মিমির সঙ্গে দেখা হলে কথা বলেন তিনি।
প্র: বিয়ের পর প্রথম ছবি কি একটু বেশি স্পেশ্যাল?
উ: এই প্রশ্নটাতেই আমার আপত্তি। ছেলেদের কিন্তু সচরাচর এই প্রশ্ন করা হয় না। তবে আমার কেরিয়ারে ‘পরিণীতা’ গুরুত্বপূর্ণ ও স্পেশ্যাল।
প্র: কেন?
উ: আমি এই ধরনের সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। দর্শকের কাছে প্রমাণ করার ছিল যে, আমি অভিনয় ভালবাসি ও সেটা করতেও পারি। মেহুলের চরিত্রে এত ধরনের পারফরম্যান্সের সুযোগ পেয়েছি যে, অনেক কিছু শিখেছি।
প্র: শুভশ্রী মানে গ্ল্যামারাস ও ভাল নাচতে পারে, এমন চরিত্র। এত বছরের কেরিয়ারে কি তবে ক্ষেত্র বিশেষে অভিনয় গৌণ হয়ে গিয়েছিল?
উ: আমরা সকলে যে ফিল্ডে আছি, সেখানে অন্য ধরনের কিছু করতে চাই। সাফল্য পাই বা না পাই, অন্তত চেষ্টা করি। আমি এত দিন যে ছবিগুলো করেছি, তার জন্যই আমি শুভশ্রী। সেগুলো করাও সহজ ছিল না। তবে সময়ের সঙ্গে শিল্পী হিসেবে পরিণত হয়েছি। অনেক দিন ধরে সচেতন ভাবে একটা সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। এর আগে ‘দেখ কেমন লাগে’, ‘আমার আপনজন’ বা ‘হনিমুন’-এ আমার চরিত্রের গুরুত্ব ছিল। তাই জার্নি অনেক দিন আগেই শুরু হয়েছে। তবে মেহুলের ক্ষেত্রে পরিবর্তনটা চোখে বেশি পড়ছে।
প্র: মেহুল চরিত্রটি কী শিখিয়েছে?
উ: প্রথম বার আবিষ্কার করলাম, চরিত্রের মধ্যে কী ভাবে সারাক্ষণ ডুবে ছিলাম। আমার বডি ল্যাঙ্গোয়েজ বদলে গিয়েছিল। পরে যখন ভেবেছি, তখন মনে হয়েছে, ওই ক’টা দিন আমি শুভশ্রী ছিলাম না। চরিত্রকে কী ভাবে জীবন্ত করতে হয়, সেটা মেহুল আমাকে শিখিয়েছে।
প্র: রিয়্যালিটি শোয়ের বিচারক হিসেবে ছোট পর্দায়ও কাজ করেছেন। নায়িকার ইমেজ তাতে ধাক্কা খেল না?
উ: ওখানে তো চরিত্র হিসেবে নয়, শুভশ্রী হিসেবেই গিয়েছি। টিভির বিপুল জনপ্রিয়তা মানতেই হবে। আগে যখন রিয়্যালিটি শোয়ে গিয়েছি, তখন মানুষের কাছ থেকে যে ইনস্ট্যান্ট রেসপন্স পেয়েছি, সেটা খুব ভাল লাগত। তাই এই জ়ঁর এক্সপ্লোর করতে চেয়েছিলাম।
প্র: বাণিজ্যিক ছবির নায়িকাদের কি এখন অভিনয়কেন্দ্রিক ছবিই ভরসা?
উ: যখন যা ট্রেন্ড, সেটা ফলো না করলে মানুষ পিছিয়ে পড়বে। সব ইন্ডাস্ট্রিতে ছবির জঁর বদলাচ্ছে। কনটেন্টধর্মী ছবি আমার পছন্দের। আবার ‘জুড়ুয়া টু’, ‘কেজিএফ’ দেখেও খুব ভাল লেগেছে। আমার আগের ছবিগুলি মূলত আমজনতার ভাল লেগেছে। তবে এ বার দেখলাম, সব স্তরের মানুষের ‘পরিণীতা’ নিয়ে আগ্রহ রয়েছে।
প্র: আপনার আগামী ছবি ‘হে গর্ভধারিণী’ও রাজ চক্রবর্তীর পরিচালনায়। রাজ ছাড়া কি এই মুহূর্তে কাজ করবেন না?
উ: রাজের কাছ থেকেই পরপর দু’টি ছবির অফার পেয়েছি। তবে আমরা খুবই প্রফেশনাল। কাউকে এই ধারণা দিতে চাই না যে, আমি রাজ ছাড়া কাজ করব না বা রাজ আমাকে ছাড়া কাজ করবে না।
প্র: কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই রাজের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন। আপনি কী বলবেন?
উ: যাঁরা দূরের, তাঁরা যা খুশি বলতেই পারেন। তবে রাজকে যাঁরা কাছ থেকে চেনেন, ওর জার্নি সম্পর্কে জানেন, তাঁদের অনেকেই ওকে আইডল মানেন। ওর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার যে ক্ষমতা রয়েছে, আমি সেটা গর্ব করে বলতে পারি। এটা কেআইএফএফ-এর রজত জয়ন্তী। আমি জানি, ও ভাল কাজ করবে। আর ওর কাজই কথা বলবে।
প্র: নিন্দুকেরা বলে, পার্টিতে রাজকে আপনি চোখে চোখে রাখেন?
উ: আমরা পার্টিতে যাই না।
প্র: হাউস পার্টি?
উ: হাউস পার্টিতে ইন্ডাস্ট্রির কেউ থাকেই না। আর আমি ওকে চোখে চোখে রাখি কারণ আমি ওকে চোখে হারাই। এটা ইনসিকিয়োরিটি থেকে নয়। আমি স্পেস দিতে ও নিতে পছন্দ করি। রাজ আমার চোখের সামনে থাকলে, আমি পজ়িটিভ এনার্জি পাই।
প্র: ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে আপনাকে এ বছর দেখা গেল না কেন?
উ: আমার একটা কাজ ছিল।
প্র: ইন্ডাস্ট্রির দুই কমবয়সি অভিনেত্রী নতুন সাংসদ হলেন। অভিনেত্রীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায় উত্তরণের বিষয়টি কী ভাবে দেখছেন?
উ: দারুণ। নিউ এজ ইন্ডিয়া বলতে যা বোঝায়, ওরা দু’জনেই সেটা রিপ্রেজ়েন্ট করছে। ওদের জন্য আমরা গর্বিত। নির্বাচনের আগে ও পরে পোশাক পরা নিয়ে বা অন্য কিছুতে ওদের যে ভাবে ট্রোল করা হয়েছে, সবটাই ফলো করেছি। ওরা যে ভাবে সব দিক সামলাচ্ছে, সেটা অবিশ্বাস্য।
প্র: মিমি চক্রবর্তীকে ব্যক্তিগত ভাবে মেসেজ করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন?
উ: মিমিকেও করিনি, নুসরতকেও করিনি। আমাদের মধ্যে তো বন্ধুত্ব নেই, তাই মেসেজ করা হয়নি। তবে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দেখা হলে কথা বলি।
ছবি: সোমনাথ রায়
মেকআপ: সায়ন্ত ঢালি
স্টাইলিং: তনুমিতা ঘোষ