এ বারও সোনাদা ওরফে আবীর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গী আবীর ওরফে অর্জুন চক্রবর্তী এবং ইশা সাহা।
হঠাৎ বেড়াতে গিয়ে যদি গুপ্তধনের হদিশ মেলে? আগেও বাঙালি ভ্রমণে বেরিয়ে এমনই ভাবত। আজও যে একেবারে ভাবে না, তা কিন্তু নয়। তার পর যদি নিজের মেধা, বুদ্ধি দিয়ে সেই গুপ্তধন উদ্ধার করে ফেলতে পারে, তা হলে তো কথাই নেই! বাঙালির এই চিরকালীন বাসনাকে এই প্রজন্মেও উস্কে দিতে চান পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ইচ্ছের কথা পরিচালক নিজেই প্রথম জানালেন আনন্দবাজার অনলাইনকে। সোমবার তাঁর আগামী ছবি ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’-এর প্রথম ঝলক সামনে আসার পর। ছবির প্রযোজক এসভিএফ।
একই সঙ্গে পরিচালকের আরও দাবি, আট থেকে ৩০ বছরের দর্শক সোনাদার ছবি দেখে তাঁদের মা-বাবাকে নিয়ে। বাংলার ইতিহাস নিয়ে নানা প্রশ্নও করে। এ বিষয়টা জানার পরেই তাঁর মনে হয়েছে, তা হলে কেন এই সিরিজের ছবি কেন প্রতি বছর এক বার করে তৈরি করবেন না!
এর আগে শাহ সুজা, পলাশির যুদ্ধ, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র, বাঙালির দুর্গাপুজো শুরুর মতো বাংলার চাপা পড়ে যাওয়া গৌরবময় অতীত ধ্রুবর হাতযশে জীবন্ত হয়েছে ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’ বা ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’-এ। এ বারে তিনি বাঙালিকে পৌঁছে দিতে চলেছেন শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ বা কানসোনায়। এ বারও সোনাদা ওরফে আবীর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গী আবীর ওরফে অর্জুন চক্রবর্তী, ইশা সাহা। আর কাদের দেখা যাবে? পরিচালকের কথায়, চিত্রনাট্যের কাজ চলছে। সেটা পুরোপুরি না গুছিয়ে উঠে তিনি অভিনেতা বাছাই করেন না। তাই সোনাদার দল ছাড়া আর কারও নাম জানাতে পারবেন না। তবে সঙ্গীতের দায়িত্বে যথারীতি পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ। থাকবে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সুরে সমৃদ্ধ গান। ফেব্রুয়ারির শেষ বা মার্চের গোড়ায় শুরু হবে শ্যুট। পরিচালকের আশা, তত দিনে অতিমারিও অনেকটা বশে চলে আসবে।
কী করে ফেলুদা, ব্যোমকেশ, কিরীটি, কাকাবাবু, ঘনাদার মতো পোড় খাওয়া সত্যান্বেষী বা গোয়েন্দার সারিতে জায়গা করে নিতে পারল সোনাদা? পরিচালকের মতে, সোনাদার মতো ছেলে সব বাঙালির প্রিয়। ঝিনুকের মতো মেয়ে সবাই চান। আর আবীরের মতো পেটুক, দুষ্টু ছেলে তো বাংলার ঘরে ঘরে। মধ্যবিত্তের চেনা ছবি পর্দায় ফুটে উঠতে দেখলেই দর্শক খুশি। তাঁর তিন চরিত্রে সেই গুণ প্রচণ্ড ভাবে রয়েছে। তাই সোনাদা মাত্র তিন দফাতেই এত জনপ্রিয়— দাবি পরিচালকের। আর তার পরেই তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ফেলুদার সঙ্গে খুনসুটি করা যায়? কিংবা কাকাবাবুর সঙ্গে? সোনাদার সঙ্গে কিন্তু তার সহকারীরা তাঁর বান্ধবী সেমন্তী সরকারকে নিয়ে খুনসুটি করতে পারে! সোনাদাও রসিকতায় মাতে অনায়াসে। ধ্রুবর আরও যুক্তি, ‘‘আমরা যদি ফেলুদা, কাকাবাবু, ব্যোমকেশকে নিয়ে বড় হতে পারি, তা হলে এই প্রজন্মের জন্য নতুন কেউ আসবে না কেন?’’ তাঁর মতে, আগের গোয়েন্দাদের স্রষ্টারা আর নেই। তাই তারা আর নতুন কাণ্ডকারখানা করতে পারবে না। সোনাদা এখনও সেটা পারবে। এই প্রজন্মের চোখে বাংলাকে জানার বিস্ময় আর গুপ্তধন পাওয়ার আনন্দ-মুগ্ধতা দেখবে বলেই সোনাদা পর্দায় বারেবারে ফিরে আসে। বলছেন স্বয়ং পরিচালক।