শুরুতেই শেষ
ছবির বাজেট ১৮০ কোটি টাকা। শুরুটা তা-ও মোটামুটি ভাল হয়েছিল। তবে ওই শুরুই শেষ হবে কে জানত! ১১ অগস্ট, বৃহস্পতিবার যে দিন মুক্তি পেয়েছিল আমির খান অভিনীত ‘লাল সিংহ চড্ডা’, সে দিন বক্স অফিসের সংগ্রহ ছিল সাড়ে ১১ কোটি টাকা। সুবিধার বিষয় একটাই, সে দিন ছিল পার্সি নববর্ষ। ছুটির দিন। কিন্তু তার পর শুক্রবারই ছবির আয় কমে গেল ৩৭ শতাংশ! ঝুলিতে এল মাত্র সওয়া সাত কোটি।
শনিবার আয় বাড়ল ২০ শতাংশ। যা নিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছিলেন ছবির বাণিজ্য বিশ্লেষক থেকে নির্মাতারা। কিন্তু রবিবার ছুটির দিন সত্ত্বেও মাত্র ১৫ শতাংশ আয় বৃদ্ধি হল। ঝুলিতে এল ১০ কোটি টাকা। সোমবার ১৫ অগস্ট। এমনিই বেশি মানুষ হলমুখী হবেন না। সে ক্ষেত্রে হাতে রইল আর মোটে এক দিন। সব মিলিয়ে মোট আয় ৪৬ কোটি টাকার বেশি কোনও ভাবেই হওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।দেখা যাচ্ছে শুরুর দিনটিতেই সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছিল অদ্বৈত চন্দন পরিচালিত ‘লাল সিংহ চড্ডা’র। এ হেন ভরাডুবি আমির খানের কোনও ছবির ক্ষেত্রেই এখনও অবধি হয়নি বলে অভিমত বিশ্লেষকদের।
তবে কি একে ‘অসময়ের ছবি’ হিসাবে সরিয়ে দেখা হবে? করোনা-পরবর্তী সময়ের দৈন্য বলে ধরা হবে? সে নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন একাংশ। কারণ বিশ্ব বাণিজ্যের দিক থেকেও তুলনামূলক কম আয় হয়েছে। ‘ফরেস্ট গাম্প’ অবলম্বনে ছবি বলে বিভিন্ন দেশের মানুষ যা-ও বা দেখেছেন, তাতে বৈদেশিক মুদ্রায় ছবির সংগ্রহে এসেছে ৮৪ কোটি টাকা। সেটাও আমির খান অভিনীত অন্য যে কোনও ছবির তুলনায় কম।
তবে কি আমিরের কেরিয়ারেও মন্দা শুরু হয়েছে? দেশ জুড়ে এত মানুষ তাঁর ছবি বয়কটের ধুয়ো তুলছে দেখে সে আশঙ্কাও এড়িয়ে যাচ্ছেন না সমালোচকরা।
‘ক্যায়ামাত সে ক্যায়ামাত তক’ থেকে যদি আমির অভিনীত ও প্রযোজিত ছবির রেখচিত্র লক্ষ করা যায়, দেখা যাবে ব্যর্থ ছবির সংখ্যা হাতেগোনা। ‘বাজি’ (১৯৯৫), ‘আতঙ্ক হি আতঙ্ক’(১৯৯৫), ‘আর্থ’ (১৯৯৯),‘ মেলা’ (২০০০), ‘মঙ্গল পাণ্ডে’ (২০০৫), ‘ধোবিঘাট’ (২০১১), ‘ঠগস অব হিন্দুস্তান’ (২০১৮) বক্স অফিসে ধরাশায়ী হয়েছিল। হিট এবং ব্লকবাস্টার ছবির সংখ্যা তাঁর ঝুলিতে তুলনায় বেশি। তবে আশঙ্কা এই যে, ‘ঠগস অফ হিন্দুস্থান’-এর পর পরই ব্যর্থ হতে চলেছে ৫৭ বছর বয়সি অভিনেতার আর এক ছবি ‘লাল সিংহ চড্ডা’।
সে দিক থেকে ষাট ছুঁইছুঁই অন্য দুই খান, শাহরুখ এবং সলমনের কেরিয়ার কি অধিক সুরক্ষিত? বক্স অফিস সমীক্ষা বলছে ৬৮টি ছবির মধ্যে ভাইজানের ২৪টিরও বেশি ছবি ব্যর্থ। আর শাহরুখ? তাঁর অভিনীত ৭০টি ছবির মধ্যে ২২টি বক্স অফিসে প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ। শাহরুখ অভিনীত শেষ সফল ছবি ‘ডিয়ার জিন্দেগি’ (২০১৬)। শেষ ক’বছরে তাঁর কোনও ছবিই সে ভাবে ব্যবসা করতে পারেনি। তবু শাহরুখের ছবি বয়কটের ডাক দেননি কেউ। সলমনেরও নয়। তা হলে কী দোষ করলেন আমির? সে নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁর ‘লাল সিংহ চড্ডা’-র সহ-অভিনেত্রী মোনা সিংহও।