মঞ্চে বিবার
এই প্রজন্মের হার্টথ্রব তিনি। যতই রিহ্যাবে যান আর জেল খাটুন, ফেনোমেনার নাম জাস্টিন বিবার! তাঁর ভক্তরা ‘বিবারিয়ান’ নামে পরিচিত। ২৩ বছরের এই গায়ককে দেখলে বোঝা যায়, স্টারডম কাকে বলে। আমাদের দেশের খানেরা তো বটেই, টম ক্রুজও বিবারের কাছে হার মানবেন। নতুন অ্যালবাম ‘পারপাস’ উপলক্ষেই তাঁর এই ট্যুর। ভারতে আসার আগে দুবাইয়ে শ্রোতাদের মাতিয়ে এসেছেন।
বিবার ভারতে আসার আগে থেকেই তাঁর সঙ্গে মঞ্চে কে কে পারফর্ম করবেন, বলিউ়ডের কোন সেলেব থাকবেন, তা নিয়ে চর্চা চলছিল। তার উপর বিবারের নিজস্ব বায়নাক্কা তো আছেই। বিশেষ বিমানে নিজস্ব ক্রু নিয়ে এ দেশে এসেছেন। তাঁদের ব্যবস্থাপনা নিয়ে নির্দেশও দিয়েছেন বিবার। রোলস রয়েজ থেকে বিশেষ বাস, বিবারের চাহিদার তালিকা দীর্ঘ। কনসার্টে যাওয়ার আগে রিল্যাক্সেশনের জন্য তিনি কেরলের মাসাজও চেয়েছিলেন! ট্যানট্রামের দিক দিয়ে বিবারকে টেক্কা দেওয়া কঠিন। তবে আয়োজকেরা জানাচ্ছেন, তিনি নাকি বিশেষ কোনও ঝামেলা এ বার করেননি।
• বুধবার মধ্যরাতে বিশেষ বিমানে মুম্বই নামেন বিবার। রাত দেড়টার সময় তাঁকে বিমানবন্দরের কর্পোরেট গেট দিয়ে বের করে নিয়ে আসা হয়। পরনে হালকা গোলাপি জাম্পার আর কালো শর্টস। বিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বে সলমন খানের বডিগার্ড শেরা। ওই রাতেও হাজারখানেক ভক্ত সেখানে উপস্থিত!
• সকালে গিয়েছিলেন দুঃস্থ শিশুদের সঙ্গে দেখা করতে। হালকা রঙের টি-শার্ট আর সবুজ শর্টস পরে বিবার ফুটবল খেললেন বাচ্চাদের সঙ্গে। বেলা একটু গড়াতে হানা দিলেন কাছের এক শপিং মলে। গলা ভেজালেন কফিশপে।
এয়ারপোর্ট থেকে বেরোনোর সময়
• বিবার মঞ্চে ওঠেন রাত আটটায়। শ্রোতাদের জন্য স্টেডিয়ামের প্রবেশদ্বার খোলা হয় বেলা তিনটেতেই। বিবারিয়ানদের উন্মাদনা এতেই স্পষ্ট। বিবারও কম উৎসুক নন পারফর্ম করতে। টুইট করেছিলেন, ‘দুবাই ইজ ইনক্রেডিবল, ইন্ডিয়া, ইউ আর নেক্সট’।
• রেস্ত অনুযায়ী চার হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বিবারের কনসার্টে হাজির হয়েছিল জনতা। ৭৫ হাজার টাকার টিকিটে অবশ্য ব্যাকস্টেজের সফরও করা যাচ্ছিল। খরচের বহর এতেই শেষ নয়। স্টেডিয়াম জু়ড়ে খাবারের অজস্র স্টল। দামও চ়়ড়া।
আলিয়া
• বেলা গড়াতেই মালাইকা অরোরা, রবিনা টন্ডন, অর্জুন রামপাল বাচ্চাদের নিয়ে স্টেডিয়ামে হাজির। আলিয়া ভট্ট, জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজরা তো ছিলেনই।
• ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেই পারফর্ম করলেন বিবার। পেশাদার ফোটোগ্রাফারদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। তবে মোবাইলে আপত্তি ছিল না।
জ্যাকলিন
• ঠিক রাত ৮ টা ১৫য় স্টেজে ওঠেন বিবার। ‘হোয়্যার আর ইউ নাও’, ‘আই উইল শো ইউ’, ‘লেট মি লাভ ইউ’ পরপর হিট গানে মাতিয়ে দেন দর্শকদের। পারফরম্যান্সের মাঝে পোশাক বদলেছেন বারবার। কখনও সাদা-কালো জ্যাকেট। কখনও বেগুনি ডুয়ো টি। ঠিক রাত ১০টাতেই কনসার্ট থামিয়ে দেয় পুলিশ।
তার আগে অবশ্য বিবার জানান, এ দিন অনেক ‘কুল পিপল’-এর সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়েছে।
বিবারের মতো
তারকা হতে কে না চায়! সেই চাওয়া আর পাওয়ার মধ্যে দূরত্বটা কমিয়ে দিয়েছে ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্ম। জাস্টিন বিবারের জনপ্রিয়তাও তো ইউটিউব থেকেই। এক ট্যালেন্ট ম্যানেজার বিবারকে খুঁজে পান ইউটিউবের ভিডিয়ো দেখে... বাকিটা ইতিহাস। গায়িকা কার্লি রে জ্যাপসেন আর এ দেশের জোনিতা গাঁধীর উত্থানও কিন্তু ইউটিউব থেকেই।
জোনিতা গাঁধী
ইউটিউব সাফল্য থেকে বলিউড পাড়ির উদাহরণও কম নেই। জোনিতা প্রথমে জনপ্রিয় হয়েছেন ইউটিউবে, পরে বলিউডে। ইউটিউবে গানের কভার আপলোড করতেন জোনিতা। ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তাঁর ইউটিউব চ্যানেল। সুযোগ আসে ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’, ‘হাইওয়ে’, ‘ওকে কানমানি’ ছবির জন্য।
জোনিতা গাঁধী
শ্রদ্ধা শর্মা
ভারতের শ্রদ্ধা শর্মার গল্পটাও অনেকটা একই রকম। ‘দম মারো দম’ গানটা নিজের মতো করে গেয়ে ইউটিউবে আপলোড করে দিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। মিউজিক প্রোডিউসরদের নজরে আসতে সময় লাগেনি। অফারও পেয়েছিলেন জাস্টিন টিম্বারলেকের মিউজিক প্রোডিউসর জিম বিয়াঞ্জের সঙ্গে অ্যালবাম বানানোর।
কার্লি রে জ্যাপসেন
‘কানাডিয়ান আইডল’-এ তৃতীয় হয়েছিলেন কার্লি রে জ্যাপসেন। তাতে কেরিয়ারে যে তেমন কোনও সুবিধা হয়েছিল, তা নয়। ইন্ডিপেন্ডেন্ট রেকর্ড লেবেল থেকে অ্যালবাম রিলিজ করান। তাতেও সুবিধা হয়নি। ২০০৮ সালে জন ডেনভারের ‘সানশাইন অন মাই শোল্ডার’ গানের একটা কভার রেকর্ড করেন। জীবন ঘুরিয়ে দেয় ইউটিউব। তাঁর ‘কল মি মে বি’ সিঙ্গল ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।