পণ্ডিত জসরাজ। ফাইল চিত্র।
জীবনাবসান ঘটল ভারতীয় মার্গসঙ্গীতের প্রবীণ শিল্পী পণ্ডিত জসরাজের। আমেরিকার নিউ জার্সির বাসভবনে সোমবার সকালে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন মেবাতী ঘরানার এই যশ্বসী শিল্পী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। হিন্দুস্থানি ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীতের পাশাপাশি সেমি-ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীতেও রয়েছে তাঁর স্মরণীয় অবদান। একাধিক চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকাতেও পাওয়া গিয়েছে তাঁকে। তাঁর প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সঙ্গীতজগতের সম্মাননীয় মানুষজন।
১৯৩০ সালের ২৮ জানুয়ারি হরিয়ানার ফতেয়াবাদের পিল মান্দোরি গ্রামে সাঙ্গীতিক পরিবারে জন্ম জসরাজের। বাবা মতিরাম ছিলেন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী। গানবাজনার সঙ্গে জসরাজের পরিচয় বাল্যেই। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত এবং তবলার তালিম। পরে তবলা ছেড়ে পুরোপুরি কণ্ঠসঙ্গীতে মনোনিবেশ এবং একাধিক প্রথিতযশা শিল্পীর কাছে তালিম নেওয়া। মেবাতী ঘরানা ছাড়াও বেশ কিছু অন্য ঘরানার পাঠও নেন তিনি। ১৯৪৬ সালে জসরাজ কলকাতায় চলে আসেন আকাশবাণীতে গান গাওয়ার জন্য। দীর্ঘদিন রেডিওয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর ১৯৫২ সালে তাঁর প্রথম মঞ্চারোহণ ২২ বছর বয়সে নেপালে। এর বছর দশেক পরে তাঁর বিবাহ হয় চলচ্চিত্রকার ভি শান্তারামের কন্যা মধুরা শান্তারামের সঙ্গে। মধুরা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে রামপুর ঘরানার শিল্পী।
আট দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় মার্গ সঙ্গীতের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল প্রবীণ এই শিল্পীর। ‘পদ্মবিভূষণ’, ‘সঙ্গীত-নাটক অকাদেমি’-সহ সরকারি-বেসরকারি বহু সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন জসরাজ। সঙ্গীত পরিবেশনার পাশাপাশি দীর্ঘদিন নিযুক্ত থেকেছেন সঙ্গীত প্রশিক্ষণের সঙ্গেও।
আরও পড়ুন: প্রয়াত ‘দৃশ্যম’, ‘রকি হ্যান্ডসাম’ ছবির পরিচালক নিশিকান্ত কামাট
বাংলার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ছিল জসরাজের। আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্র তো বটেই, এ ছাড়াও নিয়মিত অংশ নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের নামী নানা সঙ্গীত সমারোহে। গত শীতের কলকাতার ডোভার লেন মিউজিক কনফারেন্সেও মঞ্চ মাতিয়েছিলেন অশীতিপর এই শিল্পী।