প্রয়াত এস পি বালসুব্রহ্মণ্যম, সঙ্গীতজগতে শোকের ছায়া

শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ চেন্নাইয়ের এক হাসপাতালে মারা গেলেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:৫৪
Share:

এস পি বালসুব্রহ্মণ্যম।

সাঙ্গ হল বাহান্ন দিনের নিরন্তর যুদ্ধ। প্রয়াত হলেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী এস পি বালসুব্রহ্মণ্যম। শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ চেন্নাইয়ের এক হাসপাতালে মারা গেলেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

Advertisement

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৫ অগস্ট চেন্নাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ওই বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী। এক মাস পর ৮ সেপ্টেম্বর তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে তাঁকে ভেন্টিলেটর থেকে বার করা যায়নি। পরের দিকে তাঁকে ভেন্টিলেটরের পাশাপাশি ‘একমো সাপোর্ট’ (কৃত্রিম উপায়ে বাড়তি অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা) দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

মনে করা হচ্ছিল, তাঁর অবস্থার উন্নতি ঘটছে। গত মঙ্গলবারই শিল্পীর পুত্র এস পি চরণ টুইট করে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবার অবস্থার ক্রমশই উন্নতি হচ্ছে। জানিয়েছিলেন তাঁর বাবা বাড়িও ফিরতে চাইছেন। কিন্তু বুধবার চেন্নাইয়ের হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট মেডিক্যাল ডিরেক্টর অনুরাধা ভাস্করনের সাক্ষরিত বুলেটিনে জানান হয়, ‘২৪ ঘণ্টায় ওঁর অবস্থার অবনতি ঘটেছে। তিনি অত্যন্ত সঙ্কটজনক। তাঁকে সর্বোচ্চ লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে’। এস পি সঙ্কটাপন্ন হওয়ার খবর পেয়েই হাসপাতালে গিয়েছিলেন দক্ষিণী ছবির প্রবীণ অভিনেতা কমল হাসন। দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছিলেন ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মী এবং অজস্র অনুরাগীরা।

Advertisement

কিন্তু শেষরক্ষা হল না। দীর্ঘ লড়াইয়ে অবশেষে আজ হার মানেন তিনি।

১৯৪৬ সালের ৪ জুন মাদ্রাসে (অধুনা চেন্নাই) জন্ম হয় তাঁর। ছোট থেকেই সঙ্গীতের প্রতি ছিল বিশেষ অনুরাগ। ১৯৬৬ সালে 'শ্রী শ্রী মর্যাদা রামান্না' নামে এক তেলুগু ছবির মধ্যে দিয়েই সঙ্গীত জগতে হাতেখড়ি হয় তাঁর। এর পর একে একে নানা হিন্দি, তামিল তেলুগু ছবিতে গান গেয়ে ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির গায়কের তকমা পেয়ে যান এসপি। এক দিনে ২১টি গান রেকর্ড করার রেকর্ড রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। সলমন খানের বলিউডে উত্থান মূলত এসপি'র হাত ধরেই।

আরও পড়ুন- তুলনা হত কিশোর-রাজেশের সঙ্গে, কেন ভেঙে গেল সলমন-বালাসুব্রহ্মণ্যমের জুটি

১৯৮৯ সালে ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ ছবির মাধ্যমে নায়ক হিসেবে বলিউডে আত্মপ্রকাশ সলমনের। ওই ছবিতে সলমনের গলায় সবক’টি গানই বালসুব্রহ্মণ্যমের গাওয়া, যার মধ্যে ‘আতে যাতে’, ‘দিল দিওয়ানা’ এবং ‘মেরে রঙ্গ মে’-র মতো সুপারহিট হয়েছিল। এর পর ১৯৯১ সালেই ‘পাত্থর কে ফুল’ ছবিতে সলমনের হয়ে সাতটি গানে গলা দেন বালসুব্রহ্মণ্যম। এর মধ্যে ‘কভি তু ছালিয়া লগতা হ্যায়’ এবং ‘তুমসে জো দেখতে হি প্যায়ার হুয়া’ গান দু’টি সুপার হিট হয়। ওই বছরই 'সাজন' ছবিতে এসপি'র গলায় গাওয়া ‘বহুত প্যায়ার করতে হ্যায়’, ‘তুমসে মিলনে কি তমন্না হ্যায়’, ‘পহেলি বার মিলে হ্যায়’ আজও শ্রোতাদের মনে ভাস্বর। পড়ে অবশ্যে বিশেষ কারণে ভেঙে গিয়েছিল সলমন-এসপি জুটি।

এস পি বালসুব্রহ্মণ্যমের মৃত্যুতে ইন্ডাস্ট্রিতেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এআর রহমান থেকে অক্ষয় কুমার, লতা মঙ্গেশকর, মহেশ বাবু শোকপ্রকাশ করেছেন প্রিয় গায়কের মৃত্যুতে। ভেঙে পড়েছেন সলমন খানও। এ দিন তিনি টুইটারে লেখেন, " এই খবরে হৃদয় ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। আপনার কাজের মধ্য দিয়েই আপনি বেঁচে থাকবেন। পরিবারের প্রতি সমবেদনা।"

সুস্থ হচ্ছিলেন, হঠাৎই এই খবরে মুষড়ে পড়েছে শিল্পীমহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement