jishu sengupta

Jisshu Sengupta: মেয়েরা তো সামনেই আসছে না, প্রেম করব কী করে: যিশু সেনগুপ্ত

প্রেম করছেন? কোনও মেয়ে সামনে আসেই না, আক্ষেপ যিশুর!

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:৫৪
Share:

যিশু সেনগুপ্ত। ফাইল চিত্র।

প্রশ্ন: আপনার এই কাঁচা পাকা দাড়ি দেখে লোকে তো জর্জ ক্লুনির সঙ্গে তুলনা করছেন?

Advertisement

যিশু: ওরে বাবা! এত ভাবি না।

প্রশ্ন: দাড়ির সঙ্গে জুড়েছে আপনি ‘বাবার মতো’। সব মেয়েদের বাবাসুলভ প্রেমিক হয়ে উঠছেন...

যিশু: সে তো ‘বাবা বেবি ও...’ ছবির গুণে।

প্রশ্ন: উইন্ডোজ বলেই অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় কাজ করলেন?

Advertisement

যিশু: দুটো কারণ। উইনডোজের ছবির বক্স অফিসের ইতিহাস আর ছবির চিত্রনাট্য। চিত্রনাট্য শুনেই জিনিয়া আর অরিত্রকে হ্যাঁ বলেছিলাম। ১০০ ছবি করা হয়ে গেল। তা-ও বলব এই ছবিটা কোথাও মনের মধ্যে থেকে গিয়েছে। এখন শ্যুটের পরে সব ছবির ক্ষেত্রে চরিত্র থেকে সরে আসি। এ ক্ষেত্রে এখনও ছবির মধ্যেই আছি মনে হচ্ছে।

প্রশ্ন: নতুন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করে কী মনে হল?

যিশু: অরিত্রর মনে পুরো ছবিটা থাকে। অভিনেতাদের মাঠে নামিয়ে ঠান্ডা মাথায় ও তাঁদের খেলতে দেয়। তবে ওকে আমি জ্বালিয়েছি।

প্রশ্ন: কোথায়? শুনেছি আপনি সেটে চমৎকার বাচ্চা সামলেছেন?

যিশু: করোনার সমস্ত নিয়ম মেনে শ্যুট করা হয়েছিল। বাচ্চাদের আলাদা জায়গা করা ছিল। সেখানে আমি ছাড়া আর কেউ ঢুকত না। আমিও ওদের সঙ্গে শ্যুট চলার সময়ে কারও সঙ্গে মিশিনি। শুধু ওদের দু’জনকে চটকাতাম।

প্রশ্ন: শ্যুট চলার সময় শুনেছি দুটো বাচ্চাকে সারা ক্ষণ হাতে ধরে থাকতে হত?

যিশু: হ্যাঁ। দু’জনকে দু’হাতে নিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। কোন মুহূর্তে ওরা কী করে উঠবে, তখনই সেটা তুলে রাখতে হবে। এক বার আমার শট চলছে। আমি সংলাপ বলছি। হঠাৎ দেখি এক জন দারুণ এক্সপ্রেশন দিচ্ছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে ইশারায় অরিত্রকে ক্যামেরা ঘোরাতে বলি। আমার থেকে ক্যামেরা সরিয়ে ওকে ফোকাস করা হয়। এ রকম করেই কাজ হয়েছে। খুব আদর করেছি দুটোকে। একটা সময় আমাকেই ওরা চিনতে পারত।

প্রশ্ন: শোলাঙ্কি তো নতুন...

যিশু: শোলাঙ্কি নতুন নয়। এটা বলা হচ্ছে, ওর প্রথম ছবি বলে। ও ধারাবাহিকে কাজ করে এসছে। আমিও কিন্তু তাই। যারা ধারাবাহিকে কাজ করে আসে, তারা কিন্তু পুরো তৈরি হয়ে আসে। একই জিনিস দিনের পর দিন ধারাবাহিকে করতে হয়। এটা ২৪ ঘণ্টার ওয়ার্কশপ।

প্রশ্ন: শোলাঙ্কির সঙ্গে প্রেম করে কেমন লাগল?

যিশু: ওই যে বললাম, শোলাঙ্কি তৈরি অভিনেত্রী। কোনও দৃশ্যে আমি কিছু বললে ও ঝট করে সেটা তুলে নিয়েছে। তবে এই অসম বয়সের প্রেম মানুষ পছন্দ করছে। এই তো শিবু আমায় বলল, “তোমাকে দারুণ লাগছে।” শিবু কিন্তু সচরাচর এমন বলে না। ওর কাছ থেকে কোনও ভাল মন্তব্য আসা একেবারে নোবেল পাওয়ার মতো। প্রশংসা পেতে কার না ভাল লাগে? আমারও ভাল লাগছে। তবে আমার আর শোলাঙ্কির প্রেম ছাড়াও এই যে দুই বাচ্চা, এখানেও কিন্তু চমক আছে।



প্রশ্ন: তারপর?

যিশু: না। তার পর খুব বেশি না। তবে হ্যাঁ।

প্রশ্ন: কী?

যিশু: ‘বাবা বেবি ও’ দেখে কারও যদি আমায় ভাল লাগে, তা হলে বলতে পারেন। কফি খেতে যেতে পারি।

‘বাবা বেবি ও...’ ছবির দৃশ্য।

প্রশ্ন: সারোগেসি?

যিশু: হ্যাঁ। এখনও এই বিষয় নিয়ে আমাদের দেশে নানা ছুঁৎমার্গ আছে। তবু প্রিয়ঙ্কা চোপড়া, তুষার কপূর থেকে কর্ণ জোহর, সবাই তো সারোগেসির সাহায্যে সন্তান এনেছেন।

প্রশ্ন: তবুও প্রিয়ঙ্কা চোপড়া সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান এনে সমালোচিত

যিশু: দেখুন যে সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা, তাতে আপনি কিছু না করলেও আপনার সমালোচনা হবে। আর খ্যাতনামী হলে তো কথাই নেই।

প্রশ্ন: চিরঞ্জীবি ‘বাবা বেবি ও...’র প্রশংসা করে টুইট করলেন। আর আপনি ট্রোলড হলেন...

যিশু: তাই তো বলছি। চিরঞ্জীবি স্যারের টুইটকে সম্মান জানিয়েছি। সেই টুইটে আমি ‘স্যার’ লিখিনি। তাতেই লোকজন ধুয়ে দিয়েছে আমায়। আমি যে ওঁকে সম্মান জানালাম, তাতে কিছু না। ‘স্যার’ কেন লিখিনি! আসলে নেটমাধ্যমে যারা নেতিবাচক মন্তব্য করে, তাদের ৮০ শতাংশ নেতিবাচক কথাই বলে। অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। তবে পড়ে খারাপও লাগে। কিন্তু ভাবি, যারা নেতিবাচক মন্তব্য করছে, তাদের মানসিক অবস্থা তো আমার চেয়েও খারাপ। ঈশ্বর তাদের মঙ্গল করুন।

প্রশ্ন:মহেশ ভট্টর সঙ্গে কাজ করা নিয়েও তো...

যিশু: হ্যাঁ। ‘সড়ক ২’র সময়ে লোকের কী রাগ! আমি কেন মহেশ ভট্টের সঙ্গে কাজ করেছি? নানা রকম মন্তব্য করে জীবন অতিষ্ঠ করে দিয়েছিল আমার। আচ্ছা, আমার সংসার যারা চালায় না, আমার ইএমআই যারা দেয় না, তাদের কেন এত মাথা ব্যথা হবে? আর প্রচুর দর্শক ওই ছবিটা দেখেওছিল।

প্রশ্ন: ‘বাবা বেবি ও...’ সবাই দেখবে?

যিশু: আমার তো তা-ই মনে হচ্ছে। এটা প্রেমের ছবি। বয়সের ফারাকে প্রেম। মজা আছে। দুঃখ আছে। জ্ঞান দেওয়া নেই। ছবি দেখতে দেখতে মনে হবে, এই প্রেম কি পূর্ণতা পাবে?

প্রশ্ন: অনেক মেয়েরাই আজও প্রেমিকের মধ্যে বাবাকে খোঁজে...

যিশু: আমার বলতে কোনও দ্বিধা নেই যে আমার জীবনসঙ্গিনীর মধ্যে আমিও আমার মাকে খুঁজি। মায়ের হাতের রান্না কথাটা কেন বলি আমরা? দাম্পত্যে ঝগড়ার একটা মূল কারণই হল, মায়ের হাতের মতো রান্না না পাওয়া।

যিশু এবং নীলাঞ্জনা। ফাইল চিত্র।

প্রশ্ন: আপনার স্ত্রী নীলাঞ্জনার সঙ্গে এই নিয়ে ঝগড়া করেছেন?

যিশু: (হেসে) এটা আমায় করতে হয়নি। আমার মা নীলাঞ্জনাকে অনেক রান্না শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছে। ওর হাতেও মায়ের রান্নার স্বাদ পাই। তবে রান্না ভাল না হলে বলেও দিই, ‘মায়ের মতো হয়নি।’ আসলে পুরনো দিনটা আমার কাছে খুব মন ভাল করা বিষয়।

প্রশ্ন: নতুন এই ছবিতে পুরনো দিন ফিরে দেখা আছে?

যিশু: আছে। এই ছবিটাই পুরনো দিনের প্রেমের ছবির মতো। ‘ডিডিএলজে’, ‘কয়ামত সে কয়ামত তক’-এর মতো ছবিগুলোকে মনে করাবে। আমরা ৯০-এর দশকে এই সব ছবি দেখেই তো প্রেম করতে শিখেছিলাম!

প্রশ্ন: এখন প্রেম করছেন না?

যিশু: না। এখন কাজের সময়। ওই সব প্রেমের বয়স আছে নাকি!

প্রশ্ন: এ তো গতে বাঁধা উত্তর...

যিশু: না না। কোনও মেয়ে সামনে আসেই না। কিছু বলেই না। এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বলছি...

প্রশ্ন: ঠিক কী বলছেন বলুন তো?
যিশু: বলছি, আমার সঙ্গে দেখা করুন। কথা বলুন। মেয়েদের বলছি!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement