কঙ্গনা রানাউত।
শিবসেনার সঙ্গে প্রকাশ্যে সঙ্ঘাত, রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং দেশ জুড়ে চলা বিতর্কের মধ্যেই মুম্বই ছাড়লেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। কিন্তু যাওয়ার আগে টুইটে আরও একবারপাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করে গেলেন মুম্বইকে।
সোমবার সকালে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে কঙ্গনা লেখেন, “ভারাক্রান্ত হৃদয়ে মুম্বই ছাড়ছি। গত কয়েক দিন ধরে যে ভাবে আমাকে বারংবার আক্রমণ করা হচ্ছিল, ভয় দেখান হচ্ছিল, তাতে করে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা একেবারেই যথার্থ ছিল।”
ইতিমধ্যেই চণ্ডীগড় পৌঁছে গিয়েছে কঙ্গনার উড়ান। এখান থেকেই হিমাচল প্রদেশের মানালিতে নিজের বাড়িতে যাবেন কঙ্গনা। তবে কঙ্গনার টুইট বাণ সেখানেও অব্যাহত। কঙ্গনা টুইটে জানান, চণ্ডীগড়ে পৌঁছন মাত্রই তাঁর নিরাপত্তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষ তাঁকে সাদরে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। আবারও শিবসেনাকে ‘সনিয়া সেনা’ বলে উল্লেখ করে কঙ্গনা লেখেন, “এই যাত্রায় বেঁচে গেলাম। একটা সময় ছিল যখন মুম্বইয়ে মায়ের স্পর্শ পেতাম। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তাতে আমি যে বেঁচে রয়েছি সেটাই আশ্চর্যের। আমি ভাগ্যবান। যে মুহূর্তে শিবসেনা সনিয়া (গাঁধী) সেনায় পরিণত হল সেই মুহূর্তে মুম্বইয়ের প্রশাসন সন্ত্রাসের আকার নিল।”
গত ৯ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ে আসেন কঙ্গনা। পালি হিলে তাঁর অফিস ভাঙাকে কেন্দ্র করে কঙ্গনা এবং শিবসেনার সঙ্ঘাত তীব্র আকার নিতে শুরু করে। প্রকাশ্যেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে টুইটে কঙ্গনা হুঁশিয়ারি দেন, “আজ আমার ঘর ভেঙেছে, কাল তোর অহঙ্কার ভাঙবে।’’
আরও পড়ুন- ‘নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি’, রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়ে বিস্ফোরক কঙ্গনা
এখানেই শেষ নয়, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর নাম জড়িয়ে জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী টুইটারে লেখেন, “যে বিচারধারা নিয়ে বালাসাহেব ঠাকরে শিবসেনা তৈরি করেছিলেন, আজ ক্ষমতার লোভে সেই বিচারধারাকে বিক্রি করে শিবসেনা হয়ে গিয়েছে সনিয়া-সেনা।’’এখানেই থামেননি কঙ্গনা। নাম না-করে উদ্ধবের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘‘তোমার বাবার ভাল কাজ তোমায় ঐশ্বর্য দিতে পারে, কিন্তু সম্মান তোমায় নিজেকে অর্জন করতে হবে। আমার মুখ বন্ধ করলেও আমার আওয়াজ লাখো মানুষের মুখে ঘুরবে। কত জনের মুখ বন্ধ করবে? কত দিন সত্যিটা থেকে পালাবে, (যে) তুমি কিছুই না। স্রেফ বংশানুক্রমের একটি উদারহণ।’’
অন্য দিকে, প্রথম থেকেই এ ব্যাপারে চুপ ছিলেন উদ্ধব ঠাকরে। তবে রবিবার তিনি বলেন, “আমি রাজনীতি নিয়ে কথা বলব না। এটা ঠিক, মহারাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমার নীরবতার অর্থ এই নয় যে, আমার কাছে উত্তর নেই।’’ পাশপাশি, কঙ্গনাও রবিবার বিকেলে দেখা করেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিংহ কোশিয়ারির সঙ্গে। মিনিট কুড়ি রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেন কঙ্গনা। সঙ্গে ছিলেন দিদি রঙ্গোলি চান্দেল। পরে টুইটারে কঙ্গনা লেখেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, আমি ন্যায়বিচার পাব।’’
এই আবহেই কঙ্গনা আচমকা মুম্বই ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে উঠছে প্রশ্ন।