৪৫ দিন কলকাতায় কাটিয়ে গেলেন করিশ্মা কপূর।
শ্যুটের খাতিরেই সই, ৪৫ দিন কলকাতায় কাটিয়ে গেলেন করিশ্মা কপূর। যতটা শ্যুটে ব্যস্ত থাকলেন, ততটাই নিজের মতো করে চিনলেন কল্লোলিনীকে। শুক্রবার শেষ শ্যুটিং ছিল থ্রিলার সিরিজ ‘ব্রাউন’-এর। তার পরেই কালো গোল গলা টি শার্ট আর জগার্স প্যান্টে স্বচ্ছন্দ কপূর-কন্যে। পায়ে কালো হাওয়াই চপ্পলে রংমিলন্তি! তাঁর এক ঢাল খোলা চুল এখনও যে কোনও মেয়ের ঈর্ষার কারণ। চাপা হিংসে ছড়ায় নায়িকার বেতের মতো হিলহিলে শরীর দেখেও। রূপটান ছাড়াই তরতাজা! এখনও...
কেমন ছিল করিশ্মার কলকাতার ডায়েরি? সূত্র বলছে, শ্যুটের খাতিরে গোটা শহর চষে ফেলতে হয়েছে তাঁকে। কখনও উত্তরের অলিগলি, বাগবাজারের কুমোরটুলি। কোনও দিন পৌঁছে গিয়েছেন দক্ষিণে লেক মার্কেট কিংবা শহর ছাড়িয়ে টিটাগড়, বাওয়ালি রাজবাড়িতেও। এরই সঙ্গে তাল মিলিয়ে করিশ্মা নাকি হন্যে হয়ে খুঁজেছেন রকমারি মিষ্টি! রসগোল্লা আর মিষ্টি দই ছাড়াও যে শহরে হরেক মিষ্টি মেলে, আবিষ্কার করে উল্লসিত রাজ কপূরের নাতনি! এক-দু’দিন শ্যুটের অবসরে তক্ষুণি বাক্সে ভরে নিয়ে গিয়েছেন মুম্বই। এ ছাড়াও, ডাব চিংড়ি খেয়ে নাকি মোহিত তিনি। একাধিক বার ঢুঁ মেরেছেন নিশিঠেক, পার্ক স্ট্রিটের নামী রেস্তরাঁয়। রাত পোহালেই জন্মদিন। তার ঠিক আগের রাতে কলকাতার পাট চুকিয়ে ঘরের মেয়ে ঘরের পথে।
শুধুই কাজ আর খাওয়া দাওয়া! শহরটাকে নিজের মতো করে ঘুরে দেখার চেষ্টা করেননি করিশ্মা?
সূত্র বলছে, এক দিন বাতানুকুল ট্রামে চেপে ছেলেমেয়েদের নিয়ে ধর্মতলা থেকে গড়িয়াহাট ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছিলেন করিশ্মা। সব দেখেশুনে রোমাঞ্চিত? জানা গিয়েছে, সেই সফর নাকি ততটাও ছাপ ফেলতে পারেনি কপূর অ্যান্ড কোং-এর মনে! তাঁরা ভেবেছিলেন, সুইৎজারল্যান্ডের মতো কলকাতার ট্রামেও গাইড বা অডিয়ো গাইড থাকবে। ঢিমে তালে দুলতে দুলতে পুরনো ঐতিহ্যের মধ্যে দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছবেন তাঁরা। চারপাশের প্রকৃতি অকৃপণ হয়ে ধরা দেবে সুইৎজারল্যান্ডের মতোই। সে সব কিচ্ছু নেই! ফলে, কপূর খানদানের কল্পনা কলকাতার মাটিতে সজোরে আছাড় খেয়েছে।
পরিচালক অভিনব দেও-র এই সিরিজের হাত ধরে দীর্ঘ দিন পরে ফের অভিনয়ে করিশ্মা। ইন্ডাস্ট্রি বলছে, প্রতিভার ধার একটুও কমেনি রণধীর-কন্যার! ক্যামেরার মুখোমুখি হলেই করিশ্মা এখনও আগের মতোই সজীব, প্রাণবন্ত। এখনও শট নিয়ে ভীষণ খুঁতখুঁতে। একাধিক শট দিতে একটুও বিরক্তি নেই। এবং সহ-অভিনেতাদের সব সময় সাহায্য করতে প্রস্তুত। তবে তাঁর বিপরীতে যিশু সেনগুপ্ত বা আবীর চট্টোপাধ্যায় নন। ‘আনদেখি’ সিরিজের সূর্য শর্মা। আবীর এই সিরিজে অতিথি চরিত্রে। কলকাতায় তাঁর শ্যুট শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে যিশু সেনগুপ্তের চরিত্র যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া অভিনয় করেছেন ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায়ও। দিন পনেরো পরে ফের সিরিজের শ্যুট শুরু মুম্বইয়ে। সেখানে অংশ নেবেন যিশু, খরাজ।
করিশ্মা ছাড়াও কলকাতার শ্যুটে অংশ নিয়েছেন হেলেন, সোনি রাজদান। অভীক বড়ুয়ার ‘সিটি অফ ডেথ’ অবলম্বনে তৈরি এই সিরিজের সিংহভাগ জুড়ে কলকাতা। যদিও ১৫ এপ্রিল সিরিজের প্রথম শ্যুট হয়েছিল মুম্বইয়ে। গুঞ্জন, করিশ্মাকে নাকি গল্পে গোয়েন্দার ভূমিকায় দেখা যাবে। যদিও সেই সম্ভাবনা নস্যাৎ করেছেন অভিনেত্রীরই এক ঘনিষ্ঠ সূত্র। জানা গিয়েছে, সিরিজের রহস্য এক কিস্তিতেই শেষ হবে নাকি পরের সিজনে, সেটাই ঠিক হয়নি এখনও।