মাধুরী দীক্ষিত নিজেই ইন্ডাস্ট্রিতে একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এমনও দিন ছিল যখন মাধুরীকে দরজায় দরজায় ঘুরতে হয়েছে একটা সুযোগের জন্য।
এক বার তো সানি দেওলের সঙ্গে অভিনয় করবেন বলে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সানির সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করবেন বলে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি মাধুরী।
কেরিয়ারের শুরুতে মাধুরীকে বেশিরভাগ সময়েই সহ-নায়িকা বা পার্শ্বনায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করতে হত।
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য ‘দয়াবান’ ছবিতে তো তাঁকে বিনোদ খন্নার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করতে হয়েছিল। পরে এই নিয়ে আক্ষেপও করেছিলেন মাধুরী।
কেরিয়ার শুরুর সময়ে মাধুরীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল রাকেশ নাথের। সে সময় রাকেশ ছিলেন অনিল কপূরের ম্যানেজার। রাকেশের দায়িত্ব ছিল মাধুরী যাতে ভাল ছবিতে সুযোগ পান, সেদিকে খেয়াল রাখা।
প্রথম সারির নায়কদের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ, তারকাখচিত ছবিতেও ভাল ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ—এ সব মাধুরীর জন্য নিশ্চিত করাই ছিল রাকেশের মূল কাজ।
সে সময় গুলশন রাইয়ের ছেলে প্রযোজক রাজীব রাই একটি ছবি করছিলেন। ছবিতে নায়ক ছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ, সানি দেওল এবং জ্যাকি শ্রফ। নায়িকার ভূমিকায় সুযোগ পেয়েছিলেন সঙ্গীতা বিজলানি এবং সোনম।
ছবিতে নেওয়া হয় মাধুরীকেও। রাকেশ প্রযোজককে বলেছিলেন মাধুরীকে নিতে হলে নায়িকাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দিতে হবে। প্রথমে মাধুরীকে নাসিরুদ্দিন শাহের বিপরীতে সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু রাকেশ এই জুটিতে খুশি ছিলেন না।
কারণ বাণিজ্যিক ছবির তুলনায় নাসিরুদ্দিন অনেক বেশি জনপ্রিয় ছিলেন সমান্তরাল ছবিতে। তাঁর পরিবর্তে সানি দেওলকে নায়ক হিসেবে মাধুরীর বিপরীতে চেয়েছিলেন রাকেশ।
রাকেশের বহু অনুরোধে অবশেষে রাজি হন প্রযোজক। ১৯৮৯ সালে ‘ত্রিদেব’ ছবিতে সানির বিপরীতে নায়িকা হন মাধুরী। তবে যত দিনে ‘ত্রিদেব’-এর শ্যুটিং শুরু হয়েছিল, তত দিনে ছবিটা বেশ পাল্টে গিয়েছিল।
১৯৮৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘তেজাব’। বক্সঅফিসে এই ছবির সাফল্যের জেরে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল মাধুরীর জনপ্রিয়তার পারদ। তার প্রভাব পড়েছিল ‘ত্রিদেব’ ছবির শ্যুটিং-এও। ছবির স্বার্থেই প্রযোজকরা মাধুরীর দৃশ্য বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
‘ত্রিদেব’-এর ‘ওয়ে ওয়ে’ গানে প্রথমে তিন নায়িকার মধ্যে মাধুরীকে এক কোণে রাখার কথা হয়েছিল। পরে তাঁকেই মাঝখানে রাখা হয়। দু’পাশে থাকেন সঙ্গীতা এবং সোনম।
সানি দেওলের সঙ্গে ‘ম্যায়ঁ তেরি মহাব্বত মেঁ’ গানের দৃশ্যে মাধুরীর অভিনয়ও নজর কেড়েছিল দর্শকদের।
‘ত্রিদেব’-এর মুক্তির আগে মাধুরীর ‘রাম লক্ষ্মণ’, ‘প্রেম প্রতিজ্ঞা’-র মতো বক্স অফিস সফল ছবিগুলিও হলে চলে এসেছিল। ফলে বলিউডে মাধুরীর অবস্থান পাল্টে গিয়েছিল।
এক সময় সুযোগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকা মাধুরী এ বার নিজেই সুযোগ প্রত্যাখ্যান করে লাগলেন। নবাগতা মাধুরী ধীরে ধীরে পৌঁছে গেলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে।