ভ্যানের মধ্যে শৌচালয়ে যে জেট স্প্রে ব্যবহার করছেন কঙ্গনা, সেটি কোন সংস্থার হবে তা-ও বলে দিয়েছিলেন নিজেই। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভ্যানিটি ভ্যান বা মেকআপ ভ্যান কাকে বলে, তা কয়েক দশক আগেও জানত না বলিউড ইন্ডাস্ট্রি। আরাম, স্বাচ্ছন্দ্য, নিরাপত্তার জন্য এই সময়ে প্রায় সব তারকাই নিজস্ব ভ্রাম্যমান কেবিন বা ভ্যানিটি ভ্যান ব্যবহার করেন। সেখানেও আভিজাত্য প্রদর্শনের লড়াই। অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের ব্যবহৃত ভ্যানিটি ভ্যানটিই এই মুহূর্তে সবচেয়ে দামি। মূল্য প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা।
এই ভ্যানিটি ভ্যানটি বানিয়েছেন কেতন রাভল। শুধু কঙ্গনাই নন, কেতনের তৈরি ভ্যানিটি ভ্যান ব্যবহার করেন আরও অনেক অভিনেতা, আম্বানি পরিবারের সদস্যরা। এমনকি মুম্বই পুলিশও তার বাইরে নয়।
কেতন জানান, “কঙ্গনা তাঁর ভ্যানিটি ভ্যানটিকে একটি সাবেকি চেহারা দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর বাড়ির নকশার মতোই সাজাতে চেয়েছিলেন। সেখানে সোফা থাকবে, ভাল কাঠের তৈরি খোদাই করা চেয়ার থাকবে। আমরা চেয়েছিলাম, ভ্যানিটি ভ্যানে যেন তিনি বাড়ির মতো অনুভূতি পান।”
কেতন আরও জানান, ভ্যানের মধ্যে শৌচালয়ে যে জেট স্প্রে ব্যবহার করছেন কঙ্গনা, সেটি কোন সংস্থার হবে তা-ও বলে দিয়েছিলেন নিজেই। কঙ্গনার ভীষণ পছন্দ কেতনের বানানো ভ্যানিটি ভ্যান। সব সময় ব্যবহার করেন। তবে কেতন জানান, কঙ্গনার মনের মতো করে সেটাকে সাজিয়ে তুলতে খরচ পড়েছে ৬৫ লক্ষ টাকা!
২০১৬ সালে নেহা ধূপিয়ার ‘নো ফিল্টার উইথ নেহা’ অনুষ্ঠানে এসে কঙ্গনা জানিয়েছিলেন, অরুণাচল প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় রঙ্গুন-এর শুটিং করছিলেন তাঁরা, সেখানে রেস্তরাঁ ছিল না, বিশ্রামের জায়গা ছিল না। রাস্তার ধারে প্রস্রাব করতে হয়েছিল।
ভ্যানিটি ভ্যান এই ধরনের সঙ্কট দূর করেছে।
সব দিক বিবেচনা করেই ভ্যান বানান কেতন। তিনিই জানান, শাহরুখ খানের ভ্যানিটি ভ্যানটি এতটাই বড় যে, সব জায়গায় যেতেই পারে না সেটি। তাই মাপ ঠিক রেখে ভিতরটা বিলাসবহুল করে তোলেন তিনি।
ভ্যানিটি ভ্যানের ধারণা ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম নিয়ে আসেন অভিনেত্রী পুনম ধীলোঁ। সেটির উদ্বোধন করেন শ্রীদেবী, অনিল কপূর এবং অমিতাভ বচ্চন। ২০২১ সালে পুনম সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, “আমার কোনও ধারণাই ছিল না যে, আমি একটা ইতিহাস তৈরি করতে চলেছি। যখন প্রথম মেকআপ ভ্যানিটি ভ্যান নিয়ে আসি, অনেক শিল্পী আমাকে অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন এই ভ্যানিটি ভ্যানের ধারণা দেওয়ার জন্য।”
ভ্যানিটি ভ্যান আসার আগে সমস্যা ছিল বিস্তর।
পুনম লিখেছিলেন, “আউটডোর শুটিংয়ে অনেক সময়ে সমস্যায় পড়তে হত। জামাকাপড় বদলানোর, টয়লেট করার, খাবার খাওয়ার জায়গা থাকত না। রোদের তাপ এবং ময়লার মধ্যে শিল্পীদের থাকতে হত। ”