—প্রতীকী চিত্র।
সময়ের সঙ্গে কত কী-ই না বদলে যায়। এখন যে প্রিয়, কাল যে সে-ই পর হয়ে যাবে না, তা হলপ করে বলা যায় না। সাধারণ মানুষ থেকে সিনেপাড়ার তারকা— প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই কিন্তু এই ভাবনা প্রযোজ্য। ধরুন, এই বছর দুর্গাপুজোয় কারও সঙ্গে চার দিনই ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। পরের বছরও যে সেই মানুষটার মুখই পুজোয় দেখতে চাইবেন, তার কিন্তু কোনও নিশ্চয়তা নেই। অন্তত স্টুডিয়োপাড়ায় নায়ক-নায়িকাদের সম্পর্কের ভাঙাগড়া দেখে তা আরও স্পষ্ট হয়। এই যেমন গত বছর পুজোয় টলিপাড়ার অনেক জুটিকেই দেখা গিয়েছিল হাতে হাত ধরে ঘুরতে, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে একসঙ্গে উদ্বোধন করতে, সিঁদুর খেলায় মেতে উঠতে। আর এ বছর? সে সব যেন শুধুই স্মৃতি! এমন তিন জুটি ভাঙার খবর এখনও টাটকা দর্শকের স্মৃতিতে। তবে এই তিন জুটি ছাড়া, আরও কত যে সম্পর্ক গড়ছে-ভাঙছে, তা কান পাতলে স্টুডিয়োপাড়ায় শোনা যায় বইকি। টলিপাড়ার কোন কোন জুটিকে এ বছর পুজোয় আর একসঙ্গে দেখা যাবে না?
স্বস্তিকা-শোভন।
শোভন-স্বস্তিকা
ইনস্টাগ্রামের ছোট্ট একটি পোস্ট থেকে আলোচনা শুরু হয় স্বস্তিকা দত্ত এবং শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পর্ক নিয়ে। তার পর কখনও নিউ টাউনের লেকের ধারে, কখনও আবার বালি ব্রিজে (বিবেকানন্দ সেতু) গঙ্গার পাশে ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তাঁরা। গত বছরের দুর্গাপুজোয় বন্ধুদের বাড়ি একসঙ্গে আড্ডা দিতেও দেখা গিয়েছিল তাঁদের। শোভনের বেলুড়ের বাড়িতে অনেক সময়ই আসতেন স্বস্তিকা। তার পর আচমকাই শোনা গেল ‘প্রেম পালিয়ে যায়’। আর একসঙ্গে নেই নায়িকা এবং গায়ক। যদিও প্রেম ভাঙা নিয়ে এক বারেরও জন্যও কিছু বলেননি শোভন। কিন্তু চুপ ছিলেন না স্বস্তিকা। তিনি সকলের সামনেই স্বীকার করেন, গায়ক শোভনের সঙ্গে তিনি আর কোনও সম্পর্কে নেই।
রণজয়-সোহিনী।
রণজয়-সোহিনী
তাঁদের প্রেম এক বার ভাঙে, আবার তার কিছু দিন পরেই জোড়া লেগে যায়। এত দিন ভাঙা-গড়ার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছিল রণজয় বিষ্ণু এবং সোহিনী সরকারের সম্পর্ক। পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটু মুড়ে বসে সোহিনীকে প্রেম-প্রস্তাব দেওয়া ছবির সাক্ষী ছিলেন অনুরাগীরা। কিন্তু সেই প্রেম খানিকটা নিস্তব্ধেই ভেঙে গেল। মাঝে লিভ ইন (একত্রবাস) সম্পর্কেও ছিলেন তাঁরা। একসঙ্গে পাহাড়, সমুদ্র কত জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। তবে প্রেম গড়ার খবর যেমন হাবেভাবে বুঝিয়েছিলেন তাঁরা, তেমনই প্রেম ভাঙার কথাও স্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন নায়ক-নায়িকা। সোহিনী স্পষ্ট ‘ব্রেক আপ’ নিয়ে কথাও বলেছেন। যদিও রণজয় বার বারই এড়িয়ে গিয়েছেন প্রেমের প্রসঙ্গ। এ বছরের পুজোয় তো শহরে থাকারই ইচ্ছা নেই তাঁর। আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়ে ছিলেন, শহরের কোলাহল থেকে দূরে থাকতে চান। নেপথ্যে কি প্রেম ভাঙা? তা অবশ্য খোলসা করতে চাননি নায়ক।
জীতু-নবনীতা।
জীতু-নবনীতা
সিরিয়ালের ফ্লোরেই প্রেমের শুরু জীতু কমল এবং নবনীতা দাসের। দু’জনের মধ্যে বয়সের ফারাক বিস্তর। তাই নায়িকাকে ‘বাচ্চা বৌ’ নাম দিয়েছিলেন জীতু। কিন্তু ‘বাচ্চা বৌ’ যে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন, সেই ধারণা নাকি নায়কের ছিল না। দু’মাস আগে নবনীতা ফেসবুকে ঘোষণা করেন, তাঁদের আইনিবিচ্ছেদের কথা। যদিও এই সিদ্ধান্তে নায়িকা আদৌ খুশি কি না, বোঝা যাচ্ছে না। কারণ,আনন্দবাজার অনলাইনকে নিজের আক্ষেপের কথা জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। তিনি বলেছিলেন, “মন খারাপ হবে, এ বছর আর জীতুর সঙ্গে সিঁদুর খেলা হবে না।” যদিও বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি জীতু। উল্টে বলেছেন, “আমি আমার স্ত্রী সম্পর্কে কোনও সমালোচনা শুনব না, সমালোচনা করবও না।”
শুধুই কি শোভন-স্বস্তিকা, রণজয়-সোহিনী, জীতু-নবনীতা? শোনা যাচ্ছে, এই পুজোয় টলিপাড়ার অন্দরে অনেকের সংসারেই ধরেছে ভাঙন। এক নায়কের স্ত্রী নাকি গিয়েছেন উকিলের বাড়িতেও। যদিও তাঁরা নিজেদের সম্পর্ক ভাঙার ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে দিতে মোটেই রাজি নন। এক পরিচালকের ঘর-সংসার ছেড়ে অন্য নায়িকার প্রেমে পড়েছেন। আবার, অন্য পরিচালকের স্ত্রী তাঁর বদমেজাজে বিরক্ত হয়ে নাকি তাঁকে ঘরছাড়া করেছেন। ঘটছে তো অনেক কিছুই, কিন্তু সবই ‘চুপকে চুপকে’।