স্ত্রী সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিষেক চট্টোপাধ্যায়।
আনন্দে চোখে জল সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায়ের। চোখ বাঁধা অবস্থাতেও বুঝতে পেরেছেন, তিনি স্বামী অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের গালেই চুম্বন করেছেন। সে দিন ঘুণাক্ষরেও কি তিনি বুঝেছিলেন, স্বামীকে এটাই তাঁর শেষ আদর? একা সংযুক্তা নন, স্টার জলসার ‘ইসমার্ট জোড়ি’র সেটের কেউই সে দিন বোঝেন, এ দেখাই শেষ দেখা ছিল তাঁদের। ২৩ মার্চের শ্যুট ‘শেষ শ্যুট’ হতে চলেছে অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের জীবনে।
২৪ মার্চ ভোরে চিরবিদায় নিয়েছেন বাংলা রুপোলি পর্দার ‘দেব সেনাপতি’ অভিষেক। দিন কয়েক ধরেই শরীর ভাল যাচ্ছিল না তাঁর। কখনও হাল্কা জ্বর। কখনও খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকে অসুস্থতা। সঙ্গে পায়ে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা তো ছিলই। আনন্দবাজার অনলাইনকে এ কথা জানিয়েছেন ভরত কল। ২৩ মার্চ রিয়্যালিটি শো-তে শ্যুট করতে করতেই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিষেক। তখনও তাঁর সঙ্গী সংযুক্তা। সদ্য সেই শেষ শ্যুটের ঝলক প্রকাশ্যে। কালো পাঞ্জাবিতে রীতিমতো সুপুরুষ ৫৭-র অভিনেতা। কখনও হাঁটু মুড়ে বসে স্ত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছেন। কখনও টেনে নিয়েছেন বুকে। কপালে ভালবেসে এঁকে দিয়েছেন চুমু। আবার কখনও বলেছেন, যত দিন যাবে ততই স্বামীর স্পর্শ আরও বেশি করে বুঝতে পারবেন সংযুক্তা। পাশাপাশি, অভিষেকের গালেও ভালবাসার চিহ্ন এঁকে দিয়েছেন সংযুক্তা।
শো-এর সঞ্চালক অভিষেক-সংযুক্তার প্রেম দেখে মুগ্ধ। তাঁর কথায়, ‘‘দু’বার দাদাকে চুমু খেলে তুমি। এ ভাবেই বেঁধে বেঁধে থেকে কাটিয়ে দিতে হবে আরও ১০ বছর।’’ ২৪ মার্চ জিতের আফশোস, সে দিন তিনি ভাবতেই পারেননি সেটাই ছিল তাঁদের শেষ দেখা! মাত্র দু’টি পর্ব শ্যুট করতে পেরেছেন অভিষেক-সংযুক্তা। সেই দুই পর্ব দেখানো হবে শো-তে।
কী হয়েছিল সেদিন? জিত জানিয়েছেন, সে দিন শুরু থেকেই অভিষেক চনমনে ছিলেন না। ফলে, কিছু ক্ষণ শ্যুটের পরে অনুরোধ জানান, তিনি আর পারছেন না। অসুস্থ বোধ করছেন। সঙ্গে সঙ্গে সেটেই তাঁকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ দেওয়া হয়। তার পরেও অস্বস্তি বাড়ায় অভিষেক ছুটি নিয়ে পা বাড়ান বাড়ির পথে।
শেষ বার কাজে যাওয়ার সময়েও সদ্য প্রয়াত অভিনেতার মুখে স্মিত হাসি। হলুদ গেঞ্জি, কালো ট্রাউজার্সে তিনি উজ্জ্বল তখনও। যাওয়ার আগে নিজের হাতে খাইয়ে দিয়েছেন স্ত্রীকে। হাত নেড়ে জানিয়েছেন, বিদায়! লিফটের দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে ধীরে ধীরে। তখনও হাসিমুখে হাত নেড়েই চলেছেন অভিষেক।