বুধবার নীল ষষ্ঠী। শিব আরাধনার আগের দিন রুদ্র এবং নীলকে ভাগ করে মদনবাণ, ‘বিজেপি-তে উপোস করে হয়েছ শুকনো বিল!’ আরও দাবি, ‘জল তোমার শুকিয়ে গেছে রসও রসাতলে, কী যে কষ্ট কী যে দুঃখ তোমার দাড়ি-ই কথা বলে।’ অর্থাৎ, কাজ না পাওয়ার কারণ বিজেপি-তে যোগদান— এ কথাই কি ঘুরিয়ে স্পষ্ট করে দিলেন মদন?
রুদ্রনীল ঘোষ এবং মদন মিত্র
অনুমাধবের পাল্টা কি নীলমাধব? মদন মিত্রের সদ্য ভাগ করে নেওয়া কবিতা যে সে দিকেই ইঙ্গিত করছে!
তবে জমে গিয়েছে কবির লড়াই। সরগরম রাজ্য রাজনীতিও। রুদ্রনীল ঘোষের ‘অনুমাধব’ কবিতার সুর, ছন্দ, ভঙ্গিতেই লেখা বিধায়কের ‘নীলমাধবের আর্তনাদ’ কবিতা। প্রতিটি পংক্তি, ছত্রে ছত্রে ব্যঙ্গ। শুধু কটাক্ষের পাত্র বদলে গিয়েছেন। গুঞ্জন, এর আগের দিন ‘অনুমাধব’ কবিতায় নাকি অনুব্রত মণ্ডল পটভূমিকায় ছিলেন। ‘নীলমাধব’ কবিতায় রুদ্রনীলকে বিঁধেছেন বিধায়ক।
বুধবার নীল ষষ্ঠী। শিব আরাধনার আগের দিন রুদ্র এবং নীলকে ভাগ করে মদনবাণ, ‘বিজেপি-তে উপোস করে হয়েছ শুকনো বিল!’ আরও দাবি, ‘জল তোমার শুকিয়ে গেছে রসও রসাতলে, কী যে কষ্ট কী যে দুঃখ তোমার দাড়ি-ই কথা বলে।’ অর্থাৎ, কাজ না পাওয়ার কারণ বিজেপি-তে যোগদান— এ কথাই কি ঘুরিয়ে স্পষ্ট করে দিলেন মদন?
মাঝে শোনা যাচ্ছিল, বিজেপি-ও নাকি ছাড়তে চলেছেন রুদ্রনীল। রাজনীতিতে আর থাকবেনই না। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়ে কাজ পাচ্ছেন না তিনি। ইতিমধ্যেই তাঁর রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলেই যোগদান সারা। এ বার কি শুধুই অভিনয় নিয়ে থাকবেন? প্রশ্ন ওঠার আগেই অভিনেতার ‘অনুমাধব’ কবিতা ফের বিস্ময় তৈরি করে দিয়েছে সবার মনে। যেখানে চড়াম চড়াম ঢাকের বাদ্যি, গুড়-বাতাসা, নকুলদানা থেকে শুরু করে সিবিআই, অনুব্রতর অসুস্থতা, বিশাল ভুঁড়ি নিয়ে কটাক্ষ— সবই ছিল।
মদন মিত্রও সোজাসুজি গেরুয়া শিবির নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তাঁকে। রুদ্রনীল তা হলে কোন দলে? রাজনীতিতে কি এখনও আছেন? তিনি কি পড়েছেন বিধায়কের লেখা কবিতা? আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। ডাবিংয়ের ফাঁকে অভিনেতা-রাজনীতিকের জবাব, ‘‘ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়েছিল, আমি বিজেপি ছেড়ে দিচ্ছি। কারণ, আমি বিরোধী দলের অফিসে সবার সামনে জানিয়েছিলাম ১৪ মাস আমি বেকার। গেরুয়া শিবিরে যোগদানের কারণে। তখনই রটনা ছড়ায় রাজনীতি ছাড়ছি।’’
তাঁর আরও দাবি, তিনি যে দলে ছিলেন সেই দলেই আছেন। তার প্রমাণ তাঁর লেখা কবিতা। তিনি মদন মিত্রের কবিতা পড়েছেন। এও বুঝেছেন, তাঁর বলা সত্যভাষণ বাংলার মানুষের মনে ধরেছে। তাই তাঁকে থামাতে ব্রিগেড নামাতে হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। রুদ্রনীলের ফের ব্যঙ্গ, ‘‘উপার্জন কেড়েছেন। নির্বাচনের সময় মারধরও করেছেন। এ বার কবিতা দিয়ে পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা। তবে ভাল লাগছে পেট্রল বোমার বদলে কবিতা ছুড়ছে শাসকদলের বাহিনী।’’ তিনি আরও খুশি হবেন, তাঁদের কবিতাতেও যদি একই মানের শব্দ, ভাষা এবং ছন্দ ব্যবহৃত হয়।
তার পরেই খোদ মদন মিত্রকে কটাক্ষ রুদ্রনীলের, ‘‘এটা কবিতা না সাহিত্য না শিল্প না অন্য কিছু? সেটা বাংলার শিক্ষিত মানুষেরা বিচার করবেন। উনি বয়সে বড়। তাই আমি হাসব না।’’