আমির খান অভিনীত আশুতোষ গোয়ারিকরের ছবি ‘লগান’ ইতিহাস রচনা করেছিল। ভারতের এক প্রত্যন্ত গ্রামকে করমুক্ত করার জন্য ব্রিটিশদের সঙ্গে টানটান ক্রিকেট ম্যাচ ঘিরেই এগিয়ে চলেছিল ছবিটি। ২০ বছর পরও এই ছবি আমাদের হৃদয়ে বিরাজমান।
২০০২ সালে অস্কারের জন্য সবচেয়ে ভাল বিদেশি ছবি বিভাগে মনোনীতও হয়েছিল ‘লগান’। ২০ বছর আগে এ ছবির জন্য আমির খানেরা কত পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন জানেন?
ছবির মুখ্য চরিত্র ভুবন হয়েছিলেন আমির খান। গ্রামের লোকেদের এক করে ক্রিকেট দল বানিয়েছিলেন ভুবন। ব্রিটিশদের সঙ্গে বাজি লড়ে কর মকুব করেছিলেন। সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক ছিল আমিরেরই। ৩৫ লাখ টাকা নিয়েছিলেন তিনি।
এখনও অভিনয় করেন ভরতনাট্যম এবং ওডিশি নৃত্যশিল্পী গ্রেসি সিংহ ওরফে ‘লগান’-এর গৌরী। হিন্দি, মরাঠি, কন্নড়, তামিল-এর পাশাপাশি ২০১৩ সালে ‘সমাধি’ নামে একটি বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি। ‘লগান’ ছবিতে তাঁর পারিশ্রমিক ছিল ৮ লাখ।
লাখা হয়েছিলেন যশপাল শর্মা। এই লাখার বিশ্বাসঘাতকতার জন্য প্রথম দিকে খেলায় হাড়তে বসেছিলেন গ্রামবাসীরা। হরিয়ানার মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্ম যশপালের। বাবা হরিয়ানার সেচ দফতরের কর্মী ছিলেন। ছোট থেকেই অভিনেতা হতে চাইতেন যশপাল। তাই গ্রামের রামলীলায় অংশগ্রহণ করতেন। ‘লগান’ ছিল তাঁর দশম ছবি। পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন ২ লাখ টাকা।
র্যাচেল শেলি। ছবির এলিজাবেথ। সেই ব্রিটিশ মহিলা যিনি ভুবনকে সাহায্য করেছিলেন। মনে মনে ভুবনের প্রেমেও পড়েছিলেন। এই ব্রিটিশ অভিনেত্রীর জীবনে এটিই একমাত্র হিন্দি ছবি। এই ছবির জন্য তিনি ৫ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন।
কেরিয়ারের একেবারে শুরুর দিকেই ‘লগান’-এর প্রস্তাব পান ব্রিটিশ অভিনেতা পল ব্ল্যাকথ্রন। ছবির ক্যাপ্টেন রাসেল। বড় পর্দার পাশাপাশি ছোট পর্দাতেও অভিনয় করেন তিনি। ‘লগান’-এর জন্য তাঁর পারিশ্রমিক ছিল ৭ লাখ টাকা।
বলিউডের খুব পরিচিত মুখ কুলভূষণ খরবন্দা। রাজা পূরণ সিংহ-এর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। ৭৬ বছরেও কুলভূষণ আজও সিনেমা, ওয়েব সিরিজ এবং টেলিভিশনে চুটিয়ে অভিনয় করে চলেছেন। ‘লগান’-এ তাঁর পারিশ্রমিক ছিল ৩ লাখ টাকা।
বলিউড-সহ দেশের বিনোদন দুনিয়ার অত্যন্ত পরিচিত নাম সুহাসিনী। মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ ছবির সূত্রে সিনেমায় আসা অভিনেত্রী এক সময়ে কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের সহকারী হিসেবে। ৫৯ বছর বয়সে এই অভিনেত্রী অধ্যাপক অতুল গুর্তুর সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে করে চর্চায় উঠে এসেছিলেন। আজ তাঁর বয়স ৭০ বছর। এখনও সক্রিয় তিনি। ‘লগান’ ছবিতে পারিশ্রমিক ছিল ২ লাখ টাকা।
রাজ যুৎসি ওরফে ‘লগান’-এর ইসমায়েল। দলের সবচেয়ে ঠান্ডা মাথার খেলোয়াড় ছিলেন। অনেকেই জানেন না ৬০ বছরের এই অভিনেতা ইমরান খানের সৎ বাবা। ওই ছবিতে পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন ২ লাখ।
ওই ছবিতে তাঁর অভিনয় মুগ্ধ করেছিল দর্শকদের। ‘লগান’-এর অর্জনের আসল নাম অখিলেন্দ্র মিশ্র। তিনিও বলিউডের পরিচিত মুখ। তিনিই আবার ‘রামায়ণ’-এর রাবণ হয়েছিলেন। তাঁর পারিশ্রমিক ছিল ৩ লাখ টাকা।
গ্রামের প্রধান হয়েছিলেন রাজেন্দ্র গুপ্ত। পানিপথে জন্ম এই অভিনেতা প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন। ছোট এবং বড় দুই পর্দাতেই অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি পরিচালক হিসাবেও একাধিক কাজ করেছেন। দেড় লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন ‘লগান’-এর জন্য।
‘সালাম বম্বে’, ‘লগান’, ‘ওয়াটার’ এবং ‘নিউটন’- তাঁর সবচেয়ে প্রশংসিত ছবি। ভাল অভিনয়ের জন্য ‘সিলভার পিকক বেস্ট অ্যাক্টর অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন। খুব কম ভারতীয়ই এই পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ‘লগান’-এর ভুরা। রঘুবীর যাদব। ওই ছবিতে তাঁর পারিশ্রমিক ছিল ২ লাখ টাকা।
আদিত্য লাখিয়া ওই ছবিতে কাচরা-র ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। কাচরা ছিলেন এক জন বিশেষ ভাবে সক্ষম যুবক। যাঁর ডান হাতে সমস্যা ছিল। এই কাচরাই দারুণ ভাবে বল ঘুরিয়ে সকলকে অবাক করে দিয়েছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বীকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন। ওই ছবিতে তাঁর পারিশ্রমিক ছিল ১ লাখ টাকা।