(বাঁ দিকে) শাহরুখ খান। চিকিৎসক কাফিল খান (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
দেশে এখন ‘জওয়ান’-এর জমানা। গত ৭ সেপ্টেম্বর মুক্তির পর থেকেই ‘জওয়ান’ জ্বরে কাবু গোটা দেশের দর্শক। শাহরুখ খানের প্রথম প্যান ইন্ডিয়ান ছবির বক্স অফিস ব্যবসাতেই মিলেছে তার প্রমাণ। মুক্তির প্রথম সপ্তাহান্তেই আড়াইশো কোটির ব্যবসা ছাড়িয়ে গিয়েছে অ্যাটলি পরিচালিত এই ছবি। শুধু তাই-ই নয়, বিশ্ব জুড়েও ৫০০ কোটির কাছাকাছি ব্যবসা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে ‘জওয়ান’। শাহরুখের প্রশংসায় পঞ্চমুখ দর্শক থেকে সমালোচকেরা। আপাদমস্তক বিনোদনের ছবির মধ্য দিয়ে যে সামাজিক দায়িত্ববোধের বার্তা দিতে চেয়েছেন শাহরুখ, তার তারিফ করেছেন সব পেশার নাগরিক। এ বার শাহরুখের ‘জওয়ান’-এর প্রশংসা করলেন এক নামজাদা চিকিৎসকও। শুধু প্রশংসাই নয়, ‘জওয়ান’-এর জন্য শাহরুখকে ধন্যবাদ জানালেন কাফিল খান।
সম্প্রতি সমাজমাধ্যমের পাতায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে গোরক্ষপুরের চিকিৎসক কাফিল লেখেন, “আমি এখনও ‘জওয়ান’ ছবিটা দেখিনি। তাই ছবি নিয়ে আমার বেশি কিছু বলা উচিত হবে না। কিন্তু অনেকেই আমায় ফোন এবং মেসেজ করে ছবির একটি বিশেষ দৃশ্যের কথা জানাচ্ছেন। তবে আমার মনে হয়, সিনেমার সঙ্গে বাস্তব জীবনের অনেক পার্থক্য রয়েছে। এই ছবিতে অপরাধী শাস্তি পেয়েছেন। বাস্তবে কিন্তু এখনও আমি এবং ওই শিশুদের পরিবার ন্যায়বিচারের জন্য দোরে দোরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। তবে তাঁদের ছবির মাধ্যমের এই গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বার্তাটি দেওয়ার জন্য অ্যাটলি এবং শাহরুখকে অনেক ধন্যবাদ।”
ছবিতে দেখা যায়, সান্যা মলহোত্র অভিনীত চরিত্র ইরম এক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। ওই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বহু অসুস্থ শিশু যাদের অক্সিজেন না দিতে পারলে বাঁচানো যাবে না। সেই সময় ওই হাসপাতালে অক্সিজেনের কোনও ব্যবস্থাই নেই। হাসপাতালের ডিনকে জানিয়েও কোনও সাহায্য পায় না ইরম। তার পর নিজের চেষ্টাতেই অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে সে। কিন্তু তত ক্ষণে শ্বাস থেমেছে ওই অসুস্থ শিশুদের। এর পর শিশুদের চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ আনা হয় ইরমের বিরুদ্ধে। জেলে ঠাঁই হয় তার।
‘জওয়ান’ ছবিতে দেখানো এই ঘটনার সঙ্গে অদ্ভুত মিল রয়েছে ২০১৭ সালে ঘটে যাওয়া গোরক্ষপুর কাণ্ডের। গোরক্ষপুরের বাবা রাঘব দাস (বিআরডি) মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক ছিলেন কাফিল। বকেয়া টাকা মেটাতে না পারায় হাসপাতালে সেই সময় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল অক্সিজেন সিলিন্ডারের সরবরাহ। চিকিৎসার অসুবিধার কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আনার চেষ্টা করেন কাফিল। তাতে লাভ তো কিছু হয়নি, বরং নিজের খরচে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে এসেও ৬৩ জন শিশুকে বাঁচাতে না পারায় কাফিলের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ন’মাস হাজতবাস পর্যন্ত হয়েছিল তাঁর।