jab harry met sejal movie review

মুভি রিভিউ: চেনা পথে ব্যাকগিয়ারেই রোমাঞ্চে ইতি

জার্নি আর ডেস্টিনেশনের এই ধাঁধাটা পছন্দ করেন ইমতিয়াজ আলি। তাঁর ছবিতেও তা আসে। জীবনে হোক বা সম্পর্কে। নতুন ছবি ‘জব হ্যারি মেট সেজল’-এও তিনি সেই ধারার ব্যতিক্রম করেননি।

Advertisement

সুজিষ্ণু মাহাতো

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ১৬:২৬
Share:

‘জব হ্যারি মেট সেজল’-এর পোস্টার। ছবি: ইমতিয়াজ আলির ইনস্টাগ্রাম পেজের সৌজন্যে।

জব হ্যারি মেট সেজল

Advertisement

পরিচালক: ইমতিয়াজ আলি

অভিনয়: শাহরুখ খান, অনুষ্কা শর্মা

Advertisement

গন্তব্যটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
নাকি যাত্রাটা?
কেউ বলবেন, গন্তব্যে না গেলে আর যাওয়ার মানে কী? কেউ বলবেন, শুধু গন্তব্যে যাওয়ার জন্যই যদি যাওয়া, তা হলে তো যাওয়ার অনুভূতিটাই বোঝা যায় না।
কারও আবার মনে হতে পারে, যাত্রাটাই তো গন্তব্য!

আরও পড়ুন, মেঘনাদ বধ রহস্য: ফের ছন্দ ভাঙলেন অনীক

জার্নি আর ডেস্টিনেশনের এই ধাঁধাটা পছন্দ করেন ইমতিয়াজ আলি। তাঁর ছবিতেও তা আসে। জীবনে হোক বা সম্পর্কে। নতুন ছবি ‘যব হ্যারি মেট সেজল’-এও তিনি সেই ধারার ব্যতিক্রম করেননি। ইওরোপে ট্যুর গাইড হ্যারি (শাহরুখ খান) ঘুরতে এসে এনগেজমেন্টের রিং হারিয়ে ফেলা সেজলের (অনুষ্কা শর্মা) সঙ্গী হয় এনগেজমেন্ট রিং খুঁজতে। সেই খোঁজাই আসলে হয়ে ওঠে হ্যারি আর সেজলের নিজেদের সত্তাকে খোঁজার যাত্রা।
আমাদের সকলের আসলে বহু সত্তা। আমরা দুনিয়ার সঙ্গে রোজকার যাপনের সুবিধায় বদলে বদলে নিতে থাকি সত্তাগুলোকে। রোজ রোজ নির্মাণ করি নতুন নতুন সত্তা। কিন্তু রোজকার জীবনের এই মেকি, নির্মিত সত্তার ভিড়ে আমরা হারিয়ে ফেলি নিজের প্রিয়, আপন সত্তাকে। যাকে সাজপোশাক পরিয়ে বাইরে আনতে হয় না। যে সত্তা আবরণ ও আভরণহীন, তাই পবিত্র। এই ‘সোল সার্চিং’ ইমতিয়াজের সিগনেচার।

আরও পড়ুন, অতিরিক্ত তথ্যেও সৎ প্রচেষ্টা

ইমতিয়াজের এই অভিযানে জাহাজের ক্যাপ্টেন শাহরুখ। তাঁর কাঁধেই জাহাজের ভার। কিং খানের সঙ্গে ইমতিয়াজ আগে ছবি করেননি। ডিয়ার জিন্দেগি, রইসের পর শাহরুখ আবার নিজের পুরনো ট্র্যাকে। প্রেমিক। চরিত্রে শাহরুখ নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। বয়স বাড়লেও তিনি স্ক্রিনে এখনও ওয়াইনের মতোই। অনুষ্কা পাল্লা দিয়েছেন প্রতি ফ্রেমে। শাহরুখের কাঠিন্য ও অনুষ্কার উচ্ছ্বলতা ’যব তক হ্যায় জান’-কে মনে পড়ায়।
কিন্তু শুধু ক্যাপ্টেন আর কত টানবেন? অযথা দীর্ঘ গল্প, দুর্বল চিত্রনাট্যের জন্য দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে গোটা ছবি যেন রাডারহীন জাহাজ। শাহরুখ-অনুষ্কার যে কেমিস্ট্রি গোটা প্রথমার্ধকে টানটান রাখে, যে কেমিস্ট্রি এই ছবিকে অন্য মাত্রা দিতে পারত, দ্বিতীয়ার্ধে তাঁদের সেই কথোপকথনই আর মন টানে না।

আরও পড়ুন, মুভি রিভিউ: ইন্দুর চোখে ইমার্জেন্সির স্বরূপ

এর একটা কারণ গল্পের অপ্রয়োজনীয় দৈর্ঘ্য ও অপ্রয়োজনীয় চরিত্রের আসা। পর্তুগালে অবৈধ বসবাসকারী বা ক্রিমিনাল হিসেবে যে ভাবে বিশেষত বাংলাভাষীদের এই ছবিতে স্টিরিওটাইপ করা হয়েছে, তা পরিচালকের কাছ থেকে আশা করা যায় না। শাহরুখের বাঙালি ফ্যানদের এতে ক্ষুব্ধ হওয়ারই কথা।

‘জব হ্যারি মেট সেজল’-ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: ইমতিয়াজের ইনস্টাগ্রাম পেজের সৌজন্যে।

প্রিতমের ‘রাধা’ আর ‘হাওয়ায়েঁ’ ছাড়া অন্য গান মনে থাকে না। বরং কে ইউ মোহাননের ক্যামেরায় ইওরোপের ঝাঁ চকচকে লোকেশনে শাহরুখ-অনুষ্কার জুটির গ্ল্যামার নজরকাড়া। কিন্তু ছবির শেষের দিকের গল্পের দিশাহারা অবস্থা সেই নজর ঘুরিয়ে দেয়। হ্যারি-সেজলের আলাদা হওয়ার পর ফিরে আসা দেখা যায়। কিন্তু কেন তারা এল, তাদের সেই তাগিদ আরও বিশদে দেখানোর প্রয়োজন ছিল।
ইমতিয়াজের এই ‘জার্নি’ তাই অচেনা পথে বেরিয়ে গিয়ে নিজে নিজে পথ চিনে ফেরার আনন্দ দিতে পারে না। বরং অচেনা পথে খানিক বেরিয়েও চেনা পথে ফিরে দ্রুত বাড়ি ফেরার রোমাঞ্চহীনতাতেই আটকে থাকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement