নীনা গুপ্ত
প্র: সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে আপনার ‘ডায়াল ১০০’ ছবিটি। ডার্ক জ়ঁরের ছবি করার সিদ্ধান্ত কি সচেতন ভাবেই নিয়েছেন?
উ: ডার্ক নাকি কমেডি অত ভেবে ছবি বাছি না আমি। চিত্রনাট্য পড়ে ভাল লাগলে সেই ছবি করি।
প্র: ছবিতে এই প্রজন্মের মাদকাসক্তির বিষয় দেখানো হয়েছে। পেরেন্টিং কি ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে?
উ: আমার ঠিক উল্টোটা মনে হয়। আমরা এত সুরক্ষিত বোধ করতাম না। আধুনিক প্রজন্ম অনেক বেশি জানে, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে। আমাদের যুগের তুলনায় অনেক বেশি শিক্ষিত, অনেক উদার। এর যেমন সুবিধে আছে, অসুবিধেও আছে। কিন্তু আমরা এত কিছু পাইনি। এত কিছু জানতামও না। ফলে আমরা যে সমস্যার মধ্য দিয়ে গিয়েছি, তার মধ্য দিয়ে ওদের যেতে হবে না।
প্র: মাসাবাকে এখনও গাইড করেন?
উ: বরং উল্টোটা। কোনও ছবিতে সই করার আগে তার বিষয় নিয়ে আলোচনা করি ওর সঙ্গে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ওর মতামত নিই। কিছু ক্ষেত্রে ও-ও আমার পরামর্শ নেয়। আমাদের সম্পর্কটা বন্ধুর মতো। তথাকথিত মায়ের মতো নই আমি। তবে হ্যাঁ, কখনও কখনও মা-মেয়ের ভূমিকাও পালন করতে হয় বইকী!
প্র: আপনার আত্মজীবনী ‘সচ কহুঁ তো’-য় কত বাঙালি নাম ঘুরেফিরে এসেছে...
উ: বাঙালি পরিবেষ্টিত পরিবেশেই তো বড় হওয়া। দিল্লিতে ছোটবেলায় বাঙালি পাড়ায় থেকেছি। বাঙালি স্কুলে পড়েছি। বন্ধুবান্ধবও ছিল। পরে বাঙালি পরিচালকের সঙ্গে কাজও করেছি। কিন্তু বাংলা ছবিতে অভিনয় করা হয়নি। সে রকম প্রস্তাব পাইনি কখনও।
প্র: কেরিয়ারের এক পর্যায়ে ইন্ডাস্ট্রিতে, ফিল্ম সেটে বৈষম্যমূলক ব্যবহার পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। সে দিক দিয়ে এখন কি ইন্ডাস্ট্রি বদলেছে?
উ: আমি একটা বিষয় বুঝেছি যে, সফল হলে এক ভাবে ট্রিট করা হয়, ব্যর্থ হলে আর এক ভাবে। সাফল্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্রতি মানুষের ব্যবহার বদলে যায়। আমি যখন এ দিক-ও দিক ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করতাম, তখন এটা অনুভব করেছি। কিন্তু এটা পেশাগত বিপর্যয়। সব পেশাতেই হয়তো আছে। তাই এ সব নিয়ে বেশি মাথা ঘামাই না।
প্র: ‘বধাই হো’ ছবিতে আপনার সহ-অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানা তাঁর পরবর্তী কিছু ছবিতে ‘নো ওটিটি রিলিজ়’ ক্লজ় রেখেছেন। ওটিটি কি অভিনেতার পারিশ্রমিক কমিয়ে দিচ্ছে? আপনার পছন্দ কোন মাধ্যম?
উ: এত বছর পরে ভাল চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাচ্ছি। যে মাধ্যমে প্রস্তাব পাব, সেই মাধ্যমেই করব। টিভি, ওটিটি, বড় পর্দা... সব জায়গায় কাজ করতে রাজি। কিন্তু বড় পর্দার সমতুল্য কিছু হয় না। প্রিমিয়ারও তেমনই অভিজ্ঞতা। কিন্তু কাজ সব মাধ্যমেই করব। ভার্চুয়াল হলেও আমার হাতে এখন কাজ তো আছে। কত মানুষ এই অতিমারিতে কাজ হারিয়েছেন। হাতে টাকা নেই। সে দিক থেকে তো আমরা ভাগ্যবান।
প্র: লকডাউন কেমন কেটেছে?
উ: অতিমারিতে কত মানুষ কত কী হারিয়েছেন। সেই তুলনায় ভালই কেটেছে। আমি আর আমার স্বামী বিবেক মেহরা তখন মুক্তেশ্বরে ছিলাম। প্রায় সাড়ে ছ’মাস ওখানেই কেটেছে। সাধারণত দু’জনেই ভীষণ ব্যস্ত থাকি, শুধু লাঞ্চ আর ডিনারে দেখা হত। কিন্তু লকডাউনে অনেক সময় পেয়েছি একসঙ্গে কাটানোর।
প্র: বেশ উপভোগ করেছেন তা হলে সময়টা?
উ: হ্যাঁ। বাড়ির কোথায় পাইপ লিকেজ, ঘরের কোথায় সারাতে হবে, সেই সব নিয়ে পড়ে থাকত ও। আর আমি ঘর পরিষ্কার করা, হেঁশেলের কাজ নিয়ে। উপভোগ্যই বটে!