযোজনায় সুরিন্দর ফিল্মস। সারা দিন শ্যুটের ব্যস্ততা আছেই। স্টার জলসায় রাত ১০টা থেকে এক ঘণ্টার বিশেষ পর্ব দেখানো হবে। আর হবে তারা মায়ের পুজো। কৌশিকী অমাবস্যার মতোই। তবে নির্বিঘ্নে এতগুলো পর্ব পেরোনোর উদযাপন শুরু হয়ে গিয়েছে বুধবার রাত থেকেই।
কী ভাবে? সাধক বামদেব ওরফে সব্যসাচী চৌধুরী ফেসবুকে একটি ভিডিয়োয় দেখিয়েছেন ধারাবাহিকের সেট থেকে শ্যুটের খুঁটিনাটি। তাঁর হাত ধরেই অনুরাগীরা পৌঁছে গিয়েছেন গর্ভগৃহে। বামাখ্যাপার সময়ে সেই গর্ভগৃহের গায়ে ছিল পোড়ামাটির সূক্ষ্ম কারুকাজ। সেই কাজই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সেটে। অধিষ্ঠাত্রী দেবী তারা মা বা বড় মা। সব্যসাচীর দাবি, সেটের সকলেই বিশ্বাস করেন, তৈরি করা এই গর্ভগৃহে সত্যিই অবস্থান করেন দেবী।
ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে দরমার বেড়ায় তৈরি বামার ঘর। মেঝেয় খড়-বিচালির শয্যা। তার উপরেই চাদর পেতে শুতে যান সাধক। প্রচার ঝলকের পাশাপাশি সব্যসাচী লিখেছেন তাঁর মতামতও — ‘কালী পুজোর দিনেই আমরা ৭০০ পর্ব শেষ করলাম। এবং তা করতে আমাদের লাগল দুই বছর নয় মাস। এই দীর্ঘ সময়ে নানা অনিশ্চয়তা এসেছে। বাধা বিপত্তিও। অসুস্থতা গ্রাস করেছে। অতিমারির প্রকোপে লকডাউন হয়েছে। তবু সব বাধা পার করে ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ এই মুহূর্তে স্টার জলসার প্রবীণতম ধারাবাহিক।’
আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলেছিল পরিচালক শুভেন্দু চক্রবর্তীর সঙ্গেও। তাঁর কথায়, সারা দিন শ্যুট হবে। পুজো হবে। সন্ধেয় কেক কেটে উদযাপন হবে। ‘‘কেকের গায়ে দেবী মায়ের ছবি থাকলে সেই অংশে ছুরি পড়বে না’’, দাবি শুভেন্দুর। আগামী পর্বে কী চমক রয়েছে? শুভেন্দু জানিয়েছেন, ভাইয়ের হাতে ভাই খুন হবেন! এর বেশি কিছু বলতে নারাজ তিনি।
ধারাবাহিক স্মৃতি উদযাপন করতে গিয়ে পরিচালক ভাগ করে নিলেন নানা বিশেষ মুহূর্ত। শুভেন্দু খেয়াল করেছেন, সেটে তৈরি গর্ভগৃহে প্রবেশ করলেই দলের সকলে যেন অন্য মানুষ! পরিচালকের দাবি, তিনি নিজেও এক দৈবী অনুভূতি টের পান। কত সময়ে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। শ্যুটের সময় আপনা থেকে বৃষ্টি বন্ধ! দিন ঝলমলে। শ্যুট শেষ হতেই আকাশ যেন ভেঙে পড়েছে।
একই ভাবে অলৌকিক আবহ বামদেবের পঞ্চমুণ্ডির আসন ঘিরেও। পরিচালক বলেছেন, ‘‘শ্যুটের অবসরে কেউ মেঝেয় বসেন। কেউ বসেন বাইরে রাখা চেয়ার বা বেঞ্চে। ভুলেও কেউ বামার পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসেন না!’’ তাঁর যুক্তি, ওই আসনটিও সেটে তৈরি। কিন্তু সেটিকে ঘিরেও অদ্ভুত অনুভূতি সকলের। প্রত্যেকে মনে করেন, ওতে বসার অধিকার এক মাত্র সাধকের। অন্য কেউ বসলেই সে বৈদ্যুতিক শক খাবে।