লহমা ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।
প্রথম ছবির নায়ক ছিলেন জিৎ! ‘রাবণ’-এর মতো বাণিজ্যিক ছবি দিয়ে বড় পর্দায় হাতেখড়ি। বছর না ঘুরতেই দ্বিতীয় ছবি চলছে প্রেক্ষাগৃহে। এ বার এক জন নয়, জোড়া নায়ক! তা-ও আবার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং আবীর চট্টোপাধ্যায়ের মতো দু’জন অভিজ্ঞ অভিনেতা। কেমন লাগছে ‘বিয়ে বিভ্রাট’-এর নায়িকা লহমা ভট্টাচার্যের? আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানালেন, তাঁর বন্ধুরা বেশির ভাগই পরমব্রত এবং আবীরের অনুরাগী। তাই ছবিটা নিয়ে তাঁদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তাই তিনি নিজেও ছবি নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলেন।
লহমার টলিউডের যাত্রা তাঁর বয়সি আর পাঁচজন অভিনেত্রীর মতো নয়। তিনি ছোট থেকেই নাচ-গান নিয়ে মেতে থাকতেন বটে, তবে অভিনেত্রী হওয়ার সিদ্ধান্ত পাকাপাকি ভাবে নিতে বেশ খানিকটা সময় নিয়েছেন। পড়াশোনা শেষ করা ছিল তাঁর কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই সে সবের পাট চুকিয়ে তবে কেরিয়ারে মন দিয়েছেন। ‘‘আমি প্রস্তুতি নিতেও অনেকটা সময় নিয়েছিলাম। কোনও কাজ ভাল করে না জেনে শুরু করতে চাইনি। প্রথম ছবির আগে অনেক দিন ওয়ার্কশপ করি। অনেকেই জানেন না, আমি সুদীপ্তাদির (চক্রবর্তী, অভিনেত্রী) প্রথম ছাত্রী ছিলাম। সব প্রস্তুতি নিয়ে তবেই ‘রাবণ’-এ অভিনয়ের কথা ভেবেছি। তবে এখন আমি বুঝেছি, অভিনয় এমন একটা জিনিস, যা যত করব, তত নিখুঁত হবে।’’
‘বিয়ে বিভ্রাট’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত।
বাকিদের তুলনায় দেরি করে কেরিয়ার শুরু করায় কি তা হলে আফসোস রয়েছে লহমার? তা একদমই বলছেন না অভিনেত্রী। ‘‘কারও সঙ্গে নিজের তুলনা করে লাভ নেই। তবে আমার কখনও কখনও নিজের সমসাময়িকদের ভাল কাজ দেখলে খুব অনুপ্রাণিত লাগে। সুরঙ্গনা (বন্দ্যোপাধ্যায়) যেমন আমার বয়সি হলেও আমার অনেক আগে কাজ শুরু করেছে। ‘বল্লভপুরের রূপকথা’য় ওর কাজ আমার দারুণ লেগেছে। এই ধরনের কাজ দেখলে মনে হয়, আমিও যদি এমন কোনও চরিত্র পেতাম। যা নিজেকে ভেঙে, সবটা দিয়ে অভিনয় করার সুযোগ থাকত।’’
লহমার অবশ্য কোনও বিশেষ চরিত্র বা বিশেষ ধরনের ছবি নিয়ে বাছবিচার নেই। তিনি চান, ইন্ডাস্ট্রির সব পরিচালকের সঙ্গেই কাজ করতে। যাতে তাঁদের থেকে কিছু না কিছু শিখতে পারেন। ‘‘বিয়ে বিভ্রাট’-এ রাজাদার (চন্দ, পরিচালক) সঙ্গে অনেকটা সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। তাই অনেক কিছু শিখলাম। কোনও পরিচালকের ছবি ভাল লাগতে আমি দেখাই হলেই সে কথা জানাই। তাঁদের সঙ্গে যে কাজ করার ইচ্ছা, সেটাও বলার চেষ্টা করি। কিন্তু আমি আসলে একটু লাজুক প্রকৃতির। সোজাসুজি কাজ চাইতে একটু হলেও বাধে। তবে এখন বুঝি যে, আমার ব্যক্তিত্ব যেমনই হোক, আমায় এগুলো করতে হবে। কারণ অভিনেত্রী হিসাবে এগুলোও আমার কাজের মধ্যেই পড়ে।’’
‘বিয়ে বিভ্রাট’ ত্রিকোণ প্রেমের ছবি হলেও গতে বাঁধা পথে হাঁটেনি। নির্মাতারা হাসিঠাট্টার মোড়কেই একটি যুগোপযোগী গল্প বলত চেয়েছেন। দর্শকও ছবিতে আবীর-পরমের রসায়নের পাশাপাশি লহমার মতো নতুন মুখের তারিফ করেছেন। তা হলে এর পর কেমন ছবি করতে চান লহমা? ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে খুব বেশি তাড়াহুড়ো করে করতে চান না তিনি। অবসর সময় অনেক ধরনের সিনেমা দেখেন কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে কফি খেতে যান। সময় পেলে নিজের প্রথম ছবি দেখেন বহু বার করে। নিজের খুঁতগুলো বোঝার চেষ্টা করেন। কেরিয়ার মজবুত করতে কোনও রকমই খামতি তিনি রাখতে চান না। নানা ধরনের ছবি দিয়ে সাজিয়ে ফেলতে চান নিজের ফিল্মোগ্রাফি।