শোলাঙ্কি
মনখারাপ। শোলাঙ্কির ভীষণ মনখারাপ। কিন্তু তেমন তো কিছুই ঘটেনি। বরং ‘ইচ্ছেনদী’র মেঘলা ছুটিশেষে সদ্য ফিরেছেন ছোট পরদায় ‘সাত ভাই চম্পা’তে রানী পদ্মাবতীর ভূমিকায়। তা হলে মন খারাপটা কীসের জন্য?
আসলে শোলাঙ্কি শহর ছাড়ছেন। শুধু শহরের অলিগলি নয়, নিজের মা-বাবা, বন্ধুবান্ধব, পাড়াপড়শি, এমনকী দেশের সীমানাও ছেড়ে শোলাঙ্কি হচ্ছেন নিউজিল্যান্ডবাসী। সামনের বছরই যে তাঁর বিয়ে! পাত্র শাক্য বসু, নিউজিল্যান্ডে চাকরি করেন। তবে যা হয়, কাজের প্রতি অমোঘ টান আর ভালবাসার জন্য মাঝের এই সময়টায় তিনি ফের হাজির বাঙালির ড্রয়িং রুমে।
দুটো ধারাবাহিকের মাঝে কি একটু বেশিই বিরতি নিয়ে নিলেন? শোলাঙ্কি বললেন, ‘‘না না, তা নয়। কলকাতায় ছিলাম না বলেই হয়তো এতটা গ্যাপ মনে হচ্ছে।’’ পদ্মাবতী চরিত্রটা ঠিক কেমন? ‘‘একদমই আলাদা। মেঘলার কোনও ছায়াই নেই। পদ্মাবতী বেশ টমবয়। পশু-পাখির ভাষা বুঝতে পারে। তার পর রাজার সঙ্গে প্রেম, বিয়ে...’’ জানাচ্ছেন শোলাঙ্কি।
‘ইচ্ছেনদী’তে এত পরিচিতি পাওয়ার পরে লিড চরিত্রের জন্য অপেক্ষা করলেন না কেন? ‘‘অনেকগুলো চ্যানেল থেকে লিড করার অফার এসেছিল। কিন্তু আমি তো ফাইনালি থাকছি না। সামনের বছরই চলে যাব। কোনও সিরিয়ালে লিড করলে তিন-চার বছরের কমিটমেন্ট। সেটা এখনই দিতে পারব না। তবে এখানে যত দিন আছি, আমার চরিত্রটাই প্রাধান্য পাবে। তার পর পারুল, মানে আমার মেয়ের চরিত্রটা আসবে,’’ হাসলেন শোলাঙ্কি। কেরিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ মোড় থেকে প্রায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিরতি নিচ্ছেন। সে দেশে করবেন কী? ‘‘সেখানকার নতুন জীবনে মানিয়ে নেওয়া। আর পড়াশোনাও করব ভেবেছি। তবে মা-বাবা, এই শহরটাকে ছেড়ে যেতে খুব কষ্ট হবে। ওখানে তো সারা জীবন থাকব না। আমাকে ফিরে আসতেই হবে,’’ বলছেন শোলাঙ্কি।
খেতে ভালবাসেন তিনি। জিমে যাওয়াও হয়ে ওঠে না। কিন্তু অল্প পরিমাণে খাওয়া, নিয়মিত নাচের জন্য ধরে রাখতে পারেন সুন্দর চেহারা। শোলাঙ্কির সঙ্গে রয়েছে পদ্মাবতীর মিল। তিনি মেঘলার মতো শান্ত স্বভাবেরও। কিন্তু মোটেও চুপচাপ নন। বরং কথা বলতে ভালবাসেন। পছন্দ করেন আড্ডা দিতে। তবে সেলফি নেওয়া একদম না-পসন্দ তাঁর।
সোনিকা-বিক্রম প্রসঙ্গে বরাবরই সরব হয়েছেন শোলাঙ্কি। বললেন, ‘‘যে ভাবে দু’জনের চরিত্র নিয়ে কাটাছেঁড়া করা হচ্ছিল, সেটায় আমার আপত্তি ছিল। ওটা একটা দুর্ঘটনা। আমি সে দিন ওখানে উপস্থিত ছিলাম না। ফলে বলতে পারব না ঠিক কী ঘটেছিল। দুর্ঘটনায় কারও হাত থাকে না। সোনিকার বাবা-মায়ের কাছে ওঁদের মেয়ে কোনও দিনও ফিরবে না। আর আমি বিক্রমের মা-বাবা-বোনকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। দুটো পরিবারই ছারখার হয়েছে। শুধু এটাই বলার, বিষয়টা আগে প্রমাণ হোক। সেটা তো আইনের আওতায়।’’ এখনও বিক্রমের সঙ্গে ভাল রকম যোগাযোগ আছে শোলাঙ্কির। বললেন, ‘‘আমি বিক্রমের গাড়িতে উঠলে সিটবেল্ট না বাঁধা পর্যন্ত ও গাড়ি স্টার্ট করত না। সেটা আমি নিজে দেখেছি। আর সত্যিটা তো বলতেই হবে। মানুষ বলেই তো মানুষের পাশে দাঁড়াব। ওর সঙ্গে ভাল রকম যোগাযোগ আছে। আমাদের কমন ফ্রেন্ডও প্রচুর। বিক্রম এখন বম্বেতে রয়েছে। এখানে থাকলে আড্ডা দিই। একটা দুর্ঘটনায় তো বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যেতে পারে না!’’