সৌজন্য এবং গুনগুন।
দু’জনেই এখন বেজায় ব্যস্ত। রুটিনে ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন’-এর সঙ্গেই জুড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক কর্মসূচী। এক দিকে দোলের রং আর অন্য দিকে দলের রং। তারই মাঝে কৌশিক রায় এবং তৃণা সাহা । এই মুহূর্তে তাঁরা শুধু সহকর্মীই নন, প্রতিদ্বন্দ্বীও বটে। ‘খড়কুটো’র মুখ্য দুই চরিত্র, সৌজন্য-গুনগুন এখন ভিন্ন দুই রাজনৈতিক দলের অংশ। সৌজন্য অর্থাৎ কৌশিক বেছে নিয়েছেন গেরুয়া শিবির। স্বামী নীল ভট্টাচার্যের সঙ্গে তৃণা হাতে তুলে নিয়েছেন সবুজ শিবিরের পতাকা। বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। ‘খড়কুটো’র সেটেও কি তবে পড়ছে সেই আঁচ?
‘গুনগুন’ তৃণা সাহা যদিও রাজনৈতিক তাপ-উত্তাপের কথা মানতে নারাজ। নায়ক-নায়িকা দুই ভিন্ন শিবিরে থাকলেও ব্যক্তিগত সমীকরণে কোনও পরিবর্তন আসে বলে মনে করেন না তিনি। কিন্তু দর্শক? ‘সৌগুন’কে ভিন্ন দুই দলে দেখে অনেকেই উল্টোটা ভেবে বসছেন। গত ২০ মার্চ তৃণার শাসক দলে যোগদানের পর তেমনটাই বলছে নেটমাধ্যমের নানা পোস্ট। তৃণার কথায়, “তৃণা তৃণমূলে, কৌশিক বিজেপি-তে। কিন্তু ফ্লোরে আমরা একদমই গুনগুন-সৌজন্য, স্বামী-স্ত্রী। ফ্লোরে এই বিষয়ে আমরা কখনওই কোনও কথা বলতাম না, আজও বলি না।”
তৃণা রাজনীতিতে নতুন হলেও কৌশিক তা নন। তাঁর পরিবার যে আগাগোড়াই রাজনীতিমনস্ক, সে কথা অভিনেতা নিজেও বলেছেন। তৃণার তৃণমূলে আসার মাস দুয়েক আগেই কৌশিক যোগদান করেছিলেন বিজেপি-তে। বলাই যায়, তৃণার তুলনায় কিছুটা হলেও ‘সিনিয়র’ কৌশিক । সে ক্ষেত্রে কি কোনও পরামর্শ আদান-প্রদান হয় নায়ক-নায়িকার মধ্যে? তৃণা বললেন, “আমাদের মধ্যে কথা বলার এত রকমের বিষয় আছে যে এ সব নিয়ে কথাই হয় না। আর আমি তো একদমই নতুন। তবে সব কিছু জানার আগ্রহ সব সময়ই ছিল। কোনও রকম সাহায্য দরকার হলে আমি ডেরেক স্যরের সঙ্গে কথা বলি।”
ভিন্ন দুই দলে নায়ক-নায়িকা।
একদিকে কাজ, অন্য দিকে শ্যুটিং। এই ব্যস্ত জীবন উপভোগ করছেন তৃণা। স্বামী নীলের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া গিয়েছিলেন। রোদে ঘুরে বেড়িয়েছেন, মানুষের কাছে পৌঁছেছেন। খাওয়া বলতে শুধু জল আর আইসক্রিম। তবে মানুষের ভালবাসা পেয়ে আপ্লুত নীল-তৃণা দু’জনেই। এ রকম অভিজ্ঞতা এই প্রথম।
অন্য দিকে জোর কদমে প্রচার চালাচ্ছেন কৌশিকও। নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, তারকেশ্বর, পৌঁছে যাচ্ছেন নানা জায়গায়। দল আলাদা হলেও তৃণার সুরে সুর মেলালেন কৌশিক। অভিনেতার কথায়, “রাজনীতি এবং অভিনয় দুটো আলাদা জায়গা। তাই সেটে এই নিয়ে কোনও কথা হয় না। মানুষ রাজনীতি করতে এগিয়ে আসছেন, সেটা তো ভাল কথা।” দুই ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ ভাল পেশাদার হলে সুস্থ ভাবে কাজ করা যায় বলে মনে করেন তিনি। তবে রাজনৈতিক চর্চা যে একেবারেই হয় না, সে কথা বলছেন না ‘সৌজন্য’। তিনি বললেন, “রাজনীতি নিয়ে কথা হলেও খুব হালকা মেজাজে হয় সেগুলো। অন্যেরা এ বিষয়ে কথা বললে কেউ কিছু বলবে না। আমরা বললেই খুঁত ধরা শুরু হবে। তাই এ নিয়ে বেশি না বলাই ভাল।”
রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর যাই করুক, ‘সৌগুন’-এর প্রেম ফিকে করতে পারবে না। নির্বাচনের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মাঝেই সেই বার্তা দিলেন কৌশিক এবং তৃণা।