গত শুক্রবার ক্যাটরিনা কইফ এবং ভিকি কৌশল খাতায়কলমে বিয়ে সেরে ফেলেছেন বলে দাবি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের। তাঁরা ১৯৫৪ সালের বিশেষ বিবাহ-আইনে বিয়ে করেছেন বলে জানানো হয়েছে।
তার পরে রাজস্থানের বিলাসবহুল হোটেলে ৬ থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাড়ম্বরে বিয়ে হবে বলে জানা গিয়েছে। রাজস্থানের সওয়াই মাধোপুর জেলাশাসকের এক চিঠি ছড়িয়ে পড়ে নেটমাধ্যমে। সেই চিঠিতে ‘ভিক্যাট’ (তারকা যুগলকে একসঙ্গে যে নামে ডাকা হয়)-এর বিয়ের জন্য বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল বলে দাবি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে।
দিন দুই আগেই মুম্বইয়ের এক ক্লিনিকে যেতে দেখা গিয়েছিল ক্যাটরিনাকে। রবিবার দুপুরে ফের তিনি গেলেন সেই ক্লিনিকেই।
ক্লিনিকে ঢোকার পথে ভক্তদের সঙ্গে ছবি তুলতে দেখা যায় ক্যাটরিনা কইফকে। গাড়িতে বসেছিলেন তিনি। সেখান থেকেই আবদার মেটালেন ভক্তদের। তুললেন নিজস্বী।
কেন বার বার ডাক্তারখানা যেতে হচ্ছে ক্যাটকে? একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, কিছু নিয়মমাফিক পরীক্ষা করিয়েছেন ক্যাট। তার সঙ্গে নিয়মিত জিম করছেন। সঙ্গে একটি ফিজিও ক্লিনিকেও যাচ্ছেন। অসুস্থতা নয়, ফিটনেস নিয়ে অধিক সচেতনতার জন্যই ক্যাটরিনাকে বারবার ক্লিনিকে যেতে দেখা যাচ্ছে বলে এক সূত্রে খবর।
ফোন ব্যবহার করা যাবে না। ছবি তোলা যাবে না। বিয়েবাড়ি থেকে বাইরের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে না। গোপন কোড না জানলে বিয়েতে যাওয়া যাবে না। আমন্ত্রিতদের নাকি জন্য এমনই বেশ কিছু বিধিনিষেধ তৈরি হয়েছে ভিকি-ক্যাটরিনার বিয়েতে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দৌলতে এই খবর শুনে সাড়া পড়ে গিয়েছে নেটমাধ্যমে। টুইটার ব্যবহারকারীরা দুই তারকার বিয়ে ঠাট্টা-মশকরায় মেতেছেন। কেউ লিখছেন, ‘ভিকি-ক্যাটরিনার বিয়েতে ঢুকতে গেলে কঠিন অঙ্ক সমাধান করতে হবে।’
কেউ আবার লিখছেন, ‘এ তো বিয়ে নয়! মিশন ইম্পসিবল যেন।’ কেউ আবার দুই তারকার সমালোচনাও করছেন। এমনই সময়ে ভিকি এবং ক্যাটরিনার বিয়ে নিয়ে নতুন খবর দিলেন তারকা যুগলের এক বন্ধু।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘‘বহু দিন পরে এত অদ্ভুত গুজব শুনলাম। এটা কি কোনও রাষ্ট্রীয় সভা, নাকি বিয়ে? বিয়ে বাড়িতে থাকাকালীন বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার মতো এমন বিধিনিষেধ কেউ আরোপ করে নাকি? এমন কিছুই হয়নি। যদিও হ্যাঁ, তাঁদের দু’জনের কেউই চান না যে তাঁদের জীবনের এত ব্যক্তিগত একটি অনুষ্ঠানে বাইরের মানুষ হস্তক্ষেপ করুক। সেটা আলাদা বিষয়।’’
তার জন্য ইতিমধ্যে জেলাশাসক বিশেষ বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন বলে দাবি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত পুলিশকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে বিলাসবহুল সেই হোটেলের এলাকায়।
একই সঙ্গে কোভিড বিধি মেনে চলার জন্য নিয়মকানুন তৈরি করা হয়েছে। ভিকি এবং ক্যাটরিনার বিয়েতে প্রবেশ করার আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে কোভিড পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট এবং দু’টি টিকার শংসাপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
তারকাদের সংসার সাজানোর আয়োজন নাকি শুরু হয়ে গিয়েছে। মুম্বইয়ের জুহুতে পাঁচ বছরের জন্য একটি আবাসনের অষ্টম তলের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন ‘সর্দার উধম’-এর নায়ক।
ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেওয়ার সময়ে প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা জমা রেখেছেন। প্রথম ৩৬ মাস ভিকি এবং ক্যাটরিনা প্রতি মাসে ৮ লক্ষ টাকা করে ভাড়া দেবেন। তার পরের ১২ মাস ৮.৪০ লক্ষ টাকা করে প্রতি মাসের ভাড়া। তার পরের এক বছর ধরে প্রতি মাসে হবু তারকা দম্পতি সেই বাসস্থানের জন্য প্রতি মাসে ৮.৮ লক্ষ করে টাকা দেবেন।
বর-কনের প্রাক্তনদের নিয়ে কম চর্চা শুরু হয়নি চারদিকে। বারবার ক্যাটরিনার প্রাক্তন সলমন খান এবং ভিকির প্রাক্তন হারলিন সেথির নাম উঠে আসছে। জানা যায়, কাজের ব্যস্ততার জন্য সলমন এই বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। যদিও পরবর্তীকালে সলমনের বোন অর্পিতা খান জানিয়েছিলেন যে তাঁদের পরিবারে কোনও আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়নি।
ক্যাটরিনার ইন্ডাস্ট্রিতে আসা সলমনের হাত ধরে। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর ও সলমনের সম্পর্ক বলিউডে চর্চায় ছিল। তবে এই বিষয়ে মুখ খোলেননি সলমান-ক্যাটরিনার কেউই।
রণবীর কপূরের সঙ্গে ক্যাটরিনার সম্পর্ক নিয়েও গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। তাঁদের সম্পর্কের কথা করিনা কপূর একটি ‘টক শো’-এ এসে জানিয়েছিলেন। তবে সে সম্পর্কও টেকেনি। শোনা যায় রণবীরের প্লেবয় ইমেজের কারণেই নাকি ভেঙে যায় সম্পর্ক।
অন্য দিকে হারলিন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকের বিয়ে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি ছিলেন না। খবর, প্রাক্তন যুগলের বন্ধুবান্ধবদের কথায়, খ্যাতির কাছাকাছি যেতে শুরু করতেই ভিকি বদলে যেতে শুরু করেন। এর ফলেই হারলিনের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়।
অতীত পিছনে ফেলে রেখে দুই তারকাই অনেকটা পথ অতিক্রম করেছেন। ৬ থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই যুগলের প্রেমের উদ্যাপন করবে রাজস্থানের বিলাসবহুল হোটেল।