স্বরা
প্র: অতিমারি পরিস্থিতিতে দিল্লির বাড়িতে আপনি। সময় ভাল কাটছে?
উ: লকডাউনের প্রথম দু’মাস মুম্বইয়ে ছিলাম। তার পরে মায়ের কাঁধে চোট লাগে। তাই ড্রাইভ করে দিল্লি এসেছিলাম। মায়ের এখনও ফিজ়িয়োথেরাপি চলছে। তার পর থেকে এখানেই রয়েছি।
প্র: ওয়েব সিরিজ় ‘ফ্লেশ’-এ আপনি এক দুঁদে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে। কতটা চ্যালেঞ্জিং চরিত্রটা?
উ: গল্পে একটি মেয়েকে অপহরণ করা হয়, যে এনআরআই। তাকে উদ্ধার করার জন্য আমার চরিত্রটি (রাধা) চেজ় শুরু করে। সেই জার্নিতে রাধা আবিষ্কার করতে থাকে নারী-পাচার চক্রের বৃহত্তর জগৎ। শোয়ে এই দুনিয়াটাকে খুঁটিয়ে দেখানো হয়েছে।
প্র: বিষয়গত সাদৃশ্যের জন্যই সাম্প্রতিক ছবি ‘লাভ সোনিয়া’, ‘মর্দানী’র সঙ্গে এই সিরিজ়ের ট্রেলারের মিল রয়েছে। সে ক্ষেত্রে দর্শক নতুন কী আশা করতে পারেন এই সিরিজ় থেকে?
উ: ‘মর্দানী’ বা ‘লাভ সোনিয়া’র গল্প খুব ফোকাসড। ওখানে মূলত অপরাধীকে চেজ় করার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে নারী-পাচার চক্র কী ভাবে অপারেট করে, তার অনেক ডিটেল দেখানো হয়েছে। বিশেষত, সুশীল সমাজ এই চক্রকে কী ভাবে মদত জোগায়, তা ফুটে উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রেই একটা মেয়েকে প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলার কাজে যুক্ত থাকে কয়েক জন আপাত নিরীহ মানুষ। গৃহবধূরাও কী ভাবে এই নেক্সাসের সঙ্গে জড়িত, তা এই সিরিজ়ে উঠে এসেছে।
প্র: মাসকয়েক আগে মুক্তি পাওয়া আপনার সিরিজ় ‘রসভরী’ তার কনটেন্টের জন্য সমালোচিত হয়েছে। আপনি কি কাজটা করে গর্বিত?
উ: যে কাজই করি, তার জন্য আমি গর্বিত। যারা এই শোয়ের সমালোচনা করেছে, তারা কনটেন্টের জন্য করেনি। আমি যা-ই করি, তাতেই তারা আপত্তি তোলে, ট্রোল করে। এবং এই পুরো প্রসেসটা অর্গানাইজ়ড, স্পনসরড! নির্দিষ্ট কিছু আইটি সেলও যুক্ত এর সঙ্গে। যাঁরা সত্যিই সিরিজ়টা দেখেছেন, তাঁদের ভাল লেগেছে। অ্যামাজ়ন প্রাইমের সবচেয়ে বেশি দেখা শো গুলোর মধ্যে এটি একটি।
প্র: বড় পর্দার চেয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম কি বেশি এক্সপ্লোর করার সুযোগ দিচ্ছে?
উ: এই পরিস্থিতিতে আর কোনও অপশন তো নেই! অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয়কুমারের মতো তারকাদেরও ওটিটি প্ল্যাটফর্মেই দেখতে হচ্ছে এখন। টেকনোলজির কাজ হচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানুষকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করা। শিল্পী হিসেবেও যেন আমরা আরও ভাল কাজ করতে পারি, সেই সুযোগ করে দেওয়া। ওটিটি নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। ২০১৮ সালে বড় পর্দায় ‘বীরে দি ওয়েডিং’ মুক্তি পেয়েছিল। হিট হয়েছিল। আবার ওই বছরেই ওটিটিতে আমার সিরিজ় এসেছিল, ‘ইটস নট দ্যাট সিম্পল’। আমার কেরিয়ারে ওটিটি আর বড় পর্দার ঠিকঠাক ব্যালান্স রয়েছে (হাসি)।
প্র: সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বিবিধ বিষয় নিয়ে কথা চলছে। নেপোটিজ়ম, ইনসাইডার-আউটসাইডার বিতর্ক, যোগ্যদের বঞ্চিত করা... এই চর্চা আদৌ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডাস্ট্রির জন্য?
উ: যে কোনও বিষয়ে কথোপকথন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কথা বলা এক জিনিস। আর সেই কথার স্রোত যখন একতরফা অভিযোগ তোলা, আলটপকা মন্তব্য, ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্বের প্রচারে পর্যবসিত হয়, তখন আর কথার পর্যায়ে থাকে না। ইন্ডাস্ট্রিতে এই মুহূর্তে যা চলছে, তা সুস্থ কথা বলার পরিসর নয়। বলিউডের উপরে নাগাড়ে একতরফা আক্রমণ চালানো হচ্ছে। দর্শকের জানা উচিত, অনেক বিষয়েই উপযুক্ত তথ্য ছাড়া অভিযোগ তোলা হচ্ছে। যারা করছে, তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থও জড়িত। আর টেলিভিশনের পর্দায় বলা হচ্ছে মানেই সেটা সত্যি, এমন মনে করার কারণ নেই।
প্র: নিজেকে কখনও আউটসাইডার মনে হয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে?
উ: আমার মতে, এই প্রশ্নটির প্রাসঙ্গিকতা এখন আমার কাছে নেই। কারণ আউটসাইডার হওয়ার পরেও আমার এই বছরে একাধিক রিলিজ় রয়েছে। অতিমারির বছরে খুব কম শিল্পীর ক্ষেত্রেই এটা হচ্ছে। আমি খুবই খুশি ও কৃতজ্ঞ। ইন্ডাস্ট্রিতে আমার কোনও গডফাদার নেই। মুম্বইয়ে আমি একাই থাকি। তার পরেও প্রিমিয়াম ওটিটি প্ল্যাটফর্মে যখন পরপর কাজ পেয়েছি, আমি তার জন্য গর্বিত। আমি এই খুশি সেলিব্রেট করতে চাই।
প্র: হিন্দি ছবির অভিনেত্রী না একজন সাহসী স্পষ্টবক্তা... কী ভাবে দর্শকের মনে বেশি ছাপ ফেলতে চান?
উ: একজন ভাল অভিনেত্রী যে তার আর্টের মাধ্যমে সমাজের সঙ্গে একাত্ম হতে পেরেছে... এ ভাবে দর্শকের মনে থাকতে চাই।