অপরাজিতা আঢ্য
রবিবার ছিল অপরাজিতা আঢ্যের জন্মদিনের আগের রাত। আয়োজনই ছিল আলাদা। পাশ্চাত্য পোশাকে লং গাউন, মানানসই চুলের সাজ, গলায়, কানে হিরের ঝলক। পাঁচতারা হোটেলের টেবিলে দুধ সাদা কেক। শ্যাম্পেনের গ্লাস। মনে পড়ে যায় ‘চিনি’-র সেই সংলাপ, ‘এই ৪৩ বছর বয়সের ভদ্রমহিলা আগে এরকম ১৫ বছরের বাঁদর টিনেজার ছিল না!’
জন্মদিনের সকালে আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে অপরাজিতা কথাই শুরু করলেন ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে, ‘‘রোজ একটা করে সকাল আসে। রোজ আমি নতুন করে বাঁচি। তাই রোজই আমার জন্মদিন। এই যে এত গুলো বছর সুস্থ ভাবে কাটিয়ে ফেললাম, এটাই বড় কথা। ৪৩-এ এসেও ২৩-এর মতো ‘হো হো’ হাসতে পারছি। কম পাওনা?’’ পাল্টা প্রশ্ন তাঁর।
বলতে বলতেই স্মৃতি হাতড়ে ফিরিয়ে আনলেন। তিনি বললেন, সেই জীবনও দু’হাত ভরে দিয়েছে তাঁকে, ‘‘আমরা খুবই সাধারণ পরিবারের। খুব ঘটা করার সামর্থ ছিল না মায়ের। তার মধ্যেও আমার ৫ বছর বয়স থেকে ৫ তরকারি, ভাত দিয়ে আদর করে খেতে দিতেন মা। জ্ঞান হওয়া থেকে দেখে এসেছি, কোনও দিন দাদার জন্মদিন পালন হয়নি। আমার জন্মদিনে পায়েস বাদে পছন্দের সমস্ত খাবার মা, বড়মা নিজের হাতে রান্না করে বাটি বাটি সাজিয়ে দিতেন।’’
বিয়ের পর মায়ের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন শাশুড়ি মা। অপরাজিতার কথায়, ‘‘এ বাড়িতেও প্রায় একই ছবি। আমার স্বামীর জন্মদিনে কোনও ঘটা নেই। কিন্তু আমার জন্মদিনে শাশুড়ি নিজে হাতে রেঁধেবেড়ে খাওয়াবেনই।’’ যদিও এ বছরের আয়োজনে সামান্য ভাটার টান। চলতি বছরেই অভিনেত্রী হারিয়েছেন একাধিক নিকট আত্মীয়কে। মা শয্যাশায়ী ফিমার বোন ফ্র্যাকচারে। সম্প্রতি অপারেশন হয়েছে তাঁর। এত অঘটনের মধ্যেও জন্মদিনের দুপুরে তাঁর ভাতের থালায় পাঁচ রকম ভাজা। বাটিতে মাছ, রকমারি তরকারি, কুলের চাটনি, মিষ্টি, পায়েস। অভিনেত্রীর দাবি, হাজার অঘটনেও তাঁর জন্মদিন কোনও বছর বন্ধ থাকেনি।
এ ভাবেই বছর আসে। বছর যায়। বয়স বাড়ার আশঙ্কা কুরে কুরে খায় না তাঁকে। তিনি বললেন,‘‘২৩-এও ৩৫-এর মতো দেখতে ছিলাম। ৪৩-এ এসে সেই বয়সের মতো। করোনায় ভুগে, শরীরচর্চা করে সামান্য ঝরেছি’’ তবে বাইরের সৌন্দর্য নিয়ে তাঁর মাথাব্যথাও নেই। বরং তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছেন, তাঁকে কেন্দ্রে রেখে বানানো মৈনাক ভৌমিকের নতুন ছবি ‘চিনি’র সাফল্য।
জোর গলায় পেশ করলেন জীবন থেকে পাওয়া রিটার্ন গিফটের তালিকা, তাঁকে ভেবে উইনডোজ প্রোডাকশনসের আগামী ছবি ‘ফাটাফাটি’। হাতে একাধিক বড় কাজ। ৪৩-এর কাছে তাই ঋণী অপরাজিতা আঢ্য।