ভিভ রিচার্ডস, ফারহান আখতার প্রমুখের সঙ্গে জয়া।
হঠাৎ করে নীল আকাশে পাড়ি।
বুধবারের এক চোখধাঁধানো রাত...জেগে আছে ইংল্যান্ড।
আর আমি সেই মায়া রাতে নিজেই নিজের সঙ্গী।
বাংলাদেশ থেকে নন স্পোর্টস পারসোনালিটি হিসেবে আমার রাজকীয় আমন্ত্রণ এ বছরের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।
এক হোটেলে সব্বাই।
ভিভিয়ান রিচার্ডস, কেভিন পিটারসন, ব্রেট লি, অনিল কুম্বলে, মাহেলা জয়বর্ধনের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের সঙ্গে মালালা ইয়ুসুফজাই, ফারহান আখতারের মতো অন্য জগতের তারকারাও। আকালের সব আলো সে দিন যেন মাটিতে।
বাকিংহ্যাম প্যালেসের সামনের রাস্তায় ছোট্ট মাঠ করে সেখানে ৬০ সেকেন্ডের ক্রিকেট খেলা হল। বাকিংহাম প্যালেস! পা দিতেই কেমন যেন শিউরে উঠি। ইতিহাস আর ঐশ্বর্যের এমন মেলবন্ধনে চমক লাগে বারে বারে।
সবাই আমরা হোটেল ল্যাঙ্কাস্টরে উঠেছিলাম। হোটেল থেকে বেরিয়ে অনুষ্ঠানে যাব। সামনে ব্রেটলির সঙ্গে দেখা।
আরও পড়ুন, রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন সোনু নিগম?
সে দিন বৃষ্টি হয়ে ইংল্যান্ড একটু ঝাপসা। তার মাঝেই ব্রেটলি কথা বলার জন্য এগিয়ে এল। একরাশ কৌতূহল চোখেমুখে। আমাকে দেখেই বলল, ‘‘তুমি কি চিটাগং-এর না ঢাকার?’’ আমি বললাম, আমি দুই বাংলার। আমি কি আর নিজেকে ভাগ করে দেখতে পারি? দেখলাম, ঢাকায় খেলতে আসার সুবাদে ঢাকার পরিস্থিতি নিয়ে ও যথেষ্ট ওয়াকিবহাল।
অবশেষে দেখা হল আবার, আমাদের।
রিচার্ডস...আমাকে দেখে বলে উঠল রিচার্ডস, ‘‘দেখ, কুড়ি বছর হয়ে গেল!’’
সত্যি তো! বছর কুড়ি পরে। আসলে ’৯৯-এর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডে দেখেছিলাম ভিভ রিচার্ডসকে। আমি আর ও এক হসপিটালিটি বক্সে বসে সে বার প্রচুর খেলা দেখেছিলাম। আমার মনে আছে, সে বার পাকিস্তানকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। দেখলাম, ভিভের সব মনে আছে।
ব্রেট লি-র সঙ্গে জয়া।
মালালাকে দেখলাম। প্রশান্তির মাঝে কী দীপ্তিময়! কত স্বতঃস্ফুর্ত। অনেক কথা হল আমাদের। আমাকে দেখেই বললেন, ‘‘আমি জানি আপনি বাংলাদেশের অভিনেত্রী। আপনার অভিনয় দেখেছি।’’ মালালা তাঁর জোরালো বক্তব্যে জানিয়ে দিলেন, ‘মেয়েরা পারে না এমন কোনও কাজ হয় না। বহু সংখ্যক মেয়ের এখন খেলায় যোগদান করা উচিত। সময় হয়ে এসেছে।’
এ রকম একটা ঝকঝকে পরিসরে আমি প্রথম ক্রিকেট ব্যাট ধরলাম। ভাবতেও পারিনি কোনও দিন। সত্যি তো, কত পরিশ্রম, লড়াই করে মানুষ এই খেলার জায়গায় পৌঁছয়। ভাবলে এখনও উত্তেজনা হচ্ছে। ও রকম একটা জায়গায় আমি ক্রিকেটের ব্যাট ছুঁলাম। এটা যদিও একটা ফান গেমই ছিল। অনিল কুম্বলে আর ফারহান আখতার খেলল মজা করে।
আর আমি? জীবনের প্রথম ক্রিকেট ব্যাট ধরলাম বিশ্বকাপ ক্রিকেটে। এই মুহূর্তগুলোই বোধহয় চলার পথকে বর্ণময় করে তোলে।
আরও পড়ুন, সোশ্যাল মিডিয়ায় লুকিয়ে কাদের ওপর নজর রাখেন রণবীর?
যতই ক্রিকেট নিয়ে আপ্লুত হই না কেন, ফারহান আখতার, রিচার্ডসের সঙ্গে আড্ডায় কিন্তু ফুটবল নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। আমি যেমন আর্সেনালের ভক্ত। ফারহান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাপোর্টার। এই নিয়ে জোরদার আড্ডা হল। ফারহানের বউ অ্যাঙ্কারিং করছিলেন। সব মিলিয়ে বেশ অন্য রকম অনুভূতি।
আফগানিস্তানের গায়ক আরিয়ানের সঙ্গে আলাপ হল। গল্প হল। এই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী সভায় ‘গার্ল পাওয়ার’-কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।
বাকিংহ্যাম প্যালেসে গিয়ে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করলেন দশ দেশের ক্রিকেটাররা। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রিন্স হ্যারি ও ডিউক অব সাসেক্স।
অনুষ্ঠান শেষ। আমার কানে বাজতে থাকে এ বারের বিশ্বকাপের থিম সং। ‘stand by’ গানের সুর। কথা।
যে যার দেশে ফিরে আমরা সকলে বেঁধে বেঁধে পাশাপাশি থাকব তো?
(কোন সিনেমা বক্স অফিস মাত করল, কোন ছবি মুখ থুবড়ে পড়ল - বক্স অফিসের সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদন বিভাগ।)