আইরিশ গায়িকা শনেড ও’কনর। ছবি: সংগৃহীত।
প্রয়াত গায়িকা ও গীতিকার শনেড ও’কনর। ৫৬ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন আইরিশ শিল্পী। বিবিসির তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে গায়িকার মৃত্যুর খবর। যদিও কী ভাবে মৃত্যু হল ৫৬ বছরের গায়িকার, তা খোলসা করা হয়নি। গত বছর জানুয়ারি মাসে মৃত্যু হয় শনেডের ১৭ বছরের ছেলে শেনের। তার পর থেকেই মানসিক কষ্টে ভুগছিলেন গায়িকা। সমাজমাধ্যমের পাতায় শেষ পোস্টেও প্রয়াত ছেলের কথাই উল্লেখ করেছিলেন শনেড।
১৯৬৬ সালের ৮ ডিসেম্বর আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে জন্ম শনেড ও’কনরের। কিশোর বয়স থেকেই গান লেখা ও গান গাওয়ার প্রতি ঝোঁক ছিল তাঁর। মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয় শনেডের। ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত ‘দ্য লায়ন অ্যান্ড দ্য কোবরা’ অ্যালবামের ‘ট্রয়’ গানটি সা়ড়া জাগিয়েছিল শ্রোতাদের মধ্যে। ১৯৯০ সালে প্রকাশিত অ্যালবাম ‘আই ডু নট ওয়ান্ট হোয়াট আই হ্যাভেন্ট গট’-এর মাধ্যমে বিশ্বজোড়া জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শনেড। বিশেষত, শনেডের গলায় আমেরিকান তারকা প্রিন্সের ‘নাথিং কমপেয়ার্স টু ইউ’ গানটির সংস্করণ নজর কেড়েছিল অনুরাগীদের। গানটির মিউজ়িক ভিডিয়োয় একটি গলাবন্ধ সোয়েটার ও মিলিটারিদের আদলে ছোট ছোট করে কাটা চুলে দেখা গিয়েছিল শনেডকে। তাঁর এই অবতার বেশ জনপ্রিয়ও হয়েছিল অনুরাগীদের মধ্যে। পরবর্তী কালে বেশির ভাগ সময়েই এই সাজপোশাকেই দেখা যেত শনেডকে।
গান ছাড়াও বিতর্কে ভরা ছিল শনেডের জীবন। ‘স্যাটারডে নাইট লাইভ’ তথা ‘এসএনএল’ অনুষ্ঠানে পোপের ছবি ছিঁড়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি করেছিলেন গায়িকা। পরে অবশ্য একটি লাতিন চার্চের ‘প্রিস্ট’ হিসাবে দীক্ষিত হয়েছিলেন তিনি। গান লেখা ও গাওয়ার পাশাপাশি নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ও সেই সংক্রান্ত লড়াই নিয়ে জনসমক্ষে মুখ খুলেছেন শনে়ড। বাইপোলার ডিসঅর্ডার ও পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস সিনড্রোমের সঙ্গে তাঁর লড়াই নিয়ে একাধিক বার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন শনেড। এমনকি, তিনি এও জানিয়েছিলেন যে, এই লড়াইয়ের সঙ্গে যুঝতে না পেরে বার কয়েক নিজেকে শেষ করে ফেলার কথাও ভেবেছিলেন তিনি। ২০২১ সালে প্রকাশিত আত্মজীবনী ‘রিমেম্বারিংস’-এ নিজের জীবনের এই কঠিন অধ্যায়ের বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন গায়িকা। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে শনে়ড জানান, তাঁর ১৭ বছর বয়সি ছেলে শেন আত্মহত্যা করেছে। শেনের প্রয়াণের পর থেকেই আরও কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল শনেডের মানসিক কষ্ট। গত দেড় বছরের বার বার শেনকেও স্মরণ করেছেন তিনি। এমনকি, মৃত্যুর আগে সমাজমাধ্যমের পাতায় শনডের শেষ পোস্ট শেনকে ঘিরেই।