‘মার্ডার’ সিনেমার নাম বললে প্রথমেই মনে আসে মল্লিকা শেরাওয়াতের কথা। কিন্তু মল্লিকা শেরাওয়াত যে শুধুমাত্র বলিউডে কাজ করেছেন, এমনটা কিন্তু নয়। মজা করে অনেকেই বলছেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে তাঁর যোগ আছে। কিন্তু কেন?
প্রেসিডেন্ট পদে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন যাঁকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করেছেন, সেই কমলা হ্যারিসের অনুকরণে তৈরি একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মল্লিকা!
ছবিটির নাম ছিল ‘পলিটিক্স অব লাভ’। আর এই ছবির ট্যাগলাইনও কিন্তু বাজিমাত করেছিল। তাতেও ছিল খানিকটা অন্যরকম ব্যাপার। ‘পলিটিক্স হ্যাজ নেভার বিন দিস সেক্সি’, এই ট্যাগলাইনের হলিউড ছবিতে প্রথম পছন্দ ছিলেন মল্লিকা। ছবিতে একেবারে ভিন্ন ধারার একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
মার্কিন গণমাধ্যম কমলাকে বলছে ‘নারী ওবামা’। ‘কালো’, ‘প্রথম’ বিশেষণগুলো ফিরে আসছে বার বার। কমলা হ্যারিস অবশ্য স্বভাবসিদ্ধ আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে উড়িয়ে দিচ্ছেন সব জাতি ও সম্প্রদায়গত ছাঁচ। আর এই ব্যক্তিত্বময়ী নারীর চরিত্র অনুসরণেই এই ছবিতে মূল চরিত্রে কাজ করেন মল্লিকা।
২০১১ সালে মল্লিকা হলিউডে পা রাখেন লাভ বারাক-পলিটিক্স অব লাভ ছবির মাধ্যমে। তাঁর চরিত্রের নাম ছিল আরেথা গুপ্ত। যিনি ওবামার হয়ে প্রচার করছেন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেই, কিন্তু তিনি প্রেমে পড়ে যাচ্ছেন বিপরীত মেরুর রাজনীতির এক স্বেচ্ছাসেবক প্রচারকের।
উইলিয়াম ডিয়ার পরিচালিত ছবিতে মল্লিকা থুরি আরেথার কাজ ছিল ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ওবামার হয়ে প্রচার করা। কিন্তু জগিং করতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় কাইল ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে, যিনি জন ম্যাককেইন অর্থাত্ রিপাবলিকানের হয়ে প্রচার করছেন।
ব্রায়ান জে হোয়াইটের সঙ্গে শেরাওয়াতের এই জুটিকে রোমিও-জুলিয়েট স্টাইল বলা হয়েছিল হলিউডের পত্রপত্রিকাতেও।
ছবিটির শুটের আগেই ২০০৯ সালের জুন মাসে মল্লিকা নিজেই জানিয়েছিলেন, কমলা হ্যারিসের অনুকরণে এই চরিত্রটি অসাধারণ।
কমলার লেখা বই, কমলা মানুষটা কেমন এ নিয়ে বিস্তর পড়াশোনা করেছিলেন মল্লিকা। কমলার অতীত কেমন, কমলার কেরিয়ার গ্রাফ কেমন সবটা নিয়েই গবেষণা করেছিলেন অভিনেত্রী, এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি।
মল্লিকা তাঁর ব্লগে লেখেন, কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকাকে নিয়ে পড়াশোনা করছেন তিনি। অভিনেত্রী বলেন, তাঁর কাছে সেই জানা ছিল, ‘কুলেস্ট কালচারাল এক্সপেরিয়েন্স‘।
মল্লিকার নাকি তখনও ধারণা ছিল না, যে ওবামা ভোটে নির্বাচিত হয়ে এলেন, সেই নির্বাচনের কতটা প্রভাব পড়েছিল ভারতে।
মল্লিকা উল্লেখ করেছিলেন ইন্দো-মার্কিন মহিলার চরিত্রে তিনি কাজ করেছেন। এই চরিত্রটিকে ফিমেল ওবামা বলে উল্লেখ করেন তিনি নিজের ব্লগে। কৃষ্ণাঙ্গ রিপাবলিকানের প্রেমে পড়ছে সেই মহিলা এমনটাও জানিয়েছিলেন।
গসপেল চার্চিং, হিপহপ ক্লাস একই সঙ্গে স্ল্যাঙ্গুয়েজের (অশ্লীলভাষায়) পাঠ নিয়েছিলেন মল্লিকা এই চরিত্রের কারণে।
কান চলচ্চিত্র উত্সবে এই ছবির পোস্টার মুক্তি পায় ২০১০ সালে। তবে ছবিটা নিয়ে এত চর্চা করেও লাভ হল না। ২০১১ সালে মুক্তি পেতেই বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে এটি।
যদিও এই চরিত্রে অভিনয়ের কারণে হলিউডে পরিচিতি পেয়েছিলেন মল্লিকা। ‘দ্য মিথ’ ছবিতে জ্যাকি চ্যানের বিপরীতে কাজ করেছিলেন তিনি।
লস অ্যাঞ্জেলসে থাকতেও শুরু করেছিলেন সেই সময়। ডেভিড লিঞ্চের কন্যা জেনিফার লিঞ্চের পরিচালনায় ‘হিস’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করেন মল্লিকা।
নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনায় ক্ষমাহীন কমলা। জীবনের অনেকটা অংশ শক্ত মুঠিতে সামলেছেন ‘সেক্স ক্রাইম’। মেয়েদের পুনর্বাসন সংক্রান্ত কাজ করতে দেখা যায় মল্লিকাকেও। দু’জনের মধ্যে তেমন কোনও মিল নেই ঠিকই। কিন্তু দুজনেই স্বতন্ত্র, নিজের কাজের সঙ্গে আপস পছন্দ করেন না কেউই।