কবিতার আক্ষেপ, সুরে-তালে গাওযার জন্য এখন তা হলে তো আর গায়কের দরকার নেই। যন্ত্রই সবটা করুক। — ফাইল চিত্র।
বেশ কয়েক দশক ধরে বলিউডে গাইছেন কবিতা কৃষ্ণমূর্তি। দেখেছেন গানবাজনার ধারায় নানা পরিবর্তন। তাঁর মতে, ইদানীং গাইতে গেলে সুর-তাল-লয়ের বোধ কিছুই লাগে না, দেখনদারি আর হাবভাব দিয়েই কাজ হয়ে যায়। সম্প্রতি কটাক্ষ করে কবিতা বললেন, “এখন গাইতে না জানলেও চলে। অটোটিউনের মাধ্যমে সুর, পিচ ঠিক করে নেওয়া এখন কোনও ব্যাপার নয়। মেশিনেই হয়ে যায় সব।”
কবিতার মতে, গানবাজনার ধারা অনেক বদলে গিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার মতো গায়িকা পাঁচ মিনিটের গান টানা গেয়ে দিতে পারে। আমি খৈয়ামের সুর করা গজলধর্মী গান গেয়েছি। দু’টি লাইনের মধ্যে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ নেই সেখানে। উনি বলতেন, ‘এতে গানের কাব্যমূল্য নষ্ট হয়ে যাবে।’ কিন্তু এখন শিল্পীদের কাছে টানা গান গাওয়া কঠিন ব্যাপার।”
কবিতা কটাক্ষ করতেও ছাড়েন না হাল আমলের সঙ্গীতনির্মাণ পদ্ধতিকে। বললেন, “এখন কোনও রেকর্ডিংয়ে গেলে ‘তুমকো’ ...এইটুকু গাইলাম, আর এক বার বলল, গাইলাম ‘তুমকো’, তার পর চলে গেলাম পরের লাইনে। ব্যস, হয়ে গেল।”
কবিতা জানান, এই ভাবেই এখন গান তৈরি হয়। হয়তো গাওয়ার পর বললেন, “আরও একটু সুরে গাইতে পারি, আর এক বার গাই?” কবিতাকে বলা হয়, তার দরকার নেই। সুর-তালে বসিয়ে নেবে যন্ত্র। কবিতার আক্ষেপ, সুরে-তালে গাওয়ার জন্য এখন তা হলে তো আর গায়কের দরকার নেই। যন্ত্রই সবটা করুক।
কবিতা বলেন, “আমাকে বলা হয়েছিল, এখন ‘অ্যাটিটিউড’ চাই।” তাই গানবাজনা যে এখন হাবভাব সর্বস্ব তা জানেন কবিতা। ক্ষোভ উগরে জানান, দেখনদারি জানলেই বাজারে গানবাজনার চেষ্টা করা যেতে পারে।
সত্তরের দশকের শেষ থেকে কবিতা বলিউডে গাইছেন। ওড়িয়া, তামিল, মরাঠি, বাংলা, তেলুগু, উর্দু-সহ বহু ভাষায় গান গেয়েছেন তিনি। ‘হাওয়া হাওয়াই’, ‘তুহি রে’, ‘কোয়ি মিল গয়া’-র মতো জনপ্রিয় গান গেয়েছেন তিনি। লাকি আলির সঙ্গে ‘গোরি তেরি আঁখে’ অ্যালবামেও শ্রোতার মন ছুঁয়েছিলেন কবিতা।