কাজলের জন্ম মুম্বইয়ে। পরিবারের প্রায় সকলেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত। আর অজয় দেবগণ অমৃতসরের ছেলে। পঞ্জাবী পরিবারে জন্ম।
২০ বছর তাঁদের বিয়ে হয়েছে। আর এই দীর্ঘ সময় ধরে যাবতীয় চড়াই-উতরাই পেরিয়ে একে অপরের পাশে রয়েছেন দুজনেই। বলি ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সুখী দম্পতি বলা হয় তাঁদের।
জানেন কি তাঁদের এই সুখী দাম্পত্যের রহস্য? কেনই বা কেরিয়ারের শীর্ষে থাকা অবস্থায় নিজের খেকে কম সফল অজয়কে বিয়ে করেছিলেন কাজল?
১৯৯৯ সালে দুজনে বিয়ে করেন। কাজল বা অজয় দুজনেই চেয়েছিলেন ব্যক্তিগত পরিসরে বিয়েটা সারতে। নিজের বিয়েতে কাজল কোনও পেশাদার আলোকচিত্রীও ভাড়া করেননি। আত্মীয়স্বজনরাই ছবি তুলেছিলেন।
বাড়ির ছাদে মাত্র ৩০ মিনিটে তাঁদের বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। তবে বিয়ের পর দু’মাস ছুটি নিয়ে ইউরোপে হানিমুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। যদিও শেষে পরিকল্পনা পরিবর্তন করে একমাস ঘুরেই বাড়ি ফিরেছিলেন দুজনে।
কাজল যখন অজয় দেবগণকে বিয়ে করেন, সে সময় কেরিয়ারের একেবারে শীর্ষে ছিলেন তিনি। একটার পর একটা হিট ছবি হচ্ছে। অজয় তখন কাজলের মতো এতটা নাম করতে পারেননি।
সে সময় অজয়-কাজলের বিয়েটা ইন্ডাস্ট্রির কেউই মানতে পারেননি। অনেকেই মনে করেছিলেন, সাফল্যের শীর্ষে থাকার সময়ে কাজলের বিয়েটা করা ঠিক হয়নি। তাঁদের সম্পর্কও বেশিদিন স্থায়ী হবে না, অনুমান করেছিলেন অনেকে।
কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে ২০ বছর পূর্ণ করল তাঁদের দাম্পত্য। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। সম্প্রতি তাঁদের সুখী দাম্পত্যের রহস্য এক সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন কাজল। জীবনসঙ্গী হিসাবে অজয়কে বেছে নেওয়ার কারণও শেয়ার করেছেন তিনি।
কাজল চিরকালই ভীষণ কথা বলতে ভালবাসেন। আড্ডা আর হাসি নিয়েই তাঁর সারাদিন কেটে যায়। অজয় দেবগণ সম্পূর্ণ উল্টো। তিনি স্বল্পভাষী মানুষ।
কাজল মনে করেন, এই বিপরীত ব্যক্তিত্বই তাঁদের সুখী দাম্পত্যের চাবিকাঠি। কারণ অজয় দেবগণ কথা কম বলেন এবং শোনেন বেশি।
তার উপর বিয়ের আগে টানা চার বছর ডেট করেছেন দুজনে। দুজনে সবার আগে খুব ভাল বন্ধু। এই বন্ধুত্ব তাঁদের একে অপরকে বুঝতে সাহায্য করেছে এই ২০ বছর। সে কারণেই অজয়কে বিয়ে করেছিলেন কাজল।
আর সাফল্যের শীর্ষে কেন বিয়ে করে কেরিয়ার নষ্ট করলেন তিনি? পরিবার সব সময়ই ভীষণ পছন্দ করেন কাজল। যখন বিয়ে করেন তখন বছরে ৪-৫টা ছবি করতেন। কাজল ঠিক করে নিয়েছিলেন এ বার তাঁর পরিবার পরিকল্পনা করা উচিত। বছরে একটা করে ছবি করবেন আর পুরো সময়টা পরিবারকে দেবেন।
বিয়ের পর ২০০১ সালে কাজল অন্তঃসত্ত্বা হন। কিন্তু তার ছ’মাসের মধ্যে গর্ভপাত হয় তাঁর। গর্ভপাতের খবরে কাজল এবং অজয় দুজনেই প্রথমে ভেঙে পড়েছিলেন। এর পর কাজল আরও কেরিয়ার থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।
গর্ভপাতের দু’বছর পর তাঁদের প্রথম সন্তান নাইসার জন্ম হয়। তার সাত বছর পর ছেলে যুগের জন্ম হয়। কাজল এখন পুরোপুরি তাদের নিয়েই ব্যস্ত।