মুম্বইয়ে প্রয়াত খৈয়াম। ছবি: সংগৃহীত।
বরফের রাজ্যে আবেশে জড়িয়ে যুগল। অমিতাভের কোলে মাথা রেখে রাখী। অমিতাভের ঠোঁটে তখন, ‘কভি কভি মেরে দিল মে খায়াল আতা হ্যায়... ’। যশ চোপড়ার রোম্যান্টিক ফিল্ম ‘কভি কভি’-তে সাহির লুধিয়ানভির ওই কথাগুলিকে সুরের ছায়ায় চিরকালীন করেছেন খৈয়াম। সোমবার রাতে প্রয়াত হলেন সেই কিংবদন্তি সুরকার। বয়স হয়েছিল ৯২।
পাঁচ থেকে শুরু করে নয়ের দশকের গোড়া পর্যন্ত— প্রায় চার দশক ধরে হিন্দি ফিল্মের পর্দায় গজলকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন মহম্মদ জহুর হাশমি খৈয়াম। হিন্দি ফিল্মের উৎসাহীরা যাঁকে চেনেন খৈয়াম নামে। তাঁর সঙ্গে ছিল, কাইফি আজমি বা জান নিসার আখতারের মতো কবির লেখনী। তবে শুধু গজল নয়, সুরের সৃষ্টিতে খৈয়াম অমর করেছেন বহু সাধারণ মানের লেখনীও।
গত জুলাইয়ের শেষ দিকে ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে মুম্বইয়ের জুহুতে এক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন খৈয়াম। সে সময় থেকেই আইসিইউ-তে ছিলেন তিনি। তাঁর দেখাশোনা করছিলেন গজল গায়ক তালাত আজিজ। সঙ্গে ছিলেন খৈয়ামের স্ত্রী জগজিৎ কউরও। এ দিন তালাত আজিজ জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ মারা যান খৈয়াম। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল খৈয়ামকে। তালাত আজিজ জানিয়েছেন, আগামিকাল মুম্বইয়ে খৈয়ামের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
আরও পড়ুন: মহানগরের অন্য মুখ দেখাল ওয়েব ফিল্ম ‘সত্যমেব জয়তে’
আরও পড়ুন: ‘জয়া একটি পর্বও মিস করে না’, কেবিসি নিয়ে ফের আসছেন অমিতাভ
অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাবে ১৯২৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জন্ম খৈয়ামের। ছোটবেলা থেকেই হিন্দি ফিল্মের গানের প্রতি টান। গান শিখতে এক বার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে চলেও আসেন দিল্লিতে, কাকার বাড়িতে। সুপ্ত ইচ্ছে, অভিনেতা হবেন। তবে শেষমেশ সে সব ছেড়ে এক সময় ফিরে যান নিজের বাড়িতে। তখন থেকেই জোরকদমে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের তালিম শুরু। প্রথমে পণ্ডিত অমর নাথ এবং পরে বাবা চিস্তির কাছে সঙ্গীতের হাতেখড়ি। সেই বাবা চিস্তির সহকারি হিসাবেই ফিল্মে সঙ্গীত পরিচালনা কাজে মন দেন। ১৯৬১-তে রমেশ সহগলের ফিল্ম ‘শোলা অউর শবনম’-এর গানে সুর দিয়ে নজর কাড়েন তিনি। সেই শুরু! এর পর ‘ত্রিশূল’, ‘বাজার’, ‘উমরাও জান’, ‘নুরি’, ‘রাজিয়া সুলতান’— একের পর এক ফিল্মে দর্শককে বেঁধেছিলেন তাঁর সুরের জালে। পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার, সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি বা পদ্মভূষণ সম্মান। খৈয়ামের মৃত্যুতে হিন্দি ফিল্মের জগতে আজ বিষণ্ণতার সুর!