রোহন ভট্টাচার্য।
জামাইষষ্ঠী বলতেপ্রথমেই মাথায় আসে মামারবাড়ি।ছোটবেলা থেকে ওইদিন মামারবাড়ি যেতাম। মামারবাড়ি যেতে খুব ভাল লাগত।সবসময় অপেক্ষায় থাকতাম কখন জামাইষষ্ঠী আসবে।মনে আছে, আমার দিদা তালপাতার পাখার উপর আম, দুর্বা, কড়ি, কচি বাঁশপাতা আর ছোট একপাত্র জল রাখতেন।ওই জলকে বলত ‘ষাটের জল’। ওই জল প্রথমে বাবার এবং পরে আমাদের সবার মাথায় দিয়ে দিদাশুভকামনা করতেন।তারপর প্রচুর খাওয়াদাওয়া হত।মাছ-মাংস ছাড়াও কত রকম পদ হত।দিদার জামাইষষ্ঠী পালন দেখতে দেখতে প্রচুর নিয়ম শিখে ফেলেছিলাম।
পরে যখন আমার ফিল্মে বা সিরিয়ালে জামাইষষ্ঠীর দৃশ্য এসেছে তখন নিয়ম জানাটা খুব কাজে লেগেছে।‘জামাই বরণ’ সিনেমায় বা ‘ভজ গোবিন্দ’ সিরিয়ালে জামাইষষ্ঠীর দৃশ্য এসেছে।তখন পরিচালক এবং আর্ট ডিপার্টমেন্টের সহকর্মীদের আমার অভিজ্ঞতা খুব কাজে লেগেছিল।
‘ভজ গোবিন্দ’সিরিয়ালে প্রচুর খাওয়াদাওয়ার সিন থাকতো। ‘পিটার ক্যাট’, ‘মোকাম্বো’— এইসব বড় রেস্তরাঁথেকে খাবার আসত।জামাইষষ্ঠীরদৃশ্যের জন্য ‘ভজহরি মান্না’, ‘সপ্তপদী’র মতোরেস্তরাঁ থেকে বাঙালি খাবার আসত।পোলাও, চিংড়ি মাছের মালাইকারি, মাটন এবং আরও নানা রকম বাঙালি পদ আসতো।এত ভাল ভাল পদ সামনে রেখে শুটিং করা খুব চাপের হয়ে যেত।খুব লোভে পড়ে যেতাম।শুটিং শেষ হলেই সবাই মিলে খাবারগুলো খেতাম।তবে শুটিং শেষ হওয়ার আগেও আমরা খেয়ে নিতাম। আমি, তরুণকুমারের নাতি সৌরভবন্দ্যোপাধ্যায়, কাঞ্চনা মৈত্র, সোমা চক্রবর্তী—সবাই মিলে খেয়ে নিতাম।‘ভজ গোবিন্দ’-তে এই চারজন ছিলাম পেটুক।সিনের মাঝখানেই আমরা খাবার খেয়ে নিতাম।পরিচালকের কাছে প্রচুর বকা খেয়েছি।উনি শুট শেষ হলেখেতে বলতেন।কাঞ্চনাদিমজাকরে বলতেন, ‘‘এতক্ষণ রাখলে ধুলো পড়ে খাবার নষ্ট হয়ে যাবে।তাই এখনই খেয়ে নিচ্ছি।’’
আরও পড়ুন- চব্বিশ বছরের বিবাহিত জীবনে এই প্রথম বাপের বাড়ি থেকে জামাইষষ্ঠীর তত্ত্ব এল না
‘ভজ গোবিন্দ’র জামাইষষ্ঠীরদৃশ্যসুন্দর করে সাজানো হয়েছিল।কোনও অনুষ্ঠানের দৃশ্য হলেই যেটা হয়, অনেকক্ষণ ধরে যত্ন নিয়ে শুট করতে হয়, অনেক খাটতেও হয়।এত খাটনির মধ্যেও খুব মজা করে জামাইষষ্ঠী শুট করেছিলাম।মেন কারণটা ছিল প্রচুর ভাল ভাল খাবারদাবার।
বাস্তব জীবনে জামাইষষ্ঠী কবে আসবে জানি না।এখনই বিয়ের প্ল্যান নেই।