সাত থেকে ১০ দিন ধরে সেই অনুষ্ঠান চলেছিল। সেই অনুষ্ঠানে আমি এক শিল্পীর সঙ্গে সঙ্গত করি। ফলে কাছ থেকে ওঁর ব্যস্ততাটা দেখেছিলাম।
সেটা ১৯৭৭। লতা মঙ্গেশকরের বাবার নামে একটি অনুষ্ঠান হচ্ছে হায়দরাবাদে। সেখানে সংগঠক হিসাবে দেখেছিলাম তাঁকে। নিজেই পৌঁছে যাচ্ছেন বিমানবন্দরে উস্তাদ আলি আকবর খাঁ সাহিবের মতো কোনও শিল্পীকে আনতে। কে কোন হোটেলে রয়েছেন, তা নিজে দেখছেন। চার দিকে নজর। দৌড়ঝাঁপ করছেন। চিন্তা করুন, তত দিনে কিন্তু উনি ‘লতা মঙ্গেশকর’ হয়ে গিয়েছেন। খ্যাতির শীর্ষে। অথচ, কী পরম দক্ষতায় অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন, তা দেখলাম। সাত থেকে ১০ দিন ধরে সেই অনুষ্ঠান চলেছিল। সেই অনুষ্ঠানে আমি এক শিল্পীর সঙ্গে সঙ্গত করি। ফলে কাছ থেকে ওঁর ব্যস্ততাটা দেখেছিলাম। তবে সে বার ওঁর সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ হয়নি। সেই সুযোগ হল বছর পাঁচেক আগে।
সে বারও ওঁর বাবার নামে অনুষ্ঠানে মুম্বই যাই বাজাতে। সে সময় খুব অল্প সময়ের জন্য উনি আসেন অনুষ্ঠানে। তখন উনি হুইলচেয়ার বন্দি। সে বার আমি ওঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। সে কথা অর্গানাইজারদের বলি। দিন দুই পর দেখা করার অনুমতি মেলে। ওঁর বাড়ি যাই। উনি যত্ন করে আমাকে মিষ্টি খেতে দেন। এর পর বলেন, ‘‘তোমার হাত কলকাতার রসগোলার মতো মিষ্টি! পিছনে ফিরে তাকিও না, সামনে এগিয়ে চলো।’’
এত বড় মাপের মানুষকে আমি দু’বার দু’ভাবে দেখার সুযোগ পেয়েছি। আসলে বড় হতে গেলে যে জেদ, অধ্যবসায় থাকতে হয়, তা তিনি দেখিয়ে গিয়েছেন। যে কারণেই হয়তো পরবর্তী প্রজন্মের অনেক শিল্পীর বাড়িতে আজ শোভা পায় ওঁর ছবি। জীবদ্দশায় এই সম্মান ক’জন পায়!