বইয়ের বিষয় হিসেবে হঠাৎ রেখাকে বাছলেন কেন?
বছর দুয়েক আগে যখন রাজেশ খন্নাকে নিয়ে বই লিখলাম, তখনই মনে হয়েছিল রেখার ওপরও একটা বই লেখা দরকার। যে মানুষটা আজীবন ‘ডিভা’ হয়ে থেকে গেলেন, তাঁর জীবনের নিঃসঙ্গতা, একাকীত্বের গল্পগুলোও বলার প্রয়োজন আছে। তাই এই বই। তবে আক্ষেপ একটাই—রেখার সঙ্গে কথা বলা গেল না। তাহলে হয়তো আরও অনেক দিক উন্মোচিত হতো। বইটা কমপ্লিট হতো তা হলে।
এখন কমপ্লিট নয় বলছেন?
দেখুন, আমাদের দেশে ফিল্মের বা তারকাদের নিয়ে গল্পের বই প্রচুর আছে, কিন্তু তাদের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা কোনও দিনই হয়নি। কেউ নজরও দেননি। আমি একবারও বলছি না যে আমার কাজটা ফুলপ্রুফ। কিন্তু যতটা পেরেছি, চেষ্টা তো করেছি ডকুমেন্টেশন করার। অন্যরা আসুক, ভুল ধরিয়ে দিক। আরও নতুন কাজ শুরু হোক না বলিউডের সুপার হিরোইনকে নিয়ে!
যাঁকে নিয়ে একটা আস্ত বই লিখে ফেললেন, সেই রেখার সঙ্গে কথা হয়েছে কখনও?
না, আমার সঙ্গে রেখার সরাসরি কথা হয়নি। অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু হয়ে ওঠেনি। চেন্নাই থেকে মুম্বই আসা, বলিউডে পা রাখা, অন্যায়, অত্যাচার—সবই তো ওঁরই গল্প। রেখা নিজে কথা না বললেও, আমি ওঁর সমস্ত প্রকাশিত ইন্টারভিউ ও রেকর্ডিং সংগ্রহ করেছি, তারপর সেগুলোকে খুঁটিয়ে পড়েছি। কথা বলেছি সেই সময়ের মানুষজনের সঙ্গে...
তাঁরা কারা?
লম্বা লিস্ট। গুলজার, মুজফ্ফর আলি, শ্যাম বেনেগল। ওঁরা প্রত্যেকেই রেখার সঙ্গে কাজ করেছেন, ব্যক্তিগত স্তরে মেলামেশা করেছেন। এছাড়াও একাধিক প্রযোজকের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি, জানতে চেয়েছি রেখার জীবন সম্পর্কে। কেউ কেউ বিতর্ক এড়াতে মুখ খোলেননি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই সাহায্য করেছেন। কেরিয়ার হোক বা অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে সম্পর্ক—সবই তো ওই মানুষগুলোর কাছ থেকেই শোনা।
ইয়াসির উসমান
আপনার বইয়ের অনেকটা জুড়ে আছে অমিতাভ-রেখার সম্পর্ক। বিগ বি-র সঙ্গে কথা হয়েছে?
না, ডেলিবারেটলিই বলিনি। যে মানুষটা কোনও দিনই রেখার সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করেননি, তাঁর সঙ্গে কথা বলে কী লাভ?
আপনার বই তো ইতিমধ্যেই শোরগোল ফেলে দিয়েছে। বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের একটি চুম্বন দৃশ্য নিয়ে...
(থামিয়ে) রেখা নিজের মুখে না বললেও কেউ কি অস্বীকার করতে পারবে যে ১৪ বছর বয়সে রেখাকে জোর করে চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করানো হয়েছিল ‘আনজানা সফর’ ছবিতে? এই তথ্যগুলো তো অস্বীকার করার জো নেই।
শুনলাম, বিশ্বজিৎ এখন সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন, তবে আমি জানি না কেনই বা তিনি এ কথা বলেছেন। আমার কাছে ওঁর তখনকার একটি ইন্টারভিউ রেকর্ড করা আছে, যেখানে উনি এই বিষয়টি স্বীকার করেছিলেন। আই হ্যাভ দ্যাট প্রুফ।
(একটু উত্তেজিত হয়ে) আর দেখুন, বিষয়টা তো এখানে রেখা বনাম বিশ্বজিৎ নয়। একজন ১৪ বছরের মেয়ের সঙ্গে যা করা হয়েছিল, সেটা অপরাধ। কাউকে জোর করে চুমু খাওয়ানো যায় না। আমি সেটাই বলতে চেয়েছি এখানে।