পার্নো ও শুভশ্রী
পুরোদস্তুর কমার্শিয়াল ছবির ঘরানা থেকে সরে এসে কনটেম্পোরারি গল্প বলতেই ইদানীং পছন্দ করছেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। তাঁর আগামী ছবি ‘ধর্মযুদ্ধ’ও সমসময়ের কথা বলবে। দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে মানবিকতার কাহিনি নিয়ে এই ছবি।
মুখ্য চরিত্র মুন্নির ভূমিকায় আরও একবার ডি-গ্ল্যাম লুকে দেখা যাবে শুভশ্রীকে। আগের ছবি ‘পরিণীতা’য় তাঁর লুক এবং অভিনয়, দুই-ই দর্শক ও সমালোচকের প্রশংসা কুড়িয়েছিল। পরপর এমন লুক বেছে নেওয়া কি সচেতন ভাবেই? জবাবে নায়িকা বললেন, ‘‘অভিনেত্রী হিসেবে যত চ্যালেঞ্জ আসে, ততই কাজের মজা পাওয়া যায়। মেহুলের (পরিণীতা) পরে সম্পূর্ণ অন্য ধরনের একটা কাজ করতে চেয়েছিলাম। তখনই মুন্নির চরিত্রটা পাই। একেবারে ঘরোয়া, মফস্সলের একটি মেয়ে সে। যার স্বামী অটো চালায়।’’ ছবিতে মুন্নির স্বামীর চরিত্রে দেখা যাবে সপ্তর্ষি মৌলিককে। ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ সপ্তর্ষির লুক নিয়েও এক্সপেরিমেন্ট করেছেন রাজ। শুটিংয়ের আগে তাঁকে অটো চালানো শিখতে হয়েছিল। ‘ধর্মযুদ্ধ’র অন্য মুখ্য চরিত্রে দেখা যাবে পার্নো মিত্র, ঋত্বিক চক্রবর্তী, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত এবং সোহমকে।
ছবির সব ক’টি চরিত্রই ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে আসা। তাদের নিজস্ব কাহিনি, সামাজিক অবস্থান, বাচনভঙ্গিও পৃথক। গ্রামে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়লে সকলেই এক জায়গায় এসে আশ্রয় খোঁজে। ভাই যখন ভাইয়ের শত্রু হয়ে দাঁড়ায়, তখন টিকে থাকার লড়াইয়ে শামিল হয় সকলে। আর তাদের বুক দিয়ে আগলে রাখে এক মা। সেই চরিত্রেই রয়েছেন স্বাতীলেখা। শবনমের চরিত্রে দেখা যাবে পার্নোকে।
তবে এখনই সব ক’টি চরিত্র সম্পর্কে বিশদে ভাঙতে চাইলেন না পরিচালক। আগামিকাল শুভশ্রীর জন্মদিন। তাই সে দিনের জন্যও কিছুটা চমক বাকি রেখে দিয়েছেন পরিচালক।
‘ধর্মযুদ্ধ’র গল্প পদ্মনাভ দাশগুপ্ত এবং রাজের। চিত্রনাট্য লিখেছেন পদ্মনাভই। ক্যামেরায় সৌমিক হালদার। ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। রাজ এবং শুভশ্রী, দু’জনেই যেখানে বাণিজ্যিক ছবির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে ছিলেন প্রথম থেকে, তাঁরাই এখন বেছে নিচ্ছেন অন্য ধারার গল্প। রাজের ট্রিটমেন্টেও এসেছে বদল। এ প্রসঙ্গে পরিচালকের বক্তব্য, ‘‘এখন কনটেন্ট-ভিত্তিক কাজের সমাদর অনেক বেশি। এবং সেই কনটেন্টের দাবি মেনে অভিনেতা-পরিচালক চলতে পারলে, তবেই দর্শক তাঁদের গ্রহণ করছেন। এই ছবিতে তাবড় অভিনেতারা রয়েছেন। কাহিনিটাও এখনকার সময়ের জন্য উপযুক্ত।’’
কলকাতা ছাড়া পুরুলিয়ার একটি বড় অংশ জুড়ে শুটিং হয়েছে ‘ধর্মযুদ্ধ’র। সেখানকার রুক্ষ জমির ‘রাফ ফিল’ পাওয়া যাবে ছবিতেও, জানালেন পরিচালক। এমনিতে আউটডোর হিসেবে পুরুলিয়া রাজের অন্যতম প্রিয় জায়গা। শুটিং শেষ হয়ে গেলেও ডাবিং ও পোস্ট প্রোডাকশনের বিভিন্ন কাজ এখনও বাকি। তাই আগামী বছর মার্চ মাসে ছবি মুক্তির পরিকল্পনা করেছেন নির্মাতারা।