নগ্নতা নিয়ে ছুতমার্গ নেই তাঁর। নিজের শর্তেই জীবন কাটাতে পছন্দ করেন। তাই বার বারই আলোচনা আর বিতর্কের ফোকাস যেন অজান্তেই টেনে নেন নিজের উপর।
৫৫ বছর বয়সি মডেল মিলিন্দ সোমান ফের এক বার নেটাগরিকদের নজর টানলেন নিজের ছবি পোস্ট করে।
গোয়ার সমুদ্রসৈকতে নগ্ন হয়ে তিনি দৌড়লেন। উপলক্ষ ছিল ৫৫ বছরের জন্মদিন উদ্যাপন।
স্ত্রী অঙ্কিতা কোনওয়ারের সঙ্গে গোয়াতেই জন্মদিন কাটিয়েছেন তিনি। সমুদ্রসৈকতে নগ্ন হয়ে দৌড়ের এই ছবিও নিজেই ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন। ছবিটা তুলে দিয়েছেন স্ত্রী অঙ্কিতা। আর ক্যাপশনে লেখা, ‘হ্যাপি বার্থডে টু মি।’
তবে এই প্রথম বার নিজের নগ্ন ছবি শেয়ার করলেন না মিলিন্দ। এর আগেও নগ্ন হয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন।
১৯৯৫ সালে তৎকালীন বান্ধবী ও প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া মধু সাপ্রের সঙ্গে ন্যুড মডেলিং করেছিলেন একটি জুতো প্রস্তুতকারী সংস্থার জন্য। সে সময় আলোড়ন ফেলেছিল সেই দুঃসাহসী মডেলিং।
জুতোর সেই বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হয়েছিল অজগর সাপ। ফলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মিলিন্দ, মধু, বিজ্ঞাপন সংস্থা এবং ওই জুতো প্রস্তুতকারী সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। ১৪ বছর মামলা চলার পরে আদালত রেহাই দেয় অভিযুক্তদের।
মিলিন্দের জন্ম ১৯৬৫ সালের ৪ নভেম্বর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে। তাঁর বাবা ছিলেন বিজ্ঞানী আর মা বায়োকেমিস্ট। ৭ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলেন ইংল্যান্ড। ৮ বছর বয়সে চলে আসেন মুম্বইয়ে। তার পর সেখানেই বড় হওয়া।
সুপারমডেল মিলিন্দ খুব মেধাবীও ছিলেন। বাইকুল্লার এম এইচ সাবু সিদ্দিক পলিটেকনিক কলেজ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা রয়েছে।
কিন্তু এই ইঞ্জিনিয়ারের মন পড়ে ছিল মডেলিংয়ে। ১৯৮৯ সালে ‘থ্যাকার ফ্যাব্রিক’-এর হয়ে তাঁর প্রথম মডেলিং। পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন ৫০ হাজার টাকা।
মডেলিংয়ের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন সিনেমা এবং টেলিভিশন সিরিজেও। ‘আ মাউথফুল অব স্কাই’, ‘মার্গারিটা’, ‘সি হকস’ তাঁর অভিনীত জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল। তাঁর অভিনীত ছবিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘তরকিব’, ‘কাঠপুতলি’, ‘রুলস: প্যায়ার কা সুপারহিট ফর্মুলা’, ‘বাজিরাও মস্তানি’ এবং ‘ভেজা ফ্রাই’।
২০০৬ সালে ‘ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স’ ছবির সেটে তাঁর সঙ্গে আলাপ ফরাসি অভিনেত্রী মিলেন জাম্পানোইয়ের। গোয়ার এক রিসর্টে দু’জনে বিয়ে করেন সে বছরেই। তবে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায় ২০০৯-এ।
দ্বিতীয় বিয়ে ২০১৮ সালে। ২৮ বছর বয়সি বান্ধবী অঙ্কিতা কোনওয়ারকে বিয়ে করেন ৫৩ বছরের মিলিন্দ। দু’জনের ঘনিষ্ঠ ছবি শেয়ারও করেন নিয়মিত।
এক বার এক জন মন্তব্য করেছিলেন, অঙ্কিতার উচিত মিলিন্দকে ‘পাপাজি’ বলে ডাকা।
মিলিন্দ বা অঙ্কিতা কেউই এতটুকু রেগে যাননি তাতে। বরং মিলিন্দ মজা করে উত্তর দিয়েছিলেন, অঙ্কিতা মাঝে মাঝে সে রকমই সম্বোধন করেন তাঁকে।
মিলিন্দ সোনমের ৮১ বছরের মা ছেলের মতোই ফিট। এই বয়সেও ছেলে-বৌমার সঙ্গে সমানতালে দৌড়ন।
সাফল্যের সঙ্গে বিতর্কেও অবিচল থেকেছেন মিলিন্দ। ছকভাঙা পথেই জীবনকে উপভোগ করেন তিনি।