ছোট থেকেই পরদায় ডিটেকটিভ হওয়ার শখ তাঁর প্রবল। সেই কোন কালে যখন শালর্ক হোমসের গল্পে বুঁদ হয়ে যেতেন, তখন থেকেই! পরে হোমস সিরিজ দেখতে বসে তো আরওই।
অঞ্জন দত্তর ‘ব্যোমকেশ’-এ লুক টেস্টের পরও ছিটকে যাওয়ার দুঃখটা এখনও যায়নি। ফেলুদা হওয়ার শখও ষোলো আনা। এ সব না করতে পারলেও অবশেষে ‘ডিকেটটিভ’ হওয়ার ইচ্ছেপূরণ হল প্রিয়াংশু চট্টোপাধ্যায়ের। বাংলা ছবির তিন নম্বর কিরীটী হতে চলেছেন তিনিই।
কিরীটী রায়। ছ’ফুট লম্বা। গৌর বর্ণ। মজবুত হাড়ের ফ্রেমে বলিষ্ঠ এক পুরুষ। মাথা ভর্তি ব্যাকব্রাশ করা চুল। আপাদমস্তক সাহেবিয়ানায় মোড়া পোশাক। নীহাররঞ্জন গুপ্তর এই বর্ণনা সঙ্গে হুবহু মিল রেখেই নাকি ‘গেটআপ’ তৈরি হয়েছে প্রিয়াংশুর। সঙ্গে সংলাপে, শরীরী ভাষায় অল্পবিস্তর ‘টাচ’ দিয়ে ধরা হয়েছে তাঁর পশ্চিমি ধাঁচ। জানালেন পরিচালক অনির্বাণ পারিয়া। সেই সঙ্গে বললেন, ‘‘এক সময় উত্তমকুমার ‘কিরীটী’ হতে চেয়েও পারেননি, লেখকের মত ছিল না, তাই! উনি কিরীটী বলতে বুঝতেন অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বুঝতে পারি, কতটা স্পর্শকাতর ছিলেন তিনি এ ব্যাপারে। প্রিয়াংশুকে বেছেছি সাতপাঁচ অনেক কিছু ভেবেই।’’
নীহাররঞ্জন গুপ্তর ‘রতিবিলাপ’ অবলম্বনে তৈরি ‘এবং কিরীটী’ নামের এই ছবিটি আদপে রহস্য কাহিনি হলেও এর মধ্যেই ঢুকে আছে প্রেমের গল্প। আর তার সঙ্গে সিনেমার ভিতরেই থিয়েটারি স্বাদ।
ছবির নাটকটির নাম ‘শকুন্তলা’। দুষ্মন্ত-শকুন্তলার সেই প্রেম-বিরহের প্রাচীন কাহিনি। এ নাটকে যাঁরা অভিনয় করেন, মঞ্চের বাইরেও তাঁরা প্রেমিক-প্রেমিকাই। সেই প্রেমিক পুরুষটি যে আংটি শকুন্তলাকে দেন, তাতে দামী একটি হীরে বসানো। ভালবাসার নমুনাস্বরূপ যেটি তিনি বাড়ির সংগ্রহ থেকে এনে পরিয়ে দিয়েছেন প্রেমিকাকে! এই আংটি চোখে পড়ে পাথর-ব্যবসায়ী রাঘব সরকারের। আংটি হাতাতে তিনি ফন্দি আঁটেন। সঙ্গে তাঁর ‘শকুন্তলা’-কেও চাই। যে কারণে একদিকে যেমন তিনি টাকা দেন নাটকের নির্দেশক বিনায়ক সেনকে, অন্য দিকে চাপ দিতে থাকেন ‘শকুন্তলা’র কাকা বিমল চৌধুরীকে। তার মাঝেই খুন হয়ে যান বিমল। হারিয়ে যায় মহামূল্য আংটিও। তদন্তে নামে কিরীটী।
এ ছবিতে আর আছেন বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কৌশিক কর, অঙ্কিতা চক্রবর্তী। ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে ৩১ মার্চ।