‘‘মিঠুনদা বলেছিলেন, ‘এই নতুন মেয়েটি অনেক দূর যাবে’।’’ ফাইল চিত্র।
প্র: এ প্রজন্মের বেশির ভাগ অভিনেতাই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করে ফেলেছেন। আপনি এতটা সময় নিলেন কেন?
উ: এটা ঠিকই যে, ‘বেস্টসেলার’ আমার করা প্রথম পূর্ণাঙ্গ ওটিটি প্রজেক্ট। এর আগে ছোটখাটো কাজ করেছি। আসলে ঠিক করে রেখেছিলাম, ছবিতে যে ধরনের চরিত্র এর আগে করিনি, তেমন প্রস্তাব পেলে তবেই ওটিটি-তে আসব। মিতু (সিরিজ়ে শ্রুতির চরিত্র) তেমনই একটা চরিত্র, যা শুনেই রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। মুখ্য নারীচরিত্রে এমন একটা প্রস্তাব আগে পাইনি। তা ছাড়া ছবির চেয়ে ওটিটি-তে এক্সপ্লোর করার সুযোগ অনেক বেশি। কোভিড চলাকালীন শুটিং করলেও কাজটা করে খুব আনন্দ পেয়েছি।
প্র: মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কী রকম?
উ: আমার প্রথম ছবি ‘লাক’-এ ছিলেন মিঠুনদা। এত বছর পরে আবার এই ছবিতে কাজ করলাম। ‘লাক’ শুধু আমার প্রথম হিন্দি ছবিই নয়, আমার ডেবিউ প্রজেক্ট। মিঠুনদা সেই সময়েই আমার কাজ দেখে বলেছিলেন, ‘এই নতুন মেয়েটি অনেক দূর যাবে’। সেই সময়ে ওঁকে বলেছিলাম, ‘আপনার মুখে ফুলচন্দন পড়ুক মিঠুনদা’। ওঁর কথা যে সত্যি হবে এক দিন, সেই সময়ে সেটা ভাবতে পারিনি। এত বছর পরে ওঁর সঙ্গে আবার কাজ করতে পেরে খুব ভাল লেগেছে।
প্র: অতিমারিতে কাজের চাপ খানিক কম ছিল। কী ভাবে কাজে লাগালেন সময়টা?
উ: লকডাউনে আমার সিঙ্গলস বেরিয়েছিল। নিজের ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিউজ়িকে অনেকটা সময় দিতে পেরেছি। তা ছাড়া লেখালিখি করারও সময় পেয়েছি। নিজের সঙ্গেও অনেকটা সময় কাটিয়েছি লকডাউনে। জীবনে কী চাই, সেটা উপলব্ধি করেছি। জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞতা বোধ বেড়েছে। অতিমারির আগের আর পরের জীবন অনেকটাই আলাদা।
প্র: প্লেব্যাকের পরিকল্পনা রয়েছে আপনার?
উ: আপাতত নেই। নিজের ইন্ডিপেন্ডেন্ট গানবাজনাই চালিয়ে যেতে চাই। পরের সিঙ্গলের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
প্র: প্রেমিক শান্তনু হাজারিকার সঙ্গে আলাপ হল কী ভাবে?
উ: আসলে আমার আর শান্তনুর বন্ধুবৃত্ত একই। তবে আমাদের প্রথম কথা হয়েছিল ইনস্টাগ্রামে, হঠাৎ করেই।
প্র: ভ্যালেন্টাইন’স ডে কী ভাবে কাটালেন?
উ: ‘বেস্টসেলার’-এর প্রচারেই আমার প্রেমদিবস কেটেছে (হাসি)!
প্র: আপনার হাতে এই মুহূর্তে আর কী কাজ আছে?
উ: ‘সালার’ রয়েছে, প্রভাসের সঙ্গে। তা ছাড়া আরও একটি তেলুগু ছবির কাজ করছি।
প্র: বলিউডে কি এখনও আপনাকে দক্ষিণী অভিনেত্রী হিসেবে দেখা হয়?
উ: প্রধানত দক্ষিণী ছবিতে কাজ করলেও প্রভাসকে কি শুধু দক্ষিণী অভিনেতা বলা চলে? বলিউড থেকে যখন দক্ষিণে কাজ করতে আসেন অভিনেতারা, তাঁদের কিন্তু ‘হিন্দি অ্যাক্টরস’ বলে আলাদা করে চিহ্নিত করা হয় না। আমাদের ছবিরই অংশ হয়ে যান তাঁরা। তবে এটা ঠিকই যে, এখনও আমাদের অনেককেই ‘সাউথ ইন্ডিয়ান অভিনেত্রী’র তকমা বহন করতে হয়। কিন্তু সেটা ছেড়ে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে। আমি দক্ষিণী হিসেবে খুবই গর্বিত। তবে কথা শুনতে হয় এখনও। কয়েক দিন আগেও এই অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি কিন্তু কেরিয়ার শুরুই করেছিলাম হিন্দি ছবি দিয়ে।
প্র: কমল হাসনের মেয়ের তকমাও কি কেরিয়ারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কখনও? নাকি সাহায্য করেছে?
উ: বাবার মেয়ে হিসেবে পরিচিতি শুরুর দিকে গুরুত্ব রাখত। তখনও আসলে নিজের জায়গাটা শক্ত করতে পারিনি ইন্ডাস্ট্রিতে। তবে এখন আমার কেরিয়ারে এটা আলাদা কোনও গুরুত্ব রাখে না, দর্শকের কাছেও রাখে না আশা করি।
প্র: আপনার চেহারা বদল নিয়েও কম কথা হয়নি...
উ: অভিনেতাদের জীবনের ব্যক্তিগত বিষয় খুঁড়ে বার করে এনে তা নিয়ে চর্চা হয়েই থাকে। চেহারা পাল্টানো নিয়ে যদি আমার কথা বলতে অসুবিধে না থাকে, বাকিরা কী বলল, তাতে কী আসে যায়? ‘লাক’ মুক্তি পাওয়ার ঠিক পরেই নাকের সার্জারি করিয়েছিলাম। সেটা লুকোনোর কোনও প্রশ্ন ছিল না, কারণ সকলে তত দিনে আমার চেহারার সঙ্গে পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন। প্লাস্টিক সার্জারি নিয়ে আমি সব সময়েই খোলাখুলি ভাবে কথা বলেছি, ভবিষ্যতেও বলব।