Jyoti Goho on Rashid Khan

চার দশকের যুগলবন্দি ভাঙল আজ, রাশিদের মৃত্যু মানতে পারছেন না তাঁর জ্যোতিদা!

মাত্র ৫৬ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন উস্তাদ রাশিদ খান। তাঁর প্রয়াণে শোকগ্রস্ত সঙ্গীতমহল। তবে তাঁর মৃত্যুতে ভাঙল চার দশকের যৌথ সফর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:২৫
Share:

রাশিদ খানের স্মৃতিচারণায় হারমোনিয়াম শিল্পী জ্যোতি গোহো। ছবি: সংগৃহীত।

শিল্প মানেই এক সমবেত প্রচেষ্টা। একজন শিল্পী একা নন, বরং সমষ্টিগত প্রচেষ্টাতেই হয়ে ওঠেন উস্তাদ কিংবা ‘মায়েস্ত্রো’। মঙ্গলবার এমনই এক নক্ষত্রপতন হল শহর কলকাতার বুকে। মাত্র ৫৬ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের অন্যতম উজ্বল নক্ষত্র উস্তাদ রাশিদ খান। গত ২২ নভেম্বর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরে শিল্পী প্রস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন। এর মধ্যে সম্প্রতি তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) হয়। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি। দুপুর ৩টে ৪৫ নাগাদ প্রয়াত হলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে শেষ হল এক ৩৮ বছরের বন্ধুত্বের গল্প। রাশিদ নেই, এখনও যেন মানতে পারছেন না গায়কের জ্যোতিদা।

Advertisement

১৯৮১ সাল থেকে রাশিদের সঙ্গে তাঁর পথচলা শুরু। তিনি হারমোনিয়াম শিল্পী জ্যোতি গোহো। প্রায় চার দশক ধরে রাশিদের সঙ্গে হারমোনিয়ামে সঙ্গত করেছেন। তাঁর প্রয়াণের খবর শুনে দীর্ঘ এতগুলো বছরের স্মৃতিচারণ করলেন জ্যোতি। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘আমি এখনও ভাবতে পারছি না, ও নেই। ওর সঙ্গে আমার বহু বছরের সম্পর্ক। সেই আশির দশক থেকে শুরু। বহু বছর ধরে দেশ-বিদেশে এত জায়গায় আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি! আজ এত স্মৃতি ভিড় করে আসছে!’’ কণ্ঠ যেন বুজে এল তাঁর। এমন এক দিনে জ্যোতির কণ্ঠে বার বার ফিরে এসেছে মানুষ রাশিদের স্মৃতি। জ্যোতির কথায়, ‘‘ও কেমন গায়ক ছিল, সেটা ওর শ্রোতারা জানেন, নতুন করে আমার কিছু বলার নেই। মানুষ ও গান, দুটোই একই রকম ভাল— এমন লোকের সংখ্যা কম। রাশিদ যতটা শিল্পী, ততটাই ভাল মানুষ হিসেবে ভাল। গানবাজনা কমবেশি হতে পারে, তবে মানুষ ভাল হওয়াটা বিরল। রাশিদ খুব সোজা, সরল মনের মানুষ ছিল। আমরা যারা ওর সঙ্গে সঙ্গত করেছি প্রত্যেকের সঙ্গে সমান ভাবে মিশত। এত বড় শিল্পী কোনও দিনও নিজেকে জাহির করতে দেখিনি রাশিদকে।’’ সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার থেকে পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ সম্মান যেমন পেয়েছেন, বাংলা থেকেও পেয়েছেন বঙ্গবিভূষণ সম্মান। দেশে-বিদেশে যেখানেই গেয়েছেন, শ্রোতাদের মুগ্ধতার অভিব্যক্তিতে ভরে উঠেছে অনুষ্ঠান কক্ষ। তার পরেও নাকি বার বার জানতে চাইতেন তাঁর জ্যোতিদার কাছে, গানটা ঠিক হয়েছে কি না! তাই শেষে জ্যোতি বলেন, ‘‘অনুষ্ঠান শেষে আমাকে বলত, জ্যোতিদা গানটা ঠিক হয়েছে তো! আমি খানিক আশ্চর্যই হতাম। ওর গানের কোনও খুঁত বার করা কি সম্ভব! ও বলত, দর্শকেরা অনেক সময় আবেগে হাততালি দেয়, আমি আসল কথাটা শুনতে চাই। এই গুণটাই শিল্পীকে বড় করে তোলে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement